কয়লা গায়েব, প্রতিবেদন প্রকাশে প্রতিমন্ত্রীর অনীহা

প্রকাশিত: ২৬ আগষ্ট ২০১৮, ০২:৫৭ পিএম

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে প্রায় দেড় লাখ টন কয়লা ‘গায়েবের’ ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘আমরা তদন্তের দুটি রিপোর্ট ইতোমধ্যে পেয়ে গেছি। কারা কারা জড়িত এবং কীভাবে হয়েছে বা কীভাবে করতে যাচ্ছে সেটা রিপোর্ট জেনেছি। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। আমরা আগেই বলেছি, কারো কোন রকম দুর্নীতিকে আমরা প্রশ্রয় দেব না।’

রবিবার (২৬ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

গত জুলাইয়ের শেষ দিকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির বিপুলসংখ্যক কয়লার হদিস না পাওয়ার কথা জানা যায়। ২০০৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত খনি থেকে উত্তোলিত দেড় কোটি টন কয়লার মধ্যে প্রায় দেড় লাখ টনের মতো কয়লার হিসাব পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও একজন মহাব্যবস্থাপককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সাথে আরও একজন মহাব্যবস্থাপক ও উপ-মহাব্যবস্থাপককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে কয়লা খনি কোম্পানিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তারা নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদনও জমা দেয়।

&dquote;&dquote;দুটি তদন্ত রিপোর্টে কতজনকে দোষী পেয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু মামলা করেছি, মামলার তদন্তের ওপর এখন নির্ভর করছে। এই তদন্তগুলো হয়তো সাপোর্টিভ হবে মামলার জন্য। আর দুদকও যেহেতু মামলা করেছে, আর আমি প্রকাশ্যে এগুলো বলতে চাই না। কারণ, এগুলো মামলাকে আরও বেশি অন্যদিকে নিয়ে যাবে।’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘যেহেতু দুদক করছে, মামলার তদন্ত পুলিশ করবে, আমাদের ইনিশিয়াল একটা তদন্ত আছে মন্ত্রণালয়ের। এই বিষয়গুলো ওই অবস্থায় থাকলে আরও বেটার হবে তারা যদি আরও ডিটেইলে যায়।’

‘এটা তো মন্ত্রণালয়ের বিষয় না, মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে কোম্পানি থাকে পেট্রোবাংলা-এটা তাদের বিষয়। সেখানে আমরা কোনোভাবে দুর্নীতির ছিঁটেফোটা হলেও তা প্রশ্রয় দেয়া হবে না। সে অনুপাতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

কয়লাখনিতে দুর্নীতি অনেক আগে থেকে সে দিকে ইঙ্গিত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা তো আজকে এক দিনের ব্যাপার না। কারণ, এক লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা যদি সরাতে হয় তাহলে ৩০ হাজার ট্রাক লাগবে। এটা তো আর একদিনে হয়নি, এটা ২০০৫ সাল থেকে স্টকে বিল্ডআপ করে করে দেখিয়েছে।’

‘একটা দিক অন্তত ভালো হয়েছে যে, শেখ হাসিনা সরকারের সময় এই দুর্নীতিটা ধরা পড়েছে। বিদ্যুৎ বন্ধ থাকুক আর শেষ হয়ে যাক, যেটাই হোক না কেন, ধরা তো পড়েছে আমাদের হাতে। আমরা বিদ্যুৎ বিভাগকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম তদন্ত করার জন্য। তারা সেখানে গিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে। রিপোর্ট দেয়াতে তো ধরা পড়েছে, আর যদি ধরা না পড়ত, তাহলে তো আপনারা জানতে পারতেন না।’

বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ না হলে কেউ জানতে পারত না- তেল-গ্যাস কমিটির এই মন্তব্যের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যদি ওটা বন্ধ না হতো, তাহলে আমরা জানতে পারতাম না, এটা সত্য কথা, এটা সবাই জানে। এটা ওনাদের আলাদা করে বলতে হবে না, এখানে আমরাই কথাটা বলেছি।’

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: