গ্রেফতার শহিদুল প্রসঙ্গে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেফতারের সমালোচনার জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অন্যায় করলে তার বিচার করা রাষ্ট্রের কর্তব্য।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার স্মরণে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় অন্যান্য অনেক বিষয়ের পাশাপাশি শহিদুল আলমকে গ্রেফতার নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘তারা শিশুদের ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চায় তাদেরকে কি জবাব দিতে হবে না? আর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সেটাই কি অন্যায় হয়ে যাবে? দেশকে রক্ষা করা, দেশের মানুষকে রক্ষা করা এটাই তো আমার কর্তব্য।’
‘কেউ যদি মনে করেন খুব নামি দামি লেখক, সাংবাদিক, পণ্ডিত হলেই তাদের অপরাধ আর অপরাধ না। তাদের অপরাধ সব ধুয়ে মুছে যাবে, তারা প্রটেকশন পাবে। কিন্তু কেন?’
গত ৪ আগস্ট শিক্ষার্থীরা যখন রাজপথে তখন ফেসবুকে পরিকল্পিতভাবে এই গুজব ছড়ানো হয়। আর এরপর আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে হামলা হয়, আর তাদেরকে প্রতিহত করার সময় ঘটে সংঘর্ষ।
আওয়ামী লীগ অভিযোগ করছে, হামলাকারীরা শিক্ষার্থীদের পোশাক পরে এলেও তারা ছাত্র ছিল না।
সেদিন শহিদুল ফেসবুক লাইভে এসে নানা কথা বলার পাশাপাশি কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পেছনে রয়েছে ‘সরকারের অপশাসন’। বর্তমান সরকারের আমলে দেশে লুটপাট চলছে অভিযোগ করে শহিদুল এমনও বলেন যে, সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে টিকে আছে।
আর ৬ আগস্ট শহিদুলকে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে তুলে আনে গোয়েন্দা সংস্থা। পরদিন একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত এই আলোকচিত্রীর গ্রেফতারে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তীব্র সমালোচনা করেছে। দেশের বাইরে থেকেও তার মুক্তির দাবিতে বিবৃতি এসেছে।
তবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে যত বড়ই হোক না, কেউ যদি অন্যায় করে, কেউ যদি উস্কানি দেয়, ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ব্যবহার করতে চায় তাদের কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য।’
‘কেউ যদি মনে করেন খুব নামিদামি লেখক, সাংবাদিক বলেই তাদের অপরাধ আর অপরাধ না, তাদের অপরাধ সব মুছে যাবে?’
শহিদুল আলমের পারিবারিক রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলছেন এই আলোকচিত্রী।
‘অনেক নামিদামি, জ্ঞানী, অনেক বড় আঁতেল, অনেক ইন্টেলেকচুয়াল কিন্তু তাদের রক্তের সূত্রটা কোথায়? বাংলাদেশের বিরোধী খান এ সবুরের (পাকিস্তানের দোসর মুসলিম লীগ নেতা) বোনের ছেলে। ওই ধরনের যারা পাকিস্তানি চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী, তাদেরই বংশধর থেকে শুরু করে অনেকেই এর মধ্যে জড়িত। আবার তাদের ধরলে দেখি জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে খুব হৈ চৈ।’
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে বলেই কেউ কেউ শহিদুলদের সমর্থনে লিখে যাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘কিন্তু যে অন্যায় তারা করতে যাচ্ছিল, দেশটাকে কোন দিকে নিতে যাচ্ছিল, সেটা কি তারা উপলব্ধি করেন? তারা অনেক জ্ঞানী, জনপ্রিয় হতে পারেন কিন্তু তাদের মধ্যে কি একটুও দায়িত্ববোধ থাকবে না?’
‘আর্ন্তজাতিক সাংবাদিক, আমাদের বুদ্ধিজীবীরা কি সেগুলো চোখ খুলে দেখবেন না? উস্কানিদাতাকে গ্রেফতারের সাথে সাথে আর্টিকেল লিখতে পারেন, এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখতে পারেন না। কলমের কালি বুঝি ফুরিয়ে গেল?’
‘কলমের কালি ফুরিয়ে গেল, তাই লিখতে পারছেন না? ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে গেল বলে লিখতে পারছেন না?- কটাক্ষ করে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ওরা কারা?
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনেরে সময় স্কুল ড্রেস তৈরির হিড়িক পড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, প্রথম ২/৩ দিন শিশুরা রাস্তায়। …এরপর তৃতীয় পক্ষ ঢুকে গেল। বুড়োরা এসে ঢুকে গেল। দর্জির দোকানে ভিড় লেগে গেল।’
‘স্কুল ড্রেসের নিচে অন্য জামা। পেছনে ব্যাগ থেকে দা, চাইনিজ কুড়াল বেরুচ্ছে, লাঠিসোটা বেরুচ্ছে। স্কুলে ছেলেমেয়েদের ব্যাগে তো বই থাকবে। তাহলে তারা কারা?’
‘তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে অন্ধকারে ঠেলতে চায়’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ আমি করে দিয়েছি, সে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে, মিডিয়া ব্যবহার করে তারা উসকানি দিয়ে, মিথ্যা কথা বলে, দেশে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তারা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।’
‘যারা শিশুদের আন্দোলনে উসকানি দিয়েছিল, শিশুদের নিয়ে খেলতে চেয়েছিল, শিশুদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তাদের উদ্দেশ্যে হাসিল করতে চায়; তারা আর যাই হোক বাংলাদেশের জনগণের ভবিষ্যতকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায়, আলোর পথের যাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।’
বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: