সৈয়দপুরের পল্লীতে বাদুড়ের অভয়ারণ্য!

প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১৪ পিএম

পাখির মত উড়লেও আকৃতির কারণে বাদুড়ের কদর নেই। নানা কল্প-কাহিনীর আতঙ্ক সৃষ্টিকারী প্রাণি হিসাবে শত প্রতিকুলতার মধ্যেও সৈয়দপুরের পল্লীতে নির্ভয়ে আবাস গড়েছে কয়েক লাখ বাদুড়। এতে উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ভগতপাড়া গ্রামটির প্রকৃতি আর আকাশ যেন বাদুড়ের অভয়ারণ্যতে পরিণত হয়েছে।

জানা যায়, প্রায় দেড়শতাধিক বছর আগে এ এলাকার প্রায় ৩ একরের বাঁশঝাড় ও দু’টি প্রাচীন বটগাছে বাদুড়ের বসবাস শুরু হয়। এই এলাকায় সৌভাগ্যের প্রতিক মেনে বাদুড়দের ভিন্ন ভাবে গ্রহন করায় ক্রমেই বংশবৃদ্ধি ঘটেছে। 

সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ভগতপাড়ায় দেখা যায়, প্রচণ্ড তাপদাহে এ এলাকার  বট গাছের শাখায় তাদের হুকের মত পা দু’টো আটকিয়ে নিস্তব্ধতায় ঝুলছে। ওজন প্রায় ২ থেকে ৩ কেজি। মাথায় হলুদ রং থাকলেও পুরো দেহটি কালো। একটু শব্দ হলেই দল বেধে পালক ছাড়া চামড়ায় মোড়ানো ডানা দিয়ে দিয়ে ঘুড়ির মত কিচির-মিচির শব্দে নিরব স্থানে ঝুলে পড়ছে।  রাতের অক্লান্ত শ্রমে যেন তারা শুধু একটু প্রশান্তি ঘুম খুঁজছে। 

&dquote;&dquote;

বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অজিত চন্দ্র রায় বলেন, বাদুড় নিরিহ প্রাণী। এরা মাটিতে পরে গেলে আর উঠতে পারে না। মাটিতেই মারা যায়। এদের পা নেই। তবে পেটের নিচে দুটো হুক আছে। এ দিয়েই তারা ঝুলে থাকে। খাদ্যের অভাব মেটানো ছাড়া কোনো ক্ষতি করে না। এরা সারাদিন ঘুমায়। সন্ধ্যায় বেরিয়ে যায় আহারের সন্ধানে। আবার ফিরে আসে ভোর রাতে।

পাখি ও পরিবেশ সুরক্ষায় কাজ করা সেচ্ছাসেবী সংগঠন সেতুবন্ধনের প্রতিষ্ঠাতা আলমগীর হোসেন বলেন, বাদুড় নিয়ে কল্পকাহিনীর কুসংস্কারের যুগ কেটে গেছে। এরা মানুষের উপকারই করে। বিশেষ করে কলা আর অ্যাভোকাডোসহ প্রায় ৩ শত রকমের গাছের বীজ ছড়াতে সাহায্য করে। আবার কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলকে রক্ষা করে। তাই মানবকল্যাণকারী ও পরিবেশ বান্ধব এ স্তন্যপায়ী প্রাণিটি রক্ষা আমাদের দায়িত্ব।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম গোলাম কিবরিয়া বলেন, দেড় শতাধিক বছর পুরোনো প্রায় ৩ একরের বাঁশঝাড় ও দুটি বটগাছের মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবে এখানে বাদুড়েরা নির্ভয়ে বসতি গড়েছে। এটি রক্ষায় পরিবেশবাদী সংগঠন সেতুবন্ধন ও অত্র এলাকাবাসী আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। যার কারণে এখানকার স্তন্যপায়ী এ প্রাণির সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে। তাদের এই আবাসস্থল ধরে রাখতে স্থানীয়দের সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত সহযোগিতা অব্যহত থাকবে। 
                                               
বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: