একাধিক রোহিঙ্গার হাতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট!

প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:০৪ পিএম

বান্দরবানের লামায় একাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক পাসপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ। জন্মনিবন্ধন, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট, আইডি কার্ড ও জায়গার কাগজ জাল-জালিয়াতি করে এবং মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে পাসপোর্ট বানিয়ে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কাতার, কুয়েত, সোদিআরব, মালয়েশিয়া ও ইতালী সহ বিভিন্ন উন্নত দেশে পাড়ি দিচ্ছে রোহিঙ্গারা।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার ৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড কাঁঠালছড়া মুসলিম পাড়ার মৃত বদিউজ্জামান এর ছেলে মতিউর রহমান (৫৫) সম্প্রতি পাসপোর্ট পেয়েছে। মতিউর রহমান ৭/৮ বছর আগে স্ব-পরিবারে মিয়ারমার হতে বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করে কক্সবাজারের উখিয়া হতে পালিয়ে লামার ফাঁসিয়ালীতে অবস্থান করছে। ইতিমধ্যে সে স্থানীয় ইউপি মেম্বারের সহায়তায় মোটা অংকের টাকা খরচ করে জন্মনিবন্ধন ও চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট করে নিয়েছেন। তার ৪ ছেলে ১ মেয়ে নিয়ে সে কাঁঠালছড়া মুসলিম পাড়ায় বসবাস করে।

গত দুই বছর আগে তার বড় ছেলে মো. আইয়ুব (৩৮) জাল কাগজপত্র দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছে। বছরখানেক আগে তার ২য় ছেলে মো. ওমর (২৯) একইভাবে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে মালয়েশিয়া পাড়ি জমিয়েছে। বর্তমানে তার পরিবারের সবাই পাসপোর্ট তৈরি করে স্ব-পরিবারে উন্নত দেশে পাড়ি জমানো মতলব করছে বলে স্থানীয়রা জানান।

স্থানীয়রা বলেন, তারা বাংলাদেশের নামে ভিসা পাসপোর্ট দিয়ে দেশের বাহিয়ে গিয়ে নানান অপকর্ম করে দেশের বদনাম করছে। বিশেষ করে যারা এইভাবে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে তারা সেখান থেকে টাকা পাঠিয়ে দেশেও নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজে সহায়তা করছে। তাদের পাঠানো টাকার একটি অংশ মিয়ানমারের আরসা’র মত সশস্ত্র বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠনের ফান্ড সৃষ্টিতে সহায়তা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। 

এইভাবে পার্শ্ববর্তী শামুকছড়া এলাকায় বছরখানেক আগে আসা বার্মাইয়া ফয়েজ উদ্দিন (৪২) ও বার্মাইয়া মো. এনাম (৩৭) ১৫/২০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেতেযাচ্ছেন। স্থানীয় ওসমান গণি (৫০) নামে একজন বলেন, আমার কাছে চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ও জন্মনিবন্ধনের জন্য মেম্বার সাহেব ১০ হাজার টাকা চেয়েছেন। এই বিষয়ে ইউপি মেম্বার কামাল উদ্দিন বলেন, লোকগুলো আমার ওয়ার্ডে বাস করে ঠিক আছে। কিন্তু তারা কিভাবে জন্মনিবন্ধন ও চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট পেয়েছে আমি জানিনা।

ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, মেম্বাররা আবেদন যাচাই-বাচাই করে দিলে আমি জন্মনিবন্ধন ও চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট দিতে বলি। এই ধরনের বিষয় অনেকের মুখে শুনলেও কোন অভিযোগ না পাওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারিনি।

লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশনে চাহিদা মত কাগজপত্র সত্যতা যাচাই-বাচাই ও সত্যতা আমরা যাচাই করি। জন্মনিবন্ধন ও চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট গুলো ইউনিয়ন পরিষদ প্রদান করে। তাদের জিজ্ঞাসা করলে বলে এইসব ঠিক আছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি বলেন, রোহিঙ্গা নাগরিকরা যদি পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন তাহলে বিষয়টা অত্যান্ত দুঃখজনক। সামনে থেকে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করে জন্মনিবন্ধন, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ও ভোটার করতে মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের আমরা বলে দিব।

বিডি২৪লাইভ/এসএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: