যে কারণে নির্বাচনের আগে আলোচনায় ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’

প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০১৮, ০৮:২০ পিএম

নিবন্ধিত ৩৯টি দলের সকল কর্মকাণ্ড ও অফিস তদারকি করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিবন্ধন শর্ত কেউ পালন করতে ব্যর্থ হলে তাদের নিবন্ধন বাতিল করারও সিদ্ধান্ত ইসি। কোন কোন দলের স্থানীয় পর্যায়ে অফিস আছে কাদের নেই সে বিষয়েও খোঁজ নিচ্ছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে ৩৯ দলের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অংশগ্রহণের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এরই মধ্যে ৩০০ আসনে দলটির প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছে। দলের কার্যক্রম ব্যাপক হারে বৃদ্ধিও পাচ্ছে।

সূত্র জানায়, ভোট সংগ্রহে আগে ভাগেই নানা কৌশলে মাঠে নেমেছেন ধর্মভিত্তিক এ দলের নেতাকর্মী ও প্রার্থীরা। ভোটার সংগ্রহের পাশাপাশি চলছে তাদের নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের কাজ। নির্বাচনে জয়-পরাজয়কে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে সারা দেশে অন্তত এক কোটি ভোট পাওয়ার টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে দলটি। তবে সুষ্ঠু ভোট হলে প্রায় ২০টি আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা জয়লাভ করবে বলেও আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দলীয় সূত্র মতে, সম্প্রতি বিভিন্ন সিটি করপোরেশনসহ বর্তমান সরকারের সময়ে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে ভোটপ্রাপ্তির হারকে বেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছে ইসলামী আন্দোলনের হাইকমান্ড। বিশেষ করে খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পরই ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের পক্ষে ভোটপ্রাপ্তিতে দলটিতে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।

আসন্ন বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহীতেও দলটির মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। এমনকি বরিশালে জয়ের প্রত্যাশা করছে দলটি। এ তিন সিটির পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘আমরা জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছি। এরই মধ্যে প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালাও হয়েছে। সারা দেশে প্রার্থীরা প্রস্তুতিমূলক কাজ চালাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘বিগত স্থানীয় নির্বাচনে নানা অনিয়ম, ভোট ডাকাতির মধ্যেও আমাদের কয়েকজন নেতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে এ ফল আরও ভালো হতো। তারপরও এসব নির্বাচনে আমরা যথেষ্ট ভোট পেয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভালো ভোট পাব বলে আমরা আশাবাদী।’

ইউনুছ আহমাদ আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে যদি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার নিশ্চয়তা না পাই, আবারও যদি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনের আলামত দেখা যায় তাহলে আমরা দলের শূরা কমিটির মিটিং করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

দলীয় সূত্র জানায়, সারা দেশে ১ হাজার ৮১ ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা নির্বাচন করেছেন। এতে ভোটপ্রাপ্তির হার ছিল ৫ শতাংশ। বিভিন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ ভোট পায় দলটি। এর আগে প্রথমবারের ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে ১৬০ আসনে অংশ নিয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট (মোট ৮ লাখ) পায় দলটি।

দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও কুমিল্লার মুরাদনগর আসন থেকে নির্বাচনের জন্য মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘৫ বছরে ৫০ লাখ কর্মী বৃদ্ধির টার্গেট নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে কাজ শুরু করে ইসলামী আন্দোলন। এতে বেশ সফলতা পাওয়া গেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করে প্রত্যেক কর্মীকে কমপক্ষে ২০ জন করে ভোটার সংগ্রহ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

‘আগামী নির্বাচনে সারা দেশে অন্তত এক কোটি ভোট পাওয়ার টার্গেট করা হচ্ছে’ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

চরমোনাইয়ের পীর ফয়জুল করীম সাহেব বলছেন, আজকে আপনি যদি হাত পাখা মার্কায় ভোট দেন, তাহলে আপনার ভোট পাবে আল্লাহর নবী (সা.)। আপনি যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেন তাহলে ভোট পাবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আপনি যদি ধানের শীষে ভোট দেন তাহলে ভোট পাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

আপনি যে প্রতীকে ভোট দেবেন ভোট পাবে সেই দলের নেতা। শুধু মাত্র হাত পাখায় ভোট দিলে ভোট পাবে ‘আল্লাহর নবী (সা.)’। এ বক্তব্যের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলটিকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা, সমালোচনা।

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: