‘আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে সরকার’

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:২৭ পিএম

‘এ সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভুয়া নির্বাচন কমিশন ও সরকার মিলে দেশকে জবাই করেছে। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রকারী দল। তারা নানা কৌশলে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু যতই ষড়যন্ত্র করুক, বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যাবে না’ এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টায় কুমিল্লার চান্দিনার রেদওয়ান আহমদ ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাকি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বাস করবো। এই নির্বাচন নির্ধারণ করবে আমরা আমাদের স্বকীয়তা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবো কিনা। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে সরকার। তারা জোর করে ক্ষমতায় ঠিকে আছে। নির্বাচনের সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা অনৈতিক। সব রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করেছে। দেশবাসী এদের সব ষড়যন্ত্র জনগণ রুখে দেবে।’ ‘আপসহীন ও জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে জালিম সরকার আটকে রেখেছে। তিনি গণতন্ত্রের জন্য সব অন্যায় মাথা পেতে নিয়েছেন। গণতন্ত্র ও দেশবাসীর জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন।’ লাঠি আর মামলা করে জনগণকে ঠেকানো যাবে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারা নির্বাচনকে ভয় পায়। আপনারা খালেদা জিয়ার মনোনীত প্রার্থী রেদওয়ান আহমদকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। এ নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন বানাতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। জনগণকে বোকা ভাববেন না। জনগণের ঐক্যে সবকিছু ছারখার হয়ে যাবে। জনগণের কাছে কোনো চক্রান্তই কাজ হবে না। ৩০ ডিসেম্বর সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এখন টাকা আর আওয়ামী লীগ ছাড়া চাকরি পায় না। আমরা ক্ষমতায় গেলে চাকরি পাওয়ার আগ পর্যন্ত বেকার ভাতা চালু করবো। বিনা পয়সায় নাগরিকদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করবো। দাড়ি-টুপি পরলেই নাকি জঙ্গি, এটা তার ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। জনসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তফা খান সফরী ও মো. সালাহ্উদ্দিন ভুইয়া শিশির প্রমুখ। 

এরআগে  বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কুমিল্লার দাউদকান্দিতে সংক্ষিপ্ত পথসভায় এ ভোট প্রার্থনা করেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে বিএনপিকে জয়যুক্ত করুন।

এর আগে নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিতে ঢাকা থেকে কুমিল্লার পথে রওনা হন বিএনপি মহাসচিব। বুধবার সকাল ১০টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে সড়কপথে রওনা হন তিনি। যাত্রাপথে ফখরুলের বহরে তার নিজের একটি এবং নিরাপত্তাকর্মীদের দুটি গাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সংবাদকর্মীদের কয়েকটি গাড়ি। সায়েদাবাদ থেকে কাঁচপুর ব্রিজ পর্যন্ত পুলিশের একটি পিকআপ থাকলেও ব্রিজ পার হওয়ার পর পুলিশের গাড়িটি চলে যায়। কুমিল্লা পৌঁছে প্রথমে চান্দিনায় পথসভায় ভোট প্রার্থনা করেন ফখরুল। পরে সোয়াগাজীতে তার পথসভা করার কথা রয়েছে। কুমিল্লা-৭ আসনে রেদোয়ান আহমেদ এবং কুমিল্লা-১০ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী কারাবন্দী মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালাবেন ফখরুল। রেদোয়ান আহমেদ ২০-দলীয় জোটের শরিক এলডিপির মহাসচিব এবং মনিরুল হক চৌধুরী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য।

তিনি দাউদকান্দি ড. মোশাররফ হোসেনের নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখেন। জনসভায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটে। জনসভায় দলেদলে যোগদেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এসময় তিনি কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের ধানের শীষ প্রতীক প্রার্থী এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ ও কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের ধানের শীষ প্রতীক প্রার্থী কাজী মুজিবুল হক এর হাতে ধানের শীষ তুলে দিয়ে তাদের পক্ষে জনগণের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন।  জনসভায় কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন ভূইয়ার সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান বক্তার বক্তৃতা করেন এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রিয় বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল খান, চান্দিনা উপজেলা যুবদল সভাপতি কাজী সাখাওয়াত হোসেন সহ চান্দিনা উপজেলা বিএনপি ও এলডিপি’র নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: