কারাগারে যেভাবে আছেন মইনুল!

প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৩১ পিএম

সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্যের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম জামিন শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এর আগে মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টাকে।

মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রংপুরে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। গতকাল রাত ১০টার দিকে জেএসডির সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসা থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশনের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে কটূক্তির অভিযোগে করা মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কারাগারের সাধারণ একটি ওয়ার্ডের মেঝেতে রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কারাগারে নেয়ার পর ‘আমদানি ওয়ার্ড’ নামে পরিচিত একটি সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয় তাকে। যে ওয়ার্ডটিতে আরও ৪০ জন সাধারণ বন্দি আছেন। তার জন্য রাখা হয়নি কোনও খাট কিংবা চেয়ারের ব্যবস্থাও।

আদালতের এ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশনা না থাকায় মইনুল হোসেনকে ‘আমদানি ওয়ার্ডে’ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

টেলিভিশনের টক শো’তে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলা ও নারী বিদ্বেষী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে রংপুরের একটি মানহানি মামলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সোমবার (২২ অক্টোবর) রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)’র সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে নেয়া হয়। এসময় ব্যারিস্টার মইনুলের জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এসময় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মামলার নথি যেহেতু রংপুরে, জামিনের আবেদনও রংপুরেই করতে হবে।’

এর পর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশনের সম্পাকমণ্ডলীর সভাপতি মইনুল হোসেনকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। আদালতের নির্দেশনা না থাকায় তাকে রাখা হয় সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে।

এর আগে সোমবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেন নগরীর মুলাটোল এলাকার মিলি মায়া বেগম নামে এক নারী।

মামলা সূত্রে জানা যায়, নারী বিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ৫০০/৫০৬ ও ৫০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়। বাদীর পক্ষে আইনজীবী আইনুল হোসেন আদালতে মামলাটি দাখিল করেন।

এছাড়া নারী বিদ্বেষী বক্তব্যের অভিযোগ এনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মইনুল হোসেনের নামে মানহানি মামলা দায়ের করা হয়। এরইমধ্যে একাধিক মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ছেলে মইনুল হোসেন।

এ ঘটনায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে গত শনিবার বিবৃতি দেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৫৫ সম্পাদক ও বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক।

বিডি২৪লাইভ/এজ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: