দিনে ভিক্ষা করে রাতে মদ খায় তারা!

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:১৬ পিএম

অনেক প্রতারক রয়েছে, যারা ভিক্ষাবৃত্তিকে অবলম্বন করে সুন্থ হওয়া স্বত্তেও মানুষের কাছে হাত পাতেন। যার ফলে অনেক সময় প্রকৃত ভিক্ষুকেরাও দান-খয়রাত থেকে বঞ্চিত হন। এমনই দুই প্রতারকের দেখা মিলে নারায়ণগঞ্জে। যারা মানুষের সহানুভূতিকে পূঁজি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা।

দিন শেষে যা আয় হয় তা দিয়ে ওই ভিক্ষুকেরা রাতের আঁধারে হারিয়ে যান নেশার জগতে। তারা থাকেন নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া রেলস্টেশনে। শহরের ব্যস্ততম পয়েন্ট চাষাঢ়া শহীদ মিনার অথবা সমবায় মার্কেটের সামনের ফুটপাতে ভিক্ষা করে এ দুই প্রতারক।

&dquote;&dquote;

তবে তারা এক স্থানে বেশিদিন নিয়মিত থাকেন না। কারণ একজন মানুষ তো আর প্রতিদিন একজনকে ভিক্ষা দেন না। তাই তারা স্থান পরিবর্তন করেন। এর মধ্যে দুলালের একটি পায়ের মাংস উঠে গর্ত হয়ে গেছে। যে কেউ দেখলে আঁতকে উঠবে। এমন চিত্র দেখে পথচারীরা অন্য আট-দশজন ভিক্ষুকের চেয়ে দুলালকে ৫-১০ টাকা বেশি দেয়।

একই অবস্থা মোকলেছের। অবাক করা বিষয় হলো পায়ের ক্ষত স্থান যাতে শুকিয়ে না যায় এ জন্য একটা মেডিসিন ব্যবহার করেন তারা। কারণ ক্ষত স্থান শুকিয়ে গেলে মানুষ ভিক্ষা দিতে চায় না। এমনটা বলেছেন দুলাল ও মোকলেছ।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই এমদাদুল হক বলেন, আমরা প্রায়ই অভিযান চালাই। পিটাইয়া এসব ভিক্ষুকদের উঠিয়ে দিই। তারপরও বসে। খুব দ্রুত আমরা আবার অভিযানে নামব।

জানা গেছে, ভিক্ষার সময় তারা লাঠিতে ভর করে চলাফেরা করলেও ভিক্ষা শেষে আর লাঠির প্রয়োজন হয় না। দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে পথচারীদের কাছ থেকে এভাবেই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন দুই প্রতারক বন্ধু।

প্রতারক দুলাল বলেন, অসহায় হয়ে এই পথ বেছে নিয়েছি। আমার মা মারা গেছে। আমার কেউ নাই। আমার এক্সিডেন্ট হয়েছিল। তাই আমার এই অবস্থা।

অপরজন মোকলেছ বলেন, আমার কেউ নাই। সব মইরা গেছে। মুন্সিগঞ্জে বাড়ি ছিল আমার। এক্সিডেন্ট হইয়া আমার এই অবস্থা। ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে গেছিলাম। তারা বলছে পায়ের ওপরের মাংস কেটে এখানে লাগাতে হবে। টাকা নাই, টাকা হলে ডাক্তার দেখামু।

পথচারী ও স্থানীয় দোকানিরা জানান ভিন্ন তথ্য। একাধিক পথচারী ও দোকানি বলেন, অর্থ উপার্জনের জন্য নিজেরাই নিজেদের পা কেটে রাস্তায় নেমেছেন তারা।

স্থানীয় জুয়েলারি ও কসমেটিক বিক্রেতা সজিব বলেন, এই সড়কে বসা সবগুলো ভিক্ষুককে আমি চিনি। একজনেরও কিছু হয়নি। সবগুলো নিজের পা কেটে এমন করেছে। আর ওই দুইটা হলো সবার গুরু। বহুদিন ধরে ভিক্ষার নামে ব্যবসা করছে। সারারাত ইয়াবা-মদ খায় আর দিনের বেলায় ভিক্ষা করে। নিজের পায়ের ঘা শুকালে আবার নিজেই ঘা বানায়। কয়েকদিন আগে এক মহিলা এসে দুলালরে বলেছিল, আমি ডাক্তার দেখামু। সব খরচ আমার। কিন্তু রাজি হয়নি দুলাল। ওই মহিলাকে দুলাল বলে দেয়, ডাক্তার আমি দেখাইতে পারমু, আপনি পারলে কয়টা টাকা দিয়ে যান। পরে ওই মহিলা টাকা দিয়ে চলে যায়।

&dquote;&dquote;স্থানীয় মুদি দোকানি ইলিয়াস আলী বলেন, ওই দুইটা বড় শয়তান। পুলিশও মানে না। পা কাটার পর সেই স্থান কিছুদিনের মধ্যেই শুকিয়ে যায়।

জানা গেছে, পায়ের ঘা না শুকানোর জন্য একটা মেডিসিন ব্যবহার করে তারা। যা ব্যবহারে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই তাদের ক্ষত স্থান আগের রূপ নেয়। যা দেখিয়ে চলে তাদের প্রতারণা।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: