সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে যারা মনোনয়ন পেতে পারেন

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৫:০৩ পিএম

নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ বেড়ে গেছে। গত কদিন ধরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রার্থীরা নিজনিজ এলাকা ছেড়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন।

এলাকায় নিজেদের স্ব-স্ব অবস্থান তুলে ধরে দলের হাইকমান্ডে লবিং গ্রুপিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে উভয় দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের দাবি, দলের জন্য নিবেদন প্রাণ, দলের দুঃসময়ের কান্ডারি, কর্মীবান্ধব ও সাধারণ মানুষের কাছে স্বজ্জন হিসেবে পরিচিত এমন ব্যক্তিকে যেন মনোনয়ন দেয়া হয়।

দলীয় সূত্র বলছে, আসনটিতে বিএনপি থেকে বিগত সময়ের চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান তালুকদার মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান সাংসদ গাজী ম. ম আমজাদ হোসেন মিলন এগিয়ে রয়েছেন। তবে তিনি কোন কারণে বঞ্চিত হলে নতুন মুখ আসছে। আসনটিতে বিএনপিতে থেকে আরো মোট ৬ জন তিনজন প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগ থেকে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীসহ মোট ২০ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন।

বিএনপি দলীয় সূত্রমতে, ১৯৯১ সাল থেকে পর পর চারবার আব্দুল মান্নান তালুকদার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। সংসদ সদস্য থাকাকালীন রায়গঞ্জ-তাড়াশ সলঙ্গায় রাস্তাঘাট ও স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়ন করেন। কিন্তু ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইসহাক হোসেন তালুকদারের কাছে হেরে যান। সেই থেকে আসনটি বিএনপির হাতছাড়া রয়েছে।

একাদশ নির্বাচনে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে নেতাকর্মীরা আব্দুল মান্নান তালুকদারের পাশে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। তিনিই আসনটিতে মনোনয়ন পাবেন বলে নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেছেন। তবে আসনটিতে আব্দুল মান্নান তালুকদার ছাড়াও তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর বিএনপি নেতা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আয়নুল হক ও বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম শিশির, আইনজীবী গোলাম মোস্তফা ও রাকিবুল আলম মিয়া অপু দলীয় মনোনয়ন উত্তোলনের পাশাপাশি নির্বাচনী মাঠে কাজ করছেন।

আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্র জানা যায়, ২০০৮ সাল থেকে আসনটি সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইসহাক হোসেন তালুকদারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের দখলে যায়। ২০১৪ সালের ৬ অক্টোবর তার মৃত্যুর পর বীর মুক্তিযোদ্ধা তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের কান্ডারি ম.ম আমজাদ হোসেন মিলন মনোনয়ন পান। বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় এমপি নির্বাচিত হলেও তিনি রায়গঞ্জ-তাড়াশের উন্নয়নে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রতিটি গ্রামে উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে। বিশেষ করে ডিজিটাল স্কুল ব্যবস্থা চালু করে উপজেলায় চমক সৃষ্টি করেছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রভাবশালী একজন প্রার্থী হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি ছাড়াও আসনটিতে প্রায় এক ডজনের নবীন-প্রবীণ প্রার্থী মাঠে নেমেছে।

এরই মধ্যে আসনটি থেকে আমজাদ হোসেন মিলন ছাড়াও আসনটিতে আরো ১৯ জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে শিল্পপতি ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী রয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা লুৎফর রহমান দিলু, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য প্রয়াত সাবেক এমপি ইসহাক হোসেন তালুকদারের ছেলে এ্যাড. ইমরুল হোসেন ইমন তালুকদার, রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার রায়, রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাদি আলমাজি জিন্নাহ্, সাধারণ সম্পাদক শারিফুল আলম শরিফ, সাংবাদিক ড. মিঠুন মোস্তাফিজ, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ হৃদয়, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হালিম খান দুলাল, স্বাচিপ নেতা ডা. আব্দুল আজিজ সরকার, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক, তাড়াশ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি, রায়গঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য গোলাম হোসেন সুমন সরকার, রায়গঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবিব সুজন সরকার, সাবেক যুবলীগ আলহাজ্ব সাইদুল ইসলাম খান পল, শাহ আলম চৌধুরী ও রাশিদা ভানু বেবি দলীয় মনোনয়ন পত্র কিনেছেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, এবার আসনটিতে মিলনই মনোনয়ন পাচ্ছেন নাকি নতুন কোন মুখ মনোনয়ন নিয়ে মাঠে নামবেন। তবে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদারের সাথে লড়াইয়ে মাঠে আমজাদ হোসেন মিলন পারফেক্ট বলে নেতাকর্মীরা মনে করছেন।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: