শিক্ষকের এ কেমন আচরণ?

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০৭:২৬ পিএম

নীলফামারীর ডোমারে অর্থাভাবে দু’বোনের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

ডোমার পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন পেশায় একজন রং মিস্ত্রি। বাস্তভিটা ছাড়া তার কোন জায়গা জমি নেই। প্রতিদিন হাজিরা পায় ৩শত টাকা। এ টাকায় ৩ মেয়ে এক ছেলেসহ ৬ জনের সংসারে টানা পোড়েন লেগেই থাকে। তার উপর দুই মেয়ে আন্নি আকতার (১৬) ও পান্না আকতার (১৪) পড়ালেখার খরচ।

দু’জনেই ডোমার বালিকা বিদ্যা নিকেতনের শিক্ষার্থী। একই পরিবারের দুজন বিদ্যালয়ে পড়লেও তাদের কোন হাফ ফ্রি বা ফুল ফ্রি নেই। অথচ অনেক বিত্তবান এবং সচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থী হাফ ফ্রি ও ফুল ফ্রির আওতায় রয়েছে। এবারে আন্নি আকতার ৯ম ও পান্না আকতার ৮ম শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে। অনেক কষ্টে তাদের পরীক্ষার ফি জমা দিলেও বিদ্যালয়ের মাসিক বেতন দিতে না পারায় পরীক্ষায় উর্ত্তিনের ফলাফলও জানায়নি প্রধান শিক্ষক।

অবশেষে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে আন্নি আকতারের এক বছরের বেতন মওকুফ করে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানোর অপরাধে প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের সাথে বিমাতা সুলভ আচরন করে।

অর্থাভাবে তারা এ যাবত বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি। তাই নতুন শিক্ষা বর্ষের ২০দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তারা সরকারের বিনা মূল্যের বই হাতে পায়নি। ওই দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মাতা পারুল বেগম ১২শত টাকা নিয়ে বিদ্যালয়ে যায় ভর্তি করাতে কিন্তু প্রধান শিক্ষক তাদের ভর্তি করেনি। অশ্রুশিক্ত কন্ঠে পারুল বেগম জানান, প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ওই টাকায় তাদের ভর্তি হবে না। তাদের নিয়ে গিয়ে অন্য কোথাও ভর্তি করে দেন নতুবা তাদের বিয়ে দিয়ে দেন। বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে তাদের পড়া লেখা চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে।

প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায় জানান, প্রতিজনের ভর্তি ১২শত টাকা। গরীব শিক্ষার্থীদের ফান্ডের বিষয়টি দেখতে হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাকেরিনা বেগম জানান, গরীব ছাত্র/ছাত্রীদের পড়ালেখার জন্য বিদ্যালয়ে একটি ফান্ড রয়েছে। প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায় কথা শুনেন না। আন্নি এবং পান্নার ব্যাপারে আমি বহুবার ফোন করেছি কিন্তু তিনি কোন পদক্ষেপই নেননি। এটা দুঃখজনক।

বিডি২৪লাইভ/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: