বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে প্রথম ওয়ানডে আজ

প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৫৩ এএম

বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ শুরু হচ্ছে আজ রবিবার (২১ অক্টোবর)। আজ দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে মিরপুর শেরে-ই বাংলা জাতয়ী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে। 

এই ম্যাচটি হবে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ৭০তম ওয়ানডে ম্যাচ।

ফেভারিট হিসেবেই সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শক্তির বিচারে প্রায় সব দিক থেকেই এগিয়ে রয়েছে স্বাগতিকরা।

এদিকে, বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজকে টাইগারদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করছেন অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা।

একটা সময় ছিল বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে দ্বৈরথ ২২ গজে আগুনের ঝাঁজ ছড়ালেও দু’দল এখন দুই মেরুর বাসিন্দা। দু’দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সেই সেটা স্পষ্ট। বাংলাদেশ যেখানে এশিয়ার রানার্সআপ দল, জিম্বাবুয়ে সেখানে টানা দুটি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

শক্তি, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, র‌্যাংকিং, হোম কন্ডিশন সুবিধা- সব বিবেচনায় বাংলাদেশের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে এই জিম্বাবুয়ে। তবে সেখানেই ভয় বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতলে কেউ আলাদা করে টাইগারদের প্রশংসা করবে না। কিন্তু, হারলেই জাত যাবে! ঠিক এ কারণেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজকে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন মাশরাফি।

তাই জিম্বাবুয়েকে হালকা করে দেখার ঝুঁকি নিতে চান না মাশরাফি।

দু’দল পরস্পরের খুবই পরিচিত। এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি মুর্তজার অভিষেক হয়েছে। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজার এটি বাংলাদেশে ৯ম সফর। সমান নয়টি সফর করেছেন এলটন চিগুম্বুরাও। এছাড়া রস টেলরসহ অন্য ক্রিকেটারদের এই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। পরস্পরের শক্তি ও দুর্বলতাও দু’দলের খেলোয়াড়দের জানা আছে। 

সাকিব ও তামিম ইনজুরির কারণে দলে না থাকায় নিজেদের ভালো সম্ভাবনা দেখছে জিম্বাবুয়ে। তবে এশিয়া কাপের ধারে কাছেও নেই জিম্বাবুয়ে সিরিজ। দুবাইয়ে এশিয়া কাপে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে এসেছে মাধরাফি বাহিনী। সেই তুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজটা অনেকটাই ছোট মনে করা হচ্ছে।

যদিও বাংলাদেশ শিবিরে ভয় চোট নিয়ে। ছোটখাটো চোট রয়েছে মাশরাফি, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর। এছাড়া কয়েকদিন জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ছিলেন পেসার রুবেল হোসেনও। আজ তার খেলা অনিশ্চিত। বিশ্বকাপের আগে কয়েকটা পজিশনের জন্য বিকল্প খেলোয়াড় বাছাইয়ের কাজটা শুরু হবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই।

আজই অভিষেক হয়ে যেতে পারে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পাওয়া ফজলে রাব্বির। সাকিবের বিকল্প হিসেবেই এই বাঁ-হাতি ব্যাটিং অলরাউন্ডারকে দলে নিয়েছেন নির্বাচকরা। তামিম ইকবালের ইনজুরি ও সৌম্য দলের বাইরে থাকায় ওপেনিং জুটিতে লিটন দাসের সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্তকেই দেখা যাবে।

টপ অর্ডারে দেখা যাবে এশিয়া কাপে হঠাৎ ডাক পাওয়া ইমরুল কায়েসকে। ৭ নম্বর পজিশনে একাদশে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনের। রুবেল খেলার মতো ফিট না থাকলে একাদশে জায়গা হতে পারে আবু হায়দার রনিরও।

বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে এখন পর্যন্ত ৬৯টি ওয়ানডে খেলেছে। এর মধ্যে ৪১টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে জয় পেয়েছে ২৮টিতে। সর্বশেষ ১০ ম্যাচেই জিতেছে টাইগাররা।

এদিকে মিরপুরের অননুমেয় উইকেট নিয়েই ভাবনায় দু’দল। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে হওয়ায় স্পিন সহায়ক উইকেটের দিকেই নজর স্বাগতিকদের। মাশরাফির চাওয়া ভালো উইকেট। একই সঙ্গে সিরিজটা ভালোভাবে জিততে চায় বাংলাদেশ। 

মাশরাফি বলেন, ‘সবার প্রত্যাশা, আমরা জিতব। সেটা খুবই স্বাভাবিক। এশিয়া কাপে যেভাবে চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলেছি, এখানেও সেটাই থাকবে। হয়তো জিতলে সবাই বলবে, এটাই হওয়ার কথা ছিল। হারলে কিন্তু ভিন্ন কথা হবে।’

অপরদিকে, জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক মাসাকাদজা নিজেদের ফেভারিট দাবি করে বসলেন। সফরকারী দলের অধিনায়ক বলেন, ‘একমাত্র গ্রেয়াম ক্রেমার ছাড়া আমাদের সবাই এখানে এসেছে। বাংলাদেশকে আমরা খুব ভালোভাবেই চিনি। ফেভারিট বললে আমরা জিম্বাবুয়েকেই এগিয়ে রাখব।’

বাংলাদেশের ভাবনায় প্রতিপক্ষ নয় জিম্বাবুয়ে। নিজেদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সেটা করতে পারলে বিশ্বকাপের পরিকল্পনা ও অনুশীলন ঠিক পথেই থাকবে বাংলাদেশের। এমনটাই মনে করছেন টাইগার ক্রিকেট কর্তারা।

উল্লেখ্য, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সর্বশেষ দশ ম্যাচের দশটিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ও ২০১৫ সালে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ করে। আর গত জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুইটি ম্যাচ খেলে দুইটিতেই বাংলাদেশ জয় পায়।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: