লঞ্চ থেকে মাঝনদীতে পড়ে গেলেন যাত্রী, এরপর...

প্রকাশিত: ২১ আগষ্ট ২০১৮, ১১:৫৮ এএম

দুঃসাহসিকতার পরিচয় দিয়ে মাঝ নদীতে পড়ে যাওয়া যাত্রীকে উদ্ধার করলো লঞ্চ মাস্টার (চালক)। গতকাল সোমবার (২০ অগাস্ট) ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চ থেকে বিকেল ৫ টায় ওই যাত্রী পড়ে যায়।

নদীতে পড়ে যাওয়া যাত্রীর নাম মো: ইব্রাহিম। বয়স ৩০ বছর। তার বাড়ি ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার ধলীগন্নগর ইউনিয়ন এলাকার মুন্সিবাড়ি। সে ঢাকায় একটি হোটেলে কাজ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নদীতে পড়ে যাওয়া ব্যক্তি লঞ্চের একেবারে সামনে অর্থাৎ যে স্থান দিয়ে যাত্রীরা উঠা-নামা করে সে স্থানে দাঁড়িয়ে ছিলো, হঠাৎ একটা ঢেউ এসে লোকটি কিছু বুঝার আগেই ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। পরে যাত্রীরা নদীতে লোক পড়ে গেছে এমন গোলোযোগ ও চিৎকার শুরু করলে লঞ্চ দ্রুত বেগার দেয় ও লোকটিকে দ্রুত উদ্ধার করে। এ সময় লঞ্চ বেশ ঝাঁকুনি দিলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে কেবিনে থাকা জাকির হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, আমরা দেখলাম লোকটিকে হঠাৎ একটা ঢেউ এসে নিয়ে যায় এরপর লোকটিকে উদ্ধার করার জন্য যাত্রীরা চিৎকার করলে বয়া ফালানো হয়, কিন্তু লোকটি বয়া ধরতে পারে নাই। পরে লঞ্চ বেগার দেয়, তারপর দড়ি বেধে আরেকটি বয়া ফালালে সেটা ধরতে পারে। পরে লোকটিকে উদ্ধার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চ পরিচালনার প্রধান আবদূর রউফ মাস্টার বলেন, লোকটি পরে গেলে যাত্রীরা উদ্ধার করার জন্য চিৎকার দিতে থাকে, মানবতার দিক চিন্তা করে নিজের দায়িত্ববোধ থেকে লোকটাকে উদ্ধার করি।

তিনি জানান, যদিও কেউ বলেছে এক জনের জন্য এতো ঝুঁকি নেওয়ার কি দরকার ছিলো, তবে না করলেও সবাই সমালোচনা করতো। কিন্তু মূল বিষয় হলো একটা মানুষের জীবন।

যাত্রীদের বারবার নিষেধ করার পরেও অনেকেই লঞ্চের কিনারে গিয়ে দাড়িয়ে থাকে যার কারণে এমন অনাকাঙ্কিত ঘটনা ঘটে বলে মনে করেন মাস্টার রউফ।

যাত্রীদের সচেতনতার থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, লঞ্চে যদি এমন কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে যাত্রীদের উচিত কোন ভয় না পেয়ে যে যার অবস্থানে থাকা, লঞ্চের কিনারের দিকে না যাওয়া, বিভিন্ন দিক ছোটাছুটি না করা এবং একপাশে না ঝুঁকা। তাহলে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা থাকেনা এবং এ বিষয়টি আমরা বারবার বলি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে যাত্রীরা বিষয় বুঝেনা।

এ দিকে নদীতে পড়ে যাওয়া যাত্রী বলেন, আমার মোবাইলে একটা কল আসছিলো, কিন্তু নেট পাচ্ছিলো না দেখে আমি একটু সাইডে যাই তখন হঠাৎ ঢেউ আসে আমি খেয়াল করতে পারি নাই, ফলে ঢেউয়ের বারিতে আমি নদীতে পরে যাই। আমি অনেক ভয় পেয়েছি, ভাবছি হয়তো আমি দুনিয়া থেকে চলেই যাবো, আল্লাহ মেহেরবানিতে লঞ্চের মাস্টার আমাকে উদ্ধার করে। আল্লাহর কাছে শোকরিয়া।

তিনি বলেন, আমি অনেক ভয় পেয়েছি, তবে যখন দেখলাম লঞ্চ বেগার দিলো তখন আমার সাহস বেড়েছে, ভাবলাম হয়তো আমি উদ্ধার হতে পারবো।

বিডি২৪লাইভ/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: