আ’লীগের মনোনয়ন দৌড়ে একঝাঁক কৃষিবিদ
নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে এখনো জাতীয় একাদশ সংসদ নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করা না হলেও রাজনৈতিক মহলের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের কাছ থেকে শোনা যাচ্ছে আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের যে কোনো দিন হবে সংসদের নির্বাচন। মিছিল, মিটিং ও বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে মহড়া দিয়ে প্রচারণা ব্যস্তময় সময় পার করছে মনোনয়ন প্রত্যাশী। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করবেন অনেক কৃষিবিদ ব্যক্তিত্ব।বর্তমান আছেন অনেক সংসদ সদস্য কৃষিবিদও। এরই মধ্যে অনেক কৃষিবিদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার অনেকেই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাথে রয়েছেন জড়িত। অনেকে মনোনয়ন পাবে না জেনেও রাজনীতির মাঠে মহড়া দিয়ে নিজের পরিচিতি বাড়াচ্ছেন কৃষিবিদরা।
কৃষিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক: টাঙ্গাইল ১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জনতার মঞ্চের উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাকের আওয়ামী রাজনীতির হাতেখড়ি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমন্ডলীর সদস্য। টাঙ্গাইল ১ আসন থেকে তার অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীরা হচ্ছেন মধুপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সারওয়ার আলম খান এবং স্কয়ার হাসপাতালের পরিচালক ডঃ সানোয়ার হোসেন। তবে আব্দুর রাজ্জাকের মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত।
কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম: মাদারীপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বর্তমানে তৃতীয়বারের মত আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী(১৯৮৭-১৯৯৬), সহকারি একান্ত সচিব(১৯৯৬-২০০১) , স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, দু'বার কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশের মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন বাহাউদ্দিন নাছিম। মাদারীপুর-৩ থেকে তার অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীরা হচ্ছেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন এবং আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। তবে তৃনমূলে জনপ্রিয়তা এবং আস্থার দিক থেকে বাহাউদ্দিন নাছিমের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত।
কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি, বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতির(১৯৭৮) দায়িত্ব পালন করা এই কৃষিবিদ দু'বার কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশের মহাসচিব ছিলেন। বগুড়া ১ থেকে দুইবার
নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি।
কৃষিবিদ মির্জা জলিল: পাবনা-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সচিব মির্জা জলিল । বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি রাজনীতি এবং প্রশাসন সামলেছেন সমানতালে। ছিলেন জনতার মঞ্চের উদ্যোক্তাদের একজন, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সভাপতি, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশের চার বছর সাধারণ সম্পাদক এবং আট বছর সভাপতি। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন: রাজনীতির হাতেখড়ি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ থেকে। পরবর্তীতে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সন্তান হুমায়ুন এলাকায় মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে সেখানে সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সৈয়দ আশরাফের অবর্তমানে সেখানে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনোনয়ন প্রত্যাশী কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন।
কৃষিবিদ ড. সামিউল আলম লিটনঃ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি এবং বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক কৃষিবিদ ড. সামিউল আলম লিটন বর্তমানে আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ময়মনসিংহ ৩ (গৌরীপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য মনোনয়ন প্রত্যাশী।
কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা: ১৯৭৭ সালে নালিতাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা'র রাজনীতি শুরু। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এলাকায় দুটি কলেজ, একটি ডায়াবেটিস হাসপাতাল, ৩৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪ টি জুনিয়র হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। কৃষিবিদ বাদশা ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা শেরপুর ২ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
কৃষিবিদ ড. আওলাদ হোসেন: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন কৃষিবিদ ড. আওলাদ। শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত। তিনি ঢাকা ৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বর্তমানে সেখানে সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির। সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা আওয়ামী লীগ থেকে যাতে কেউ মনোনয়ন পায় এবং সে দিক থেকে ড. আওলাদ এগিয়ে আছেন। এ আসনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সানজিদা খানম।
কৃষিবিদ দেওয়ান কামাল আহমদ: নীলফামারী ৪ থেকে মনোনয়ন চাইবেন নীলফামারী পৌর মেয়র নীলফামারী জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি কৃষিবিদ দেওয়ান কামাল আহমদ।কৃষিবিদ নজরুল ইসলামঃ ময়মনসিংহ ৫ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী কৃষিবিদ নজরুল। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন ১৯৮৩ সালে, পরবর্তীতে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশের সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশের নির্বাহী সদস্য তিনি। এছাড়া এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আহকাব) এর মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন তিনি দুইবার। ময়মনসিংহ ৫ আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন অনেকে। তবে তার প্রত্যাশা তিনি কোন গ্রুপের সাথে জড়িত না হওয়ায় তিনি মনোনয়ন পেলে দল শক্তিশালী অবস্থানে যাবে এবং তিনি আসনটি শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারবেন।
কৃষিবিদ মিছবাহুজ্জামান চন্দন: নেত্রকোনা ৫ (পূর্বধলা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কৃষিবিদ মিসবাহুজ্জামান চন্দন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই মেয়াদে সাধারণ সম্পাদকের (১৯৯২-১৯৯৮)
দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তথ্য-গবেষণা সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করেন এবং বর্তমানে প্রস্তাবিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন
বেলাল এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনের দ্বন্দ্বের কারণে অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন কৃষিবিদ ইঞ্জিনিয়ার মিসবাহুজ্জামান চন্দন।
কৃষিবিদ সারওয়ার মোর্শেদ জাস্টিস: ২০০৩ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। বর্তমানে তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয়
পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। কৃষিবিদ সারওয়ার মোর্শেদ জাস্টিস নেত্রকোনা ২ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী।
কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু: রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৯৭-২০০১) এবং ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি(২০০২-২০০৬)। বর্তমানে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের ১ নং সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তখন তিনি যাকে ২২ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছিলেন, আজ তিনি বিনা ভোটে সংসদ সদস্য। সেখানে জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিশ্বনাথ সরকার বিটু এগিয়ে আছেন।
আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষিবিদরা। যাদের কেউ নিজ নিজ দলের প্রভাবশালী নেতা, অনেকে মাঝারি গোচের। অনেকে আবার মনোনয়ন পাবেন না ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নিজেকে মানুষের কাছে নেতা হিসেবে উপস্থাপন করার।
বিডি২৪লাইভ/এসআই/এসএস
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: