১৮ নভেম্বর শুরু বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৩৮ পিএম

আগামী রবিবার (১৮ নভেম্বর) থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শুরু হবে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে। 

প্রথমদিনে রাজশাহী বিভাগের চাপাইনবাবগঞ্জ ও রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) বেলা ১১ টায় দিকে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ তথ্য জানান।

রিজভী বলেন, বিগত ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি একতরফা ও প্রহসনমূলক নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে সরকারি দলকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে বর্তমান কমিশন। সরকার প্রতিনিয়ত আচরণবিধি ভঙ্গ করলেও কোন ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিরোধী দলকে যেখানে নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী প্রাপ্য কোন ধরণের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না, সেখানে সরকারি দলকে নানা ধরণের তথ্য দিয়ে সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে সরকারি দলের লোকজনদের অবাধ বিচরণ। নির্বাচন ভবনটি আজ আওয়ামী লীগের অফিসে পরিণত। আওয়ামী লীগের নির্দেশেই পরিচালিত হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের কিছু কর্মকর্তা।

বিএনপির এ নেতা বলেন, সরকারের নির্দেশ প্রতিফলনের জন্য নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত নির্বাচন ভবনে অফিস করছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান বাবলা। ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের সাথে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেই প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন এই মুস্তাফিজুর রহমান বাবলা। এরপর সর্বশেষ গত ৭ নভেম্বর ও ১৪ নভেম্বর দু’দফা আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে নির্বাচন কমিশনে যান বাবলা।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন মুস্তাফিজুর রহমান বাবলা। এই বাবলার ভয়ে তটস্থ নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন স্তরের মেধাবী কর্মকর্তারা। গোপনে তথ্য না দিলে তাদেরকে সরকারবিরোধী লোক বলে অভিযুক্ত করে বদলিসহ নানা ধরণের হুমকি-ধামকি দিয়ে থাকেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, গত এক দেড় বছরে এ ধরণের অসংখ্য ঘটনা নির্বাচন কমিশনের নজরে আনা হলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালউদ্দিন আহমদ নানাভাবে বাবলাদের সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন।

সাংবাদিকদের কয়েকটি ছবি দেখিয়ে রিজভী বলেন, এই বাবলা অনুমতি ছাড়া অবাধে যাতায়াত করেন কমিশনের কর্মকর্তাদের কক্ষে। ইসি’র গোপনীয় তথ্য আওয়ামী লীগের অফিসে পাচার করে থাকেন। নির্বাচন কমিশন থেকেও তাকে দেয়া হয় বিশেষ ধরণের সুবিধা। তবে কমিশনের কিছু সরকারি সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের সাথে রয়েছে তার বিশেষ সখ্যতা।

রিজভী বলেন, আমাদের কাছে এ ধরণের অকাট্য তথ্য প্রমাণ রয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহমেদ খানের সাথে তার সম্পর্ক খুবই ভালো। এই ফরহাদ আহমেদ খান সরকারের বিশেষ সুবিধাভোগী। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার আগের দিন পুলিশের আইজি-কে রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে সভা-সমাবেশ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে যে চিঠি দেয়া হয়েছিল সেই চিঠি স্বাক্ষরকারী এই ফরহাদ আহমেদ খান। ফরহাদ ও বাবলা যৌথভাবে আজ্ঞাবহ ইসি ও সরকারে নানা ধরণের এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত।

মন্ত্রীরা নির্বাচনী আচরণ বিধি মানছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার করা হলেও এখন পর্যন্ত মন্ত্রী-এমপিরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন, বক্তব্য রাখছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন প্রকার আচরণবিধি তৈরি হয়নি। পুরো নির্বাচন ব্যবস্থায় জগাখিচুড়ি অবস্থা বিরাজ করছে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন না ঘটিয়ে বরং সরকারবিরোধীদেরকে নানাভাবে কোণঠাসা করা হচ্ছে। 

অন্যদিকে, সরকারের আচরণবিধি ভঙ্গ করলেও নির্বাচন কমিশন থেকে কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বরং নির্বাচন কমিশনকে নানাভাবে ব্যবহার করছে সরকার। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আজ সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে বাবলার অবাধ বিচরণই সেটির প্রমাণ। সময় থাকতে আপনারা পরিবর্তন হন, তা না হলে জনগণ আপনাদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে।

দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশী তল্লাশীর নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত আছে। আমি পুলিশের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

বিডি২৪লাইভ/এএফকে/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: