‘অন্ধকার ঘরে নিয়ে সাজিদ আমাকে...’

প্রকাশিত: ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০২:৪২ পিএম

‘লিপস্টিক আন্ডার মাই বুরখা’ খ্যাত অভিনেত্রী অহনা কুমরা #মিটু আন্দোলন নিয়ে মুখ খুলেছেন। পরিচালক সাজিদ খানের বিরুদ্ধে ‘অশ্লীল আচরণের’ অভিযোগ এনেছেন তিনি।

গত মাসে চিত্রনির্মাতা সাজিদ খানের বিরুদ্ধে চার নারী হেনস্তার অভিযোগ আনেন। এক দশক আগে একটি ছবির শুটিং চলাকালে বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকার যৌন হেনস্তা করেছিলেন, সাবেক ভারত সুন্দরী তনুশ্রী দত্তর এমন অভিযোগের পরই বলিউডে শুরু হয় মি টু ঝড়। অহনা বলেন, যদিও সাজিদ তাঁকে স্পর্শ করেননি, তবে তাঁকে তাঁর বাড়িতে ডেকে নিয়ে আপত্তিকর প্রশ্ন করেছিলেন।

গত মাসে সাজিদ খানের বিরুদ্ধে অভিনেত্রী সালোনি চোপড়া, র‍্যাচেল হোয়াইট, মন্দানা করিমি ও সাংবাদিক কারিশমা উপাধ্যায় যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ অভিনেত্রী বিপাশা ব্সুও সাজিদের ‘আপত্তিকর আচরণ ও নোংরা কৌতুক’ করার স্বভাবের কথা বলেন।

সালোনি চোপড়ার অভিযোগের সূত্র ধরেই অহনা কুমরা জানান, সাজিদ খান তাঁর সঙ্গেও একই ব্যবহার করেছেন। অহনা আরো জানান, সাজিদের স্বভাব সম্পর্কে ধারণা ছিল তাঁর।

এক বছর আগে সাজিদ খানের সঙ্গে দেখা করেন অহনা। ‘আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করি আর তিনি আমার সঙ্গেও একই কাজ করেন, যা তিনি সালোনির সঙ্গে করেছেন বলে লিখে জানিয়েছে সালোনি। একই কাজ—ওর বাড়িতে গেলেই ও আপনাকে নিয়ে নিজের ঘরে যাবে, যে ঘরটা খুবই অন্ধকার। ও আপনাকে দেখাবে যেটা ও নিজে দেখছিল,’ বলেন অহনা।

অহনা কুমরা পরিষ্কার ভাষায় বলেন, সাজিদ তাঁর সঙ্গে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুই করেননি, কিন্তু নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে কথা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

সাজিদ তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর বাইরে না বসে অন্ধকার ঘরে নিয়ে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে সাজিদ বলেন, বাইরে তাঁর মা বসে আছেন এবং তাঁর যেন কোনো সমস্যা না হয়, তাই সে তাঁকে ঘরে নিয়ে এসেছে। এর পর ঘরের লাইট জ্বালাতে বলার পর সাজিদ লাইট জ্বেলে দেন।

সাজিদের স্বভাব জানতেন বলেই অহনা আগেভাগে তাঁকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তাঁর মা একজন পুলিশ কর্মকর্তা, যা সম্ভবত সাজিদকে দমিয়ে রেখেছিল।

“কিন্তু এরপরও সাজিদ আমাকে উদ্ভট প্রশ্ন করলেন, ‘যদি আমি তোমাকে ১০০ কোটি রুপি দিই, তবে কি তুমি কুকুরের সঙ্গে সঙ্গম করতে পারবে?’ তিনি আমাকে স্পর্শ করেননি,” বলেন অহনা।

এ ছাড়া অহনা জানান, সাজিদ একবার তাঁকে মেসেজ দিয়েছিলেন, ‘তোমাকে তো বিকিনিতেও হট দেখাবে!’

হেনস্তার অভিযোগ ওঠার পর সাজিদ খান ‘হাউসফুল-৪’ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। নানা পাটেকারও এ ছবি থেকে সরে যান, যাঁর বিরুদ্ধেও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে।

তবে সাজিদ খান টুইটারে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কথা এবং আমার পরিবার, হাউসফুল ৪-এর অভিনেতা ও প্রযোজকের ওপরে আসা চাপের কথা মাথায় রেখে যতক্ষণ পর্যন্ত না অভিযোগের সত্য বা মিথ্যা প্রমাণিত হয়, পরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়ানো আমার নৈতিক দায়িত্ব।’

সাক্ষাৎকারে অহনা আরো জানান, তারকা কাস্টিং ডিরেক্টর অনির্বাণ দাস ব্লা একবার তাঁকে হোটেলে নিয়ে ‘যৌন-সুবিধা’ পেতে চেয়েছিলেন। কিছুদিন আগে অনির্বাণ আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এর আগে তিনি একটি সুইসাইড নোট লিখে গণমাধ্যমগুলোতে পাঠিয়েছিলেন। 

“একটি পাঁচতারকা হোটেলে অনির্বাণ ব্লার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয় এবং বলেন, ‘এখানে একটি রুম আছে। চলো সমঝোতা করি।’ আমি ওই মিটিং থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম, কারণ অস্বস্তি হচ্ছিল। আমার সঙ্গে তিনি কাজটা ভালো করেননি। মেয়েদের সঙ্গে তাঁর ওটাই ‘স্বাভাবিক’ আচরণ। ওই দিন আমি ধাক্কাটা খাই,” বলেন অহনা।

যা হোক, অহনা বলেন, এই যে তিনি নাম উল্লেখ করে বলছেন, তা অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার ইচ্ছে থেকে নয়। ‘আমি অনির্বাণের চিঠি পড়েছি এবং খুশি এ কারণে যে, অন্তত তিনি এটা গ্রহণ করেছেন,’ বলেন এ অভিনেত্রী।

বিডি২৪লাইভ/এজে
 

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: