যৌতুকের বর্বরতায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে রেহানা

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:৩১ পিএম

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে যৌতুকের জন্য রেহানা খাতুন (২৭) নামে এক গৃহবধূকে মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে স্বামী। আহত রেহানা খাতুন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার দিনমজুন ইসলাম মিয়ার কন্যা। স্বামী স্বপন মিয়া সদর উপজেলার চূড়খাই নামাপাড়া গ্রামের বিত্তবান সৌদি প্রবাসী বাদল মিয়ার ছেলে।

প্রায় ৮ বছর আগে রেহানা দেখতে বেশ সুন্দরী ও রূপবতী হওয়ায় আগ্রহ ভরে পুত্রবধূ করে ঘরে তুলে ছিলেন পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার চূড়খাই নামাপাড়া গ্রামের বিত্তবান সৌদি প্রবাসী বাদল মিয়া। সুখেই চলছি রেহানার দাম্পত্য জীবন। কিন্তু এ সুখ তার বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। নেশাগ্রস্থ স্বামী স্বপন মিয়ার (৩০) চোখে দিনে দিনে বিষ হয়ে উঠে রেহানা। বাড়তে থাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। তবুও দু:খ-কষ্ট আগলে রেখেই সংসার করছিল রেহানা। এরই মাঝে তাদের ঘর আলো করে আইমুন (৪) ও আরিশা (২) নামক পুত্র এবং কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।

ভুক্তভোগী রেহানার পিতা ইসলাম মিয়া জানান, সম্প্রতি রেহানার স্বামী স্বপন মিয়া বিদেশ যাবে বলে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। কিন্তু আর্থিক ভাবে আমি স্বচ্ছল না হওয়ায় ওই টাকা আমি দিতে পারিনি। এতে স্বপন মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে আমার মেয়ে রেহানার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে রেহানাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থায় সংকটাপন্ন হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।

ইসলাম মিয়া আরো জানান, ডাক্তার বলেছেন রেহানার মাথার খুলি কেটে গেছে। অপারেশন করে ৭/৮দিন চিকিৎসার পর তারা ছুটি দিয়ে দেয়। বলেছে, তিন মাস পর আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। কিন্তু মাথায় আঘাত পাওয়ার পর থেকে মেয়ে আমার পাগল অবস্থা। ক্ষণে ক্ষণে আবোল-তাবোল বলে। আমি গরীব মানুষ। মেয়ের সেবা আর ঔষুধ কেনার চিন্তায় এখন আমি দিশেহারা।

কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনার পরদিন গত ৮ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগীর পিতা ইসলাম মিয়া বাদি হয়ে এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী স্বপন মিয়াসহ ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই উজ্জল সাহা জানান, মামলা দায়েরের দিনই একজন আটক করে কারাগারে পাঠানো হলে দুইদিন পর সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। তবে অন্য আসামিরা পলাতক আছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরো জানান, মেয়ের পরিবার অত্যন্ত গরীব। আর স্বামীর পরিবার বিত্তবান। পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হলেও মামলার প্রাথমিক তদন্তে ধারনা করা যায় ‘স্বামী পরকীয়া আসক্ত থাকতে পারে’। তবে রেহানা অসুস্থ থাকায় তার স্বাক্ষী নেয়া যাচ্ছে না। সুস্থ হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: