সমাবেশে আসছে জাতীয় ঐক্যের কর্মসূচি

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:২২ এএম

জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে ৫ দফা ও ৯ লক্ষ্য ঘোষণার পর জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সমাবেশ প্রস্তুতিতে গতি এসেছে। আগামী ২২শে সেপ্টেম্বরের পূর্বঘোষিত সমাবেশ সফল করতে গঠিত হয়েছে ৭টি উপ-কমিটি। গতকাল থেকে কাজ শুরু করেছে কমিটিগুলো। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্টজনদের আমন্ত্রণ দেয়া শুরু হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি পাওয়া না গেলেও রাজধানীর নাট্যমঞ্চ ঘিরে চলছে প্রস্তুতি। তাতে আমন্ত্রণ পাচ্ছে না কেবল জামায়াতে ইসলামী। শুরু থেকে এই ঐক্যপ্রক্রিয়ায় রয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম। পাঁচ দফা দাবিতে এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে তিন দলের যুক্তফ্রন্ট।

সমাবেশ থেকে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে আরো বড় পরিসরে যাত্রা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তাফা আমিন মানবজমিনকে বলেন, এটা রাজনৈতিক ঐক্য প্রচেষ্টা নয়। সামাজিক ঐক্যপ্রক্রিয়া। আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চের সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতি চলছে। পোস্টার লাগানো হচ্ছে। বিলি হচ্ছে লিফলেট। জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন সেখানে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে চিঠি দিয়ে দলীয় কর্মীসহ আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ ছাড়া চিঠির মাধ্যমে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবীসহ বিশিষ্ট নাগরিকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। সমাবেশ থেকে বৃহত্তর ঐক্যপ্রক্রিয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে বৃহত্তর ঐক্যের লক্ষ্যে আরো বড় পরিসরে যাত্রা শুরু হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ঐক্যপ্রক্রিয়ার সমাবেশে ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেতৃবৃন্দ। প্রায় প্রতিদিন নিজেদের মধ্যে চলছে আলাপ-আলোচনা। এ ছাড়া বিভিন্ন সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের কাছেও তুলে ধরছেন নিজেদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। তবে, নাট্যমঞ্চ ঘিরে সমাবেশের প্রস্তুতি নিলেও এখন পর্যন্ত লিখিত অনুমতি পাননি তারা। এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার নেতৃবৃন্দ জানান, গত ৬ই আগস্ট সমাবেশ করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়ার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। কিন্তু তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের বাইরে ছিলেন। পরে ডিএমপির পক্ষ থেকে মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়।

এদিকে, গতকাল সকাল ১১টার পর রাজধানীর মতিঝিলে প্রবীণ আইনজ্ঞ ও ঐক্যপ্রক্রিয়ার উদ্যোক্তা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন। সমাবেশের বিভিন্ন দিক নিয়ে দু’ঘণ্টা ধরে তারা আলোচনা করেন। বিভিন্ন কর্মপন্থা ঠিক করেন। এতে ড. কামাল ছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, ঐক্যপ্রক্রিয়ার সদস্য-সচিব আ ব ম মোস্তাফা আমীন, সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, ঐক্যপ্রক্রিয়ার সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নুরুল হুদা মিলি চৌধুরী, মোকাব্বির খান, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, আ ও ম শফিক উল্লাহ, মোস্তাক আহমেদ, আমীন আহমেদ আফসারী প্রমুখ।

সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রায় দু’ঘণ্টার আলোচনায় সমাবেশে কার কী দায়িত্ব হবে তা চূড়ান্ত করেন। চূড়ান্ত করেন গঠিত ৭ উপ-কমিটি। আগামী ২২শে সেপ্টেম্বরের সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকবেন মোস্তাফা মোহসীন মন্টু ও সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। সভা পরিচালনা করবেন, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তাফা আমীন।

এছাড়া গঠিত ৭টি উপ-কমিটির সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক। গঠিত কমিটিগুলোর মধ্যে অভ্যর্থনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন মফিজুল ইসলাম খান কামাল ও আমীন আহমেদ আফসারী। সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন রওশন ইয়াজদানী, রত্না হক ও আইয়ুব করম আলী। রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে লিয়াজোঁ করার জন্য গঠিত লিয়াজোঁ কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও মো. হেলাল উদ্দিন। এই কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন মো. হাবিবুর রহমান, কর্নেল (অব.) ডা. আবদুল লতিফ মল্লিক, হারুনুর রশিদ ও ড. মোমেনা খাতুন। ছাত্র বিষয়ক ও স্বেচ্ছাসেবক কমিটির আহ্বায়ক সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। সদস্য আমিন আহমেদ আফসারী ও আজম রুপু।

সদস্য সচিবের দায়িত্ব পড়েছে মুহাম্মাদুল্লাহ মধুর ওপর। এ ছাড়া এই কমিটির অপর দু’সদস্য হলেন- মো. সানজিদ রহমান শুভ ও নাজিমুল ইসলাম তামিম। ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কমিটিতে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব হলেন- অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক ও সাইদুর রহমান। এতে সদস্য করা হয়েছে- জামাল উদ্দিন আহমেদ, মোসাদ্দেক হোসেন স্বপন, গোলাম মোস্তফা ও শেখ সেলিম আহমেদকে। ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন আ.ও.ম. শফিক উল্লাহ (আহ্বায়ক) ও সৈয়দ হারুনুর রশিদ (সদস্য সচিব)। সদস্য হিসেবে থাকছেন, আতাউর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার সজীব, মোজাম্মেল মিয়াজি ও আবুল কালাম আজাদ। মঞ্চ, মাইক, চেয়ার, জেনারেটর, স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বসহ ভেন্যু ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব হলেন- মোস্তাক আহমেদ ও মো. হানিফ।

এই কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- হারুন চৌধুরী, ইসমাইল হোসেন তুহিন, আবু তৈয়ব হাওলাদার, তানভীর বিন করিম। সর্বশেষ প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন মোকাব্বির খান (আহ্বায়ক) ও নূরুল হুদা মিলু চৌধুরী (সদস্য সচিব)। এই কমিটির সদস্যরা হলেন- রফিকুল ইসলাম পথিক, মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আহমেদ, শফিকুর রহমান, ডা. মাহবুবা খানম, নাহিদ রহমান পুতুল ও ইব্রাহীম ইরাদ। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: