ঐক্যফ্রন্ট প্রশ্নে বিএনপির কৌশল কী?

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:০০ এএম

কাফি কামাল: জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গঠিত ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ প্রশ্নে কী কৌশল নেবে বিএনপি? দেশের মানুষের হৃত মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারে ৭ দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্যকে সামনে রেখে গঠিত হয়েছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এই প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু প্রথম থেকেই এক ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্বের ভেতর দিয়ে এগিয়েছে ফ্রন্টের গঠন প্রক্রিয়া। জামায়াত প্রশ্নে প্রথমেই সরে গেছে বিকল্পধারা। প্রত্যক্ষভাবে না হলেও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবেই জামায়াত অংশ নিয়েছিল। আবার ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মাধ্যমে ২০ দলীয় জোটকে গুরুত্বহীন করে তোলার একটি অভিযোগ তুলেছিল শরিক দলগুলো।

২০ দলীয় জোটকে অটুট রেখে বিএনপি স্বতন্ত্রভাবে   ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য গড়েছিল। তাদের এ কৌশলটি নির্বাচনের আগে আপাতত কার্যকর হিসেবেও বিবেচিত হয়েছিল। নির্বাচনের আগে জামায়াত ইস্যুটি ফ্রন্টের শরিকদের কাছে ‘অস্বস্তির’ মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও নির্বাচনের পরপরই তা ফের সামনে চলে আসে। ক্ষমতাসীন দলের প্রচার ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের মুখে জামায়াত নিয়ে কিছু মন্তব্যও করেন ফ্রন্টের নেতারা।

সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, যে লক্ষ্য বা প্রত্যাশা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল ঐক্যফ্রন্ট বাস্তবে তার ন্যূনতম কার্যকর হয়নি এই প্ল্যাটফর্ম। 

ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের মধ্যে যেমন অস্বস্তির মাত্রা বেড়েছে, তেমনি ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিরোধিতা জমাট বেঁধেছে খোদ বিএনপিসহ ২০ দলে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারক ফোরামের বৈঠকে সদস্যরা এ নিয়ে তুমুল যুক্তিতর্কে মেতেছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় অংশ নেয়নি বিএনপি। ফ্রন্টের নেতারা বিষয়টিকে যানজটের অজুহাতে ধামাচাপা দিতে চাইলেও বিএনপি’র সংশ্লিষ্ট নেতাই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বৈঠকের কিছুই জানতেন না তিনি। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে। ঐক্যফ্রন্ট প্রশ্নে বিএনপি’র কৌশল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে কৌতূহল। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপি’র তরফে এ ব্যাপারে স্পষ্ট ও নেতিবাচক কোনো বক্তব্য আসেনি। বরং দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুইটি আলোচনার সভায় দেয়া বক্তব্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপর জোর দিয়েছেন। 

বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বেশকিছু কারণে বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে দেখা দিয়েছে টানাপড়েন। প্রথমত, জামায়াত ইস্যু। দ্বিতীয়ত, নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথ নিয়ে বিএনপি ও গণফোরামের দ্বিমত। তৃতীয়ত, নির্বাচন-পরবর্তী রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ। সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতা করে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় নিবাচন বর্জন করেছিল বিএনপিসহ ২০ দল। দীর্ঘদিন ধরে এ ইস্যুতে আন্দোলন করতে গিয়ে সরকারের অব্যাহত কঠোর দমনের শিকার হয়ে রাজনৈতিক বিপর্যয়ে পড়ে বিএনপি। এমন পরিস্থিতিতে বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে সরকারকে চাপে ফেলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আদায় করতে চেয়েছিল বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তোলা হয়েছিল। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই দফা সংলাপ করলেও ন্যূনতম কোনো দাবিই আদায় করতে পারেনি। অবশেষে ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য রক্ষার স্বার্থে ও আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনী বাজি ধরেছিল বিএনপি। কোনো দাবি আদায় ছাড়া, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে খোদ বিএনপিতেই দ্বিমত ছিল। 

কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা নির্বাচনে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা, নির্বাচনী পরিবেশ এবং সাজানো ফলাফল নিয়ে তাৎক্ষণিক কার্যকর কোনো প্রতিবাদই গড়তে পারেননি। বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিটির ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নিষ্ক্রিয়তায় দলটির তৃণমূল বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা প্রকাশ্যে এ নিয়ে ফ্রন্ট ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতাদের সমালোচনা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে এ ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে দ্বিমতকারীরা মুখর হয়েছেন বিএনপি’র দলীয় ফোরামে। ফ্রন্টের নেতারা জানান, মূলত জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে জোট বেঁধে পথচলা, না চলার ইস্যুতেই সৃষ্টি হয়েছে এ অচলাবস্থার। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের একটি সাক্ষাৎকার ও একটি সংবাদ সম্মেলন কেন্দ্র করে জামায়াত নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়। জোটের কয়েকজন নেতা জানান, জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে একসঙ্গে পথ চলতে ফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন আপত্তি জানানোর পর থেকেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অভ্যন্তরে সূত্রপাত ঘটে টানাপোড়েনের। সমপ্রতি গণফোরামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন- ‘তড়িঘড়ি করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করতে গিয়ে কিছু ভুল হয়েছে। জোট টিকিয়ে রাখতে হলে এখন সময় এসেছে এই ভুল সংশোধন করার। জামায়াতে ইসলামীকে আসন ছাড় দেয়ার বিষয়টি আমি জানতাম না। 

আমাকে জানানো হয়নি। আমি জানলে এটা হতে দিতাম না। আমি জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে রাজনীতি করব না। ভবিষ্যতেও তাদের নিয়ে রাজনীতি করার প্রশ্নই ওঠে না। জামায়াতে ইসলামীকে ছেড়ে দেয়ার কথা বিএনপিকে এখন বলা যেতেই পারে।’ তিনি মূলত জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও আসন ভাগাভাগির বিষয়টি ইঙ্গিত করেই এমন কথা বলেন। পরদিনই বিএনপি মহাসচিব ও ফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন- ‘এটি তার (ড. কামাল হোসেন) নিজস্ব বক্তব্য। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বক্তব্য এটা না।’ সূত্র জানায়, কেবল জামায়াতের সঙ্গে জোট ভেঙে দেয়া নয়- জামায়াতের কোনো নেতাকে বিএনপি’র রাজনীতিতে যুক্ত না করা ও যারা ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছে তাদের বের করে দেয়া এবং ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়ী ঐক্যফ্রন্টের সদস্যদের শপথ নেয়ার ব্যাপারে বিএনপিকে দ্রুত একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাপ দিচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি নেতারা বলছেন, জামায়াত ছাড়ার শর্তজুড়ে দিয়ে বিএনপি’র চরম দুঃসময়ে আরও বিপাকে ফেলেছেন ড. কামাল হোসেন। 

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিজয়ী জামায়াত নেতাদের দল থেকে বাদ দিতে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি ড. কামাল হোসেনকে আহ্বান জানানোর অনুরোধ করেন বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এমনকি তিনি জামায়াতের নিবন্ধন প্রশ্নে উচ্চ আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।   

৩০শে ডিসেম্বর দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনের ভূমিকা এবং সার্বিক পরিবেশ ছিল বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিকূলে। ফ্রন্টের নেতারাও এ ব্যাপারে সরকারের সমালোচনায় সোচ্চার। কিন্তু ফ্রন্টের শরিক দল গণফোরামের একটি নীতিগত অবস্থান নিয়ে চূড়ান্ত আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে ঐক্যফ্রন্টে। ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে ৮টি আসনে জয় পেয়েছেন ফ্রন্টের প্রার্থীরা। যাদের মধ্যে ছয়জন বিএনপি ও দুইজন গণফোরামের। বিএনপিসহ ফ্রন্টের নেতারা এ ফলাফলকে কোনোভাবেই মেনে নেননি। বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের অন্য শরিক দলের শীর্ষ নেতারা যেখানে ৮ এমপি’র শপথ না নেয়ার পক্ষে প্রকাশ্যে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন সেখানে সংসদে যাওয়ার পক্ষে গণফোরাম। ইতিমধ্যে তারা ইঙ্গিতও দিয়েছেন এ ব্যাপারে। গণফোরামের এমন নীতিগত অবস্থান ও ইঙ্গিতকে দেশের মানুষের সঙ্গে বেঈমানীর লক্ষণ হিসেবে দেখছেন বিএনপি। যদিও এখন পর্যন্ত কেউ শপথ নেননি, কিন্তু শপথ নেয়ার সময়ও এখনো শেষ হয়নি। বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্দেহ শেষমুহূর্তে গণফোরাম দলীয় দুই এমপি শপথ নিতে পারেন।  

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন ও দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠে বিএনপি স্থায়ী কমিটির মঙ্গলবারের বৈঠকে। নীতি-নির্ধারক ফোরামের অন্তত দুইজন সদস্য হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সাত দফা দাবির ন্যূনতম পূরণ না হওয়ার পর নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হয়নি। নানা যুক্তিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সেটা বাস্তবে রূপ দেয়া যায়নি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বিএনপিসহ দেশবাসীর যে প্রত্যাশা ছিল তারা তা পূরণ করতে পারেননি। নির্বাচনের আগের রাত ও নির্বাচনের দিনে অনিয়মসহ নির্বাচনের প্রতিকূল পরিবেশের বিষয়গুলো ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারেননি। এ সময় ঐক্যফ্রন্ট ইস্যুতে তোপের মুখে পড়েন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন। 
বৃহস্পতিবার বিকালে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে বিএনপি’র কোনো প্রতিনিধি অংশ নেননি। 

তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টুসহ ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেন, দলীয় বৈঠক ও অসুস্থতার কারণে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। ফলে বৈঠকে আসার কথা ছিল দলটির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খানের। কিন্তু তারাও যানজটে আটকা পড়ে বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। হয়তো পরবর্তী বৈঠকে আমরা একসঙ্গে বসবো। কিন্তু রাতে এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব অংশ নেন। তিনিই বলতে পারবেন। ঐক্যফ্রন্ট থেকে তার ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন- ‘আমি সঠিক জানি না।’ অন্যদিকে হাইকোর্টে আইনজীবীদের যে বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের অংশ নেয়ার কথা ছিল সেখানেও যাননি তিনি। উল্লেখ্য, ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর বৃহস্পতিবারের বৈঠকটিই ছিল প্রথম যেখানে বিএনপি’র প্রতিনিধি ছিল না। 

এ ঘটনাকে ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল আগেরদিন বুধবার। বিএনপি নেতাদের অনুরোধে একদিন পিছিয়ে বৃস্পতিবার নির্ধারণ করা হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত বিএনপি অংশ নেয়নি এবং অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে পরবর্তী বৈঠকগুলোয়ও বিএনপি আর অংশ নেবে কিনা, তা নিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ৬ই ফেব্রুয়ারি একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ফল নিয়ে রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অনুষ্ঠিতব্য ‘জাতীয় সংলাপ’-এর ভবিষ্যতও পড়েছে অনিশ্চয়তার মুখে। তবে নানামুখী দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হলেও দুইপক্ষই বলছে ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য ভেঙে যাওয়ার মতো চূড়ান্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কারণ ফ্রন্টের অন্য শরিকদের কাছে এখনও জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি’র স্বতন্ত্র জোটরক্ষার বিষয়টি গ্রহণযোগ্যতা হারায়নি। 

বৃহস্পতিবার স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন- ‘জামায়াত ইস্যুটি পুরনো হয়ে গেছে। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কখনও জামায়াত ছিল না, থাকবেও না।’ আ স ম রব বলেছেন- ‘নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল না। এই নির্বাচন বাতিলের দাবিতে ঐক্যফ্রন্ট আন্দোলন চালিয়ে যাবে। আন্দোলনে সব মানুষের অংশগ্রহণের অংশ হিসেবে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন, সারাদেশে নাগরিক কমিটি গঠন ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হবে।’ এদিকে বিএনপি’র কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতা জানান, জাতীয় স্বার্থে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে রাজনীতিতে যে ঐক্য গড়ে উঠেছে সেটাকে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় না বিএনপি। তাই ভুল-ভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে বাস্তবতা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঐক্যকে আরও জোরদার করার মাধ্যমে তারা সামনের দিনে পথ চলতে চায়। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: