মুখ খুলেছে পাকিস্তান, ক্রমেই একা হয়ে পড়ছে সৌদি আরব

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:০২ পিএম

পাকিস্তানের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী শিরিন মাযারি ইয়েমেনের মজলুম জনগণের বিরুদ্ধে সৌদি অপরাধযজ্ঞের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

তিনি বলেন, সৌদি আরব নারী ও শিশুসহ ইয়েমেনের নিরপরাধ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে বহুবার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। সম্প্রতি ইয়েমেনের একটি বাসে সৌদি আরবের বিমান হামলায় বহু শিশু নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানের এ মন্ত্রী ইয়েমেনে আগ্রাসন বন্ধের জন্য রিয়াদের প্রতি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি পাশ্চাত্য বিশেষ করে আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে বরং ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি'র মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার সংকট নিরসনের জন্য মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। এ খবর দিয়েছে পার্সটুডে।

পাকিস্তানের কোনো পদস্থ কর্মকর্তার পক্ষ থেকে ইয়েমেনে সৌদি অপরাধযজ্ঞের নিন্দা জানানো ও একে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান হিসেবে আখ্যায়িত করার ঘটনা এটাই প্রথম। এ থেকে বোঝা যায়, ইমরান খানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের নতুন প্রশাসন ইয়েমেন ইস্যুতে সৌদি আরবের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখছে। একই সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতা জোরদার করারও চেষ্টা করছে পাক সরকার।

এর আগে পাকিস্তানের নওয়াজ শরীফ সরকার ইয়েমেন ইস্যুতে সৌদি আরবের সঙ্গে সরাসরি সহযোগিতা না করলেও তৎকালীন সেনা প্রধান রাহিল শরীফ সামরিক প্রশিক্ষণের কথা বলে ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রেখেছিলেন। এ থেকে বোঝা যায়, পাকিস্তানের সংসদ ও জনগণের প্রচণ্ড বিরোধিতা সত্বেও নওয়াজ সরকার ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখার ব্যাপারে বদ্ধ পরিকর ছিলেন।

করাচিতে ওয়াহদাতে ইসলামি দলের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা মোবাশ্বের হাসান বলেছেন, "দখলদার ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনিদের ওপর জুলুম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ঠিক একইভাবে সৌদি আরব ও তার মিত্ররাও ইয়েমেনের নিরীহ মানুষের ওপর হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। ইসরাইল যেমন গাজায় বোমা বর্ষণ করছে ঠিক তেমনি সৌদি আরবও ইয়েমেনের সানা, সাআদাসহ অন্যান্য এলাকায় বোমা বর্ষণ করে ব্যাপক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।" তিনি বলেন, "আন্তর্জাতিক সমাজের নীরবতার সুযোগে ইসরাইল ও সৌদি আরব এ অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।"

পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সেদেশের নতুন সরকার সৌদি আরবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধে আশার সঞ্চার হয়েছে। মালয়েশিয়ার পর পাকিস্তান সরকারও যদি ইয়েমেন ইস্যুতে সৌদি আরবের সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করে দেয় তাহলে নিঃসন্দেহে ইয়েমেন যুদ্ধের ব্যাপারে রিয়াদ একা হয়ে পড়বে।

এদিকে, পাকিস্তানের সুন্নি ইউনিয়ন পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব তারেক মাহবুব বলেছেন, "সৌদি আরব যদি নিজেকে সত্যিকারের মুসলিম দেশ মনে করে থাকে তাহলে মুসলমানদের চাওয়া পাওয়া ও অনুভূতির বিষয়টিকে অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে।"

যাইহোক, মুসলিম দেশগুলোর ওপর আমেরিকার চাপ বৃদ্ধির কারণে এ দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সংহতি আরো জরুরি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ইমরান খানের পদক্ষেপ ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: