ফেসবুকে যে গুজব ছড়িয়েছিল ফারিয়া!

প্রকাশিত: ১৯ আগষ্ট ২০১৮, ০৮:২৮ এএম

কফিশপ মালিক ফারিয়া মাহজাবিনকে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব। দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য ফারিয়া যে মিথ্যা কথা প্রচার করেছে সেটাও শুনিয়েছে বাহিনীটি।

ফারিয়াকে গ্রেফতারের দুই দিন পর গত শনিবার (১৮ আগস্ট) কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ফারিয়ার তৈরি সেসব গুজবের কথা জানান র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

এ সময় ফারিয়ার ছড়ানো সেই অডিও রেকর্ড সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন বেনজীর।

বাহিনীটির প্রধান জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় এক মেয়েকে ধর্ষণ ও একজনের গলা কেটে হত্যার অডিও রেকর্ড তৈরি করে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ও অন্যান্য মাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন ফারিয়া।

ওই রেকর্ডে মাহজাবিনের কণ্ঠে ছিল, ‘স্টাফরা আমাকে কল দিয়ে বলছে, ম্যাম আসিয়েন না। ওরা নিজেদের সামনে তিনটা লাশ দেখছে। কিছুক্ষণ পরে একটা ছেলে আসছে। ওর রাবার বুলেট লাগছে। সে আমার ক্যাফেতে এসে সেন্সলেস হয়ে গেছে। পরে আমাকে নিজে বলতেছে, ম্যাডাম জানেন, ওই ছেলের কাছ থেকে শুনছি একজনকে চাকু দিয়ে মেরে ফেলছে, গুলি করছে। রাস্তার ওপরে একটা মেয়েকে রেপ করছে।’

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘ওনি বলেছেন কি, একজনের গলা দা দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে এবং পাবলিকলি হাজার হাজার মানুষের মধ্যে একটা মেয়েকে রেপ করা হয়েছে। আর তিনটা লাশ দেখেছে। তা এগুলো কোথায়?’

‘এগুলো করা হয়েছে সিম্পলি আমাদের দেশটাকে ধ্বংসের মুখোমুখি নিয়ে যাওয়ার জন্য এবং ডেলিবারেটলি।’

‘মেয়েটা কিন্তু কম্পিউটার সায়েন্স গ্র্যাজুয়েট। সে কিন্তু জানে এটাকে কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। এ জন্য ফেসবুক ব্যবহার না করে ওনি রেকর্ড করেছেন, এবং ভয়েজ স্টেটমেন্ট হিসেবে এটাকে ওনি সোশ্যাল মিডিয়াতে ডিস্ট্রিবিউট করেছেন।’

‘আমরা এই সমস্ত লোকদেরকে খুঁজছি। ওনাকে নিয়ে আসছি যখন, ওনাকে ইন্টারোগেট করা হয়েছে। ওনি যাদের কথা বলেছেন, তাদেরকে আমরা নিয়ে আসব।’

র‌্যাব প্রধান বলেন, ‘শুধু গুজব সৃষ্টিকারী নয়, পেছন থেকে যারা ইন্ধন দিচ্ছেন আইনের আওতায় আনা হবে তাদেরও।’

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ৪ আগস্ট ফেসবুকে ব্যাপকভাবে গুজব ছড়ানো হয়। আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে ছাত্র হত্যা ও ধর্ষণের গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদেরকে উত্তেজিত করা হয়। আর এরপর হামলা হয় সেখানে, ঘটে সংঘর্ষ।

এরই মধ্যে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ৫১ মামলয় ৯৭ জনকে গ্রেফতারের কথা পুলিশ জানিয়েছে গত বৃহস্পতিবার। এরপর আটক করা হয় আরও বেশ কয়েকজনকে।

কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা করা ফারিয়াকেও ধরা হয় বৃহস্পতিবার। আর হাজারীবাগ থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় তাকে দুদিন রিমান্ড দেয় আদালত।

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বাস দুর্ঘটনার ফলে ছাত্রদের আবেগের যে বহিঃপ্রকাশ বা বিষ্ফোরণ দেখলাম সেটাকে কেন্দ্রে করে মিথ্যা কথা ও গুজবের হাট বসিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেশটাতে যে ধ্বংসের দাড়প্রান্তে নেয়ার চেষ্টা করেছে স্বার্থান্বেষী মহল। তাদের ধরতে র‌্যাবের সাইবার ওয়ার্ল্ডে কী হচ্ছে সেজন্য একটি ইউনিট করেছে।’

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: