বিরোধী পক্ষের গতিবিধি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সরকার

প্রকাশিত: ১১ আগষ্ট ২০১৮, ১১:২৪ পিএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই অস্থির হয়ে উঠছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। বিশেষ করে গত দুই মাসে শিক্ষার্থীদের বড় দুটি (কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবি) আন্দোলনের ধকল সামলাতে হয়েছে সরকারকে। নির্দলীয় ও অরাজনৈতিক এসব আন্দোলনের পেছনে রাজনৈতিক ইন্ধন ছিল বলে দাবি করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। মূলত সরকার পতনের জন্য কোটা আন্দোলনের পর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবি আন্দোলনের ওপর ভর করে সরকার পতন ঘটানোর ষড়যন্ত্র করেছিল সরকার বিরোধীরা। বিশেষ করে গত কয়েক দিনে বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য ও গতিবিধি পর্যাবেক্ষণে রেখে এমনটা নিশ্চিত হয়েছে সরকারের দায়িত্বশীলরা।

এজন্য সমানের দিনে যেকোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সরকার বিরোধী পক্ষের গতিবিধি গভীর ভাবে পর্যবেক্ষনে রাখা হচ্ছে। সরকার ও আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সরকার ও আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে পুঁজি করে একটি পক্ষ দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। তারা মনে করেছিল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যদিয়ে সরকার পতন ঘটাবে। সরকার শুরু থেকেই বলে আসছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। শুরুতে সবাই এটাকে উড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু পরে কি দেখা গেলো। স্কুল কলেজের ড্রেস পড়ে বিএনপি জামায়াতের ক্যাডাররা এমনকি ছাত্রদল ছাত্রশিবিরের পদধারী নেতারা এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্দোলনকে সহিংস করে তুলেছে। গুজব ছড়িয়ে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা করেছে।

সাবেক একজন মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদের সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু সাহেবের ফোনালাপ অনেক কিছুই পরিস্কার করে দেয়। তাছাড়া খসরুর ওই অবস্থানকে বিএনপির মহাসচিব সমর্থন করে যখন বক্তব্য দেন তখন আর কারো বোঝার বাকি থাকে না। এছাড়া ওই সময় হঠাৎ করেই সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত একজনের মোহম্মদপুরের বাসায় রাতে প্রভাবশালী একজন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার বৈঠক। এসব কিসের আলামত? তবে সরকার সবকিছু লক্ষ্য রাখছে। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যেমনটা বলেছেন, কোথায় কি হচ্ছে সব খবর আমাদের কাছে আছে। কেউ যদি মনে করে সরকার কিছু জানে না তাহলে তারা বোকার স্বর্গে রয়েছে।

ওই নেতা আরও বলেন, সরকার খোঁজ খবর রাখছে বলেই জানতে পেরেছে স্কুল ড্রেস বানিয়ে ও নকল আইডি কার্ড বানিয়ে বিএনপির লোকেরা আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। এর পেছনে কে কে আছে সময় হলে সব বেরিয়ে আসবে। কেউ ছাড় পাবে না।

সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১/১১ কুশিলবরা আবার স্বক্রিয় হয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ওপর ভর করে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। তারা এখন আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা তাদের এসব তৎপরতা সম্পর্কে জানি। তিনি বলেন, কে কোথায় কি করছে, আমরা সবই জানি। সরকার এদের বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছে। কারো বিরুদ্ধে দেশ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে ক্ষমতাসী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আরও একাধিক আন্দোলনের আশঙ্কা করছে। এ বিষয়ে তারা সরকারকে সচেতন থাকার পাশাপাশি এ ধরনের পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার আহবান জানিয়েছেন।

বিডি২৪লাইভ/আরএইচ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: