আ’লীগ কোনো দিনই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি: ফখরুল

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ০৫:২৪ পিএম

আওয়ামী লীগ সরকার কোনো দিনই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সোমবার (২১ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন লালমনিরহাটের রাজপুর ইউনিয়নের পাগলারহাট কেন্দ্রে বিএনপির পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক তোজাম্মেল হকের নিহতের ঘটনায় এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের কাছে মুখ্য বিষয় হচ্ছে তারা তাদের ভোটের অধিকার হারিয়েছে। তাদের ভোটের অধিকার ডাকাতি করা হয়েছে। এ সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না।

নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত তোজাম্মেল হক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাকে নির্বাচনের দিন নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ কোনো দিন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। ভবিষ্যতেও তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে না।

একাদশ নির্বাচনে প্রশাসনকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ নির্বাচন জনগণ মেনে নেয়নি। আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে নামাতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে এই ক্ষমতাসীন সরকারকে সরিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোট দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি আরও বলেন, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের নামে প্রায় ৯৮ হাজার মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি ২৬ লাখ।

প্রতিবাদ সভায় ঐক্যফ্রন্ট নেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, তোজাম্মেলের কী অপরাধ ছিল। তার অপরাধ তিনি ধানের শীষের লোক ছিলেন। তিনি ধানের শীষে ভোট দিতে এসেছিলেন বলে আওয়ামী লীগের লোকেরা তাকে হত্যা করেছে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, এ রকম নির্বাচন পৃথিবীর কোথাও হয়নি। জনগণ এই নির্বাচন মেনে নেয়নি। তাই এই নির্বাচন বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ নেই। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে নামাতে হবে।

এর আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা নিহত বিএনপি নেতার কবর জিয়ারত করেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। এ সময় তারা নিহতের পরিবারের সদস্যদের অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। এছাড়াও নির্বাচনের দিন আহত বিএনপি কর্মী পূর্ব খলাইঘাট এলাকার বাসিন্দা আব্বাস, কবির, তফিজ, সামিউর, হারুন, শাহ আলম, দেলওয়ার ও শাহ জাহানের হাতেও অর্থ সহায়তা তুলে দেয়া হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সকাল ৮টার দিকে তোজাম্মেল হকসহ কয়েকজন ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছিলেন।

পথে রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন তার বাড়ির সামনে তাদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেন।

এতে দুপক্ষের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তোজাম্মেল হককে মারপিট ও পেটে ছুরি মারা হয়। পরে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান।

এ ঘটনায় ১ জানুয়ারি লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন নিহতের ছেলে মো. মোস্তফা।

আসামিরা হলেন ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন, মোজাম্মেল হোসেন মাস্টার, আঙুর মিয়া ও তার ভাই লেবু মিয়া, সিদ্দিক আলী, শাহীন, মহসিন আলী, জাহাঙ্গীর আলম ও মজি।

পরে আদালতের নির্দেশে সদর থানায় ৯ জানুয়ারি মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: