রিকশাচালক থেকে রাতারাতি ৩৪ কোম্পানির মালিক!

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:৫৪ পিএম

নাম কৃষ্ণপ্রসাদ। তিনি স্বপ্ন দেখছিলেন নতুন একটি রিকশা কেনার। কিন্তু, যার রিকশা কেনারই সামর্থ্য নেই, স্বপ্ন দেখেন নতুন একটি রিকশা কিনবেন। আর সেই রিকশাচালক কৃষ্ণপ্রসাদ কিনা রাতারাতি ৩৪টি কম্পানির প্রধান বনে গেছেন। এত বড় খবর শোনার পরেও তিনি অখুশি।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর থানার প্রভাসনগরের গুরুগার্ডেন এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।

রিকশাচালক কৃষ্ণপ্রসাদের বাড়িতে ভারত সরকারের রেজিস্ট্রার অব কম্পানিজের রাজ্য শাখা থেকে একটি চিঠি এসেছিল। ওই চিঠি অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ২০ মার্চের মধ্যে মোট ৩৪টি কম্পানির ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব নেন কৃষ্ণপ্রসাদ। কম্পানির আইন অনুযায়ী একসঙ্গে ২০টির বেশি সংস্থার প্রধান পদে থাকার জন্য আইন লঙ্ঘনকারী হিসেবে সতর্ক করে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে কৃষ্ণপ্রসাদকে।

ওই চিঠি হাতে পাওয়ার ১ মাসের মধ্যে পছন্দ মতো ২০টি কম্পানিকে বেছে নিয়ে বাকি কম্পানিগুলো থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে হবে। এটা না করলে ভারত সরকারের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয় আইন লঙ্ঘনকারী হিসেবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

এমন ঘটনায় রিকশাচালক কৃষ্ণপ্রসাদ জানান, আমরা খুব গরিব। এলাকার এক মালিকের কাছ থেকে রিকশা ভাড়া নিয়ে কোনোমতে দিন পার করি। এসবের মানেই তো আমি বুঝতে পারছি না। বিস্ময়কর এই ঘটনার পেছনে এলাকার আরেক বাসিন্দা পবন মণ্ডলের হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেছেন কৃষ্ণপ্রসাদ।

পরে এ বিষয়টি শ্রীরামপুর থানাতেও জানিয়েছেন রিকশাচালক কৃষ্ণপ্রসাদ।

কৃষ্ণপ্রসাদের কথায়, রিকশা চালানোর সূত্রে পবন মণ্ডলের সঙ্গে কয়েক বছর আগে পরিচয় হয় তার। তখন কৃষ্ণপ্রসাদের রিকশায় যাতায়াত করতেন পবন। বছর তিনেক আগে পবন কৃষ্ণপ্রসাদকে নিজস্ব রিকশা করে দেয়ার জন্য ব্যাংক ঋণের কথা বলেন। তারপর সেই ব্যাংক ঋণ পাওয়ার জন্য চেয়ে নেন কৃষ্ণপ্রসাদের ভোটার কার্ড।

তিনি আরও জানান, কিছুদিন পরে ব্যাংক ঋণের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করানোর জন্য কৃষ্ণপ্রসাদকে কলকাতাতেও নিয়ে যান পবন। এরপর থেকে মাঝে মাঝে কৃষ্ণপ্রসাদের ঠিকানায় কাগজপত্র এলে তা নিয়ে যেতেন পবন। সেই সময় তিনি সামান্য কিছু অর্থও দিয়েছিলেন কৃষ্ণপ্রসাদের হাতে।

কৃষ্ণপ্রসাদের এই অভিযোগে প্রতারক পবন মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, গ্রেফতার পবন মণ্ডল কলকাতার বড়বাজারে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। ওই সংস্থারই বিভিন্ন কম্পানির প্রধান পদে বসিয়েছেন সহজ সরল রিকশাচালক কৃষ্ণপ্রসাদের নাম।

ইতোমধ্যে পুলিশ খতিয়ে দেখছে, এভাবে বড়সড় ব্যাংক জালিয়াতি কৃষ্ণপ্রসাদের নামে করা হয়েছে কিনা।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: