জনগণের সঙ্গে পুলিশের আস্থার সেতুবন্ধন কমিউনিটি পুলিশিং 

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:২৫ পিএম

কমিউনিটি পুলিশিং হচ্ছে জনগণের সঙ্গে পুলিশের আস্থার এক সেতুবন্ধন। জঙ্গিবাদ ও মাদক থেকে সমাজকে সচেতন ও মুক্ত রাখার জন্য কমিউনিটি পুলিশিং এর অবদান হতে হবে সবচেয়ে বেশি। এ ব্যাপারে কমিউনিটি পুলিশিং এর দায়িত্ব হবে, যেকোন ধরনের মাদক, জঙ্গিবাদ ও সমাজে অপরাধের মূল হোতাদের সম্পর্কে পুলিশকে অবহিত করা। বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে।

পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮) বিকেলে কুমিল্লা সদর সক্ষিণ উপজেলা পরিষদ মাঠে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের উদ্যোগে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ কল্পে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আলোচনা সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। জঙ্গিবাদ ঠেকাতে বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) গুলোকেও কাজে লাগাতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আর এনজিওসমূহ যাতে কোন প্রকার জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হতে না পারে সেজন্য এনজিও বিষয়ক ব্যুরো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে।

জঙ্গিবাদ, মাদক ও নারী নির্যাতন বিরোধী কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ কমিউনিটি পুলিশের আহ্বায়ক প্রফেসর আনোয়ার উল্লাহ এবং অন্যান্য সকল উপজেলা চেয়ারম্যান, সকল পৌরসভার মেয়র, সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, হলি আর্টিজান, কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানা গুড়িয়ে দেওয়াসহ সকল জঙ্গিবাদ নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবদান ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে থাকবে। দুর্গম অঞ্চলের সাধারণ মানুষের শোষণ, বঞ্চনা ও হাহাকারের ঘটনা কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে পৌঁছানো সহজ হবে। আজও বাংলাদেশের দুর্গম অঞ্চল গুলোতে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে মানুষ, তাই মানবতার মা শেখ হাসিনার শাসনামলে একটি মানুষকেও বঞ্চনার শিকার হতে দেওয়া যাবেনা। পুলিশকেও বিবেকের কাছে সচেতন ও সৎ থাকতে হবে। আমাদেরকেও বিবেকের কাছে সচেতন হয়ে, পুলিশকে সমাজের শান্তি আনতে সহায়তা করতে হবে। মাদক ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।

মাদক গ্রাম ও জনপদকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। একটি প্রজন্ম এ ধ্বংসের শিকার। এটাকে যদি রক্ষা করা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে প্রজন্ম শূন্যতা দেখা দেবে। দেশের বড় দুটি চ্যালেঞ্জ উগ্রবাদ ও মাদক। প্রধানমন্ত্রী এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আর আমরা সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশকে একটি সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধ প্রজন্ম উপহার দিয়ে দেশেকে নিয়ে যাবো কাঙ্খিত অবস্থানে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, মাদক, সন্ত্রাস এমনকি জঙ্গিবাদের করালগ্রাসে কেউ যেন জড়িয়ে না পড়ে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কোন পরিচিত বা অপরিচিত ব্যক্তি যেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। ছোট ছোট অপরাধ থেকেই বড় অপরাধের সৃষ্টি হয় আর এর মূলে রয়েছে মাদক। এছাড়াও উপজেলার যেকোন প্রান্তে যেন কোন অপরাধ সংঘটিত না হতে পারে সে বিষয়ে কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যদের কাজ করতে হবে।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে জনগণের কথা পুলিশ জানতে পারবে। কমিউনিটি পুলিশিং হচ্ছে একটি দর্শন। যতদিন রাষ্ট্র আছে ততদিন কমিউনিটি পুলিশিং থাকবে। মানুষের মাঝে যেন অপরাধ প্রবণতা না জন্মায়, কমিউনিটি পুলিশিং সে বিষয়ে সর্তকীকরণ করে। কমিউনিটি পুলিশিং অন্যতম সমাজ সহায়ক ব্যবস্থা।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: