মাত্র পাঁচ দিনের জন্য চালু হচ্ছে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
ঈদুল আজহায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বন্ধ থাকা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ঈদের আগের দিন চালু করা হবে। ঈদের চতুর্থ দিন আবার বন্ধ হয়ে যাবে।
আগামী ২১ থেকে ২৫ আগষ্ট ৫দিন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রাখার জন্য বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ষ্টপ প্রস্তুতের সময় অল্প অল্প করে পাওয়া কয়লা মজুত করা হচ্ছে।
এতে করে ঈদের সময় অন্তত পাঁচ দিন কেন্দ্রটি চালু রেখে রংপুর বিভাগের আট জেলায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (সংরক্ষণ) প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করা হবে এবং কয়লা মজুত সাপেক্ষে পাঁচ দিন চালু রাখার টার্গেট নেওয়া হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা গায়েব হওয়ার পর খনি মুখে স্থাপিত দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়লা সংকটের কারণে গত ২২ জুলাই মধ্যরাতে বন্ধ করে দেওয়া হয়। উত্তরাঞ্চলের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের সক্ষমতা নেই জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের। সে কারণে লোড ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করতো এই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। পুরো গরমের মৌসুমে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় অসহায় হয়ে পড়ে পিডিবি।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) রংপুর অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার জানান, রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রতি দিন ৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। এই চাহিদার বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ মেগাওয়াট। এতে রংপুর বিভাগের আট জেলায় লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি লো-ভোল্টেজে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে মানুষ। নষ্ট হচ্ছে ইলেট্রিক যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার, ফ্রিজ, টিভিসহ ইত্যাদি পণ্য। চার্জ করতে না পারার কারণে রাস্তায় চলাচল কমে গেছে ব্যাটারী চালিত যানবাহনের।
এ কারণে কোরবানি ঈদের সময় এই আট জেলার মানুষকে লোডশেডিংমুক্ত রাখতে চায় বিদ্যুৎ বিভাগ। সেই লক্ষ্যেই বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ঈদের সময় অন্তত পাঁচ দিন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রর তিনটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। যার মধ্যে একটি ইউনিট নিয়মিত সার্ভিসিংয়ে রয়েছে। যার উৎপাদন ক্ষমতা ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সেই সঙ্গে ১২৫ ও ২৭৫ মেগাওয়াটের বাকি দু’টি ইউনিট চালু করা হবে। ১২৫ মেগাওয়াটের ইউনিটটি চালু রাখতে হলে দৈনিক ১২০০ টন ও ২৭৫ মেগাওয়াটের ইউনিটে ২৮০০ টন কয়লার প্রয়োজন পড়ে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (সংরক্ষণ) প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ টন পর্যন্ত কয়লা পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার (১৮ আগস্ট) পর্যন্ত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার মজুতের পরিমাণ ৫০০০ হাজার টন ছাড়িয়েছে ।
তিনি আরো জানান, বড়পুকুরিয়া খনিতে গত জুন মাসে ২০১০ নম্বর ফেসে কয়লার মজুত শেষ হওয়ায় নতুন ভাবে ১৩১৪ নম্বর ফেসে কয়লা উত্তোলনের জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন ফেস থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য খনির অভ্যন্তরে টানেল তৈরি করা হচ্ছে। সেই টানেল তৈরি করতে গিয়ে কিছু কয়লা পাওয়া যাচ্ছে।
উল্লেখ্য গত ১৪ জুলাই খনিতে উত্তোলিত কয়লার মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা গায়েব হয়ে যায়। এর পরেই কয়লা সংকটে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ১৯ জুলাই কয়েকজন কর্মকর্তাকে প্রত্যার ও বদলী করা হয়। এ নিয়ে খনির ১৯ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। যা তদন্ত করছে দুদক।
বিডি২৪লাইভ/এমআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: