এশিয়া কাপে কেমন করবে শ্রীলঙ্কা?
অন্যান্য প্রতিযোগিতায় যাই হোক না কেন, এশিয়া কাপের ইতিহাসে সবচেয়ে ধারাবাহিক দল শ্রীলঙ্কা। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া ১৩টি আসরের মধ্যে মাত্র দুবার ফাইনাল খেলতে ব্যর্থ হয়েছে তারা, চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৫ বার! তবে এমন ঈর্ষণীয় রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও এবারের আসরের হট ফেভারিটদের তালিকায় লঙ্কানদের নাম নেই! অবশ্য সেই না থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু না, ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডেতে তাদের যে জঘন্য পারফর্মেন্স, তাতে দলটির গ্রুপ পর্ব পার হওয়া নিয়েও সংশয় রয়েছে। ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জিতে উত্থানের পর যে দলটি টানা ভালো পারফর্মেন্স উপহার দিয়ে যাচ্ছিল, কেন তারা ২০১৫ এর পর এভাবে পথচ্যুত হয়ে গেলো? খুঁজতে গেলে বেশ কিছু কারণ পাওয়া যাবে।
ওয়ানডেতে টানা দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে লঙ্কানরা:
২০১৫ বিশ্বকাপ খেলেই অবসরে চলে যান লঙ্কান ক্রিকেটের দুই স্তম্ভ কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে। সেই বছরেই অবসরে যান আরেক পুরনো যোদ্ধা তিলকারত্নে। গোদের উপর বিষফোঁড়া হিসেবে যুক্ত হয় লাসিথ মালিঙ্গা ও নুয়ান কুলাসেকারার মতো দুই অভিজ্ঞ পেসারের অফ ফর্ম। সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কা দলটিতে বিশাল এক শূন্যতা সৃষ্টি হয়ে যায়। এ কারণেই ২০১৫ বিশ্বকাপের পর মাত্র একটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে জিততে পেরেছে তারা! তবে চণ্ডিকা হাথুড়ুসিংহে কোচ হিসেবে যোগদানের পর এই অবস্থার কিছুটা হলেও পরিবর্তন হয়েছে।
প্রস্তুতি ও সম্ভাব্য একাদশ:
এবারের এশিয়া কাপকে সামনে রেখে ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড। অধিনায়ক হিসেবে যথারীতি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস আর সহ-অধিনায়ক হিসেবে রাখা হয়েছে দিনেশ চান্দিমালকে। এখানেও একটা সমস্যা রয়েছে, চান্দিমাল সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে সহ-অধিনায়ক হলেও টেস্টে আবার তিনিই দলের অধিনায়ক। টেস্টে তার নেতৃত্বে দলের পারফর্মেন্স বেশ ভালো।
ওপেনার হওয়ার দৌড়ে মূলত চারজন রয়েছেন- উপুল থারাঙ্গা, কুশাল মেন্ডিস, কুশাল পেরেরা ও দানুষ্কা গুনাথিলাকা। এদের মধ্যে দুজন ওপেনার হিসেবে খেলবেন এবং একজনকে তিন নাম্বারে ব্যাট করতে পাঠানো হবে। সদ্য শেষ হওয়া ঘরোয়া টি-টুয়েন্টি লিগের ফর্ম বিচার করলে ওপেনার হিসেবে থারাঙ্গা ও গুনাথিলাকারই খেলার কথা।
সেদিক বিবেচনা করলে উদ্বোধনী জুটি হিসেবে মেন্ডিস-গুনাথিলাকাকে দেখার সম্ভাবনাই বেশি। তাছাড়া এই জুটির অতীত রেকর্ডও বেশ প্রশংসনীয়। এরকম হলে তিন নাম্বারে কুশাল পেরেরা ও চার নাম্বার ব্যাটসম্যান হিসেবে দিনেশ চান্দিমাল খেলবেন। তবে ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশনের দিকে খেয়াল রাখলে এই দুজন নিজেদের মধ্যে জায়গা অদল-বদলও করতে পারেন। পাঁচ নম্বর জায়গাটা অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের জন্য বরাদ্দ। ছয় নম্বর পজিশনে সাধারণত একটু মারকুটে ব্যাটসম্যানকে রাখা হয়। সেদিক বিবেচনায় এই পজিশনে ধনঞ্জয় ডি সিলভা কিছুটা বেমানান। তবে শেষ ওয়ানডে সিরিজে এই পজিশনে খেলে বেশ কার্যকরী কিছু ইনিংস খেলেছেন এই ডানহাতি ক্ল্যাসিক্যাল ব্যাটসম্যান। তাছাড়া তার অফ স্পিনটাও দলের জন্য বেশ কার্যকরী।
তুরুপের তাস হতে পারেন যে স্পিনার:
বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে আকিলা ধনঞ্জয় নিজের জায়গাটা পাকাপাকিভাবে দখল করে ফেলেছেন। এ বছরে প্রতিটি সীমিত ওভারের ম্যাচেই একাদশে ছিলেন এই রহস্যময় স্পিনার। মূলত অফ স্পিনার হলেও একই অ্যাকশনে গুগলি কিংবা লেগ স্পিন করে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে বোকা বানানোয় বেশ পটু তিনি। শেষ ওয়ানডে ম্যাচেও মাত্র ২৯ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে একাই প্রোটিয়া ব্যাটিং লাইনআপকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন এই স্পিনার। এবারের এশিয়া কাপে লঙ্কানরা কত দূর যাবে তার অনেকটা নির্ভর করছে আকিলা ধনঞ্জয়ের পারফর্মেন্সের উপরেই।
শক্তি ও সম্ভাবনা:
দলের বাকি পেসারদের তুলনায় ডেথ ওভারে এখনো বেশ কার্যকরী মালিঙ্গা। গত তিন বছরে সীমিত ওভারে লঙ্কানদের হতশ্রী পারফর্মেন্সের অন্যতম মূল কারণ ডেথ ওভারে বোলারদের খেই হারিয়ে ফেলা। সেদিক বিবেচনা করলে দলে আরেক পেসার হিসেবে এই অভিজ্ঞ পেসারেরই খেলার কথা। আর পিচ যদি স্পিন সহায়ক হয় তবে মালিঙ্গা অথবা লাকমলকে বসিয়ে বাঁহাতি স্পিনার আমিলা আপনসোকে খেলানো হবে।
সব মিলিয়ে এবারের এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা দলটা বেশ আশা জাগানীয়া, দল নির্বাচনও বেশ যুক্তিসঙ্গত হয়েছে। গত তিন বছর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যে খারাপ সময় লঙ্কান ক্রিকেট অতিক্রম করেছে, সেটা থেকে বের হয়ে আসার মোক্ষম সুযোগ এই এশিয়া কাপ। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লঙ্কানরা কি পারবে, নিজেদের পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনতে?
বিডি২৪লাইভ/এএআই/এমআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: