বেআইনিভাবে গড়ে উঠছে ইটভাটা

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০৭:৪৭ পিএম

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলী জমির মাঠের মাটি কেটে মাটি নেওয়া হচ্ছে ইটভাটা গুলোতে। জ্বালানীতে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠের লাকড়ি।

দুটি উপজেলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে জনবসতি এলাকায় বেআইনিভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ১৫টি ইটভাটা। এর মধ্যে ইট তৈরিতে একটি ভাটায় নদীতীর ও ফসলি জমির মাটি এবং অন্যগুলোতে ফসলি জমির মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যান্য ভাটাগুলোও নদীতীরের মাটি কেটে নেওয়া শুরু করতে পারে বলে এলাকাবাসীর আশঙ্কা।

ভাটাগুলো পরিবেশদূষণও ঘটাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন এসব জেনেও অভিযুক্ত ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

বাহুবল উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছেন ভাটা মালিকগন। বিশেষ করে মিরপুর এলাকার ইট ভাটায় ফসলী জমির মাটি ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া নবীগঞ্জের আউশকান্দি,দেবপাড়া কুর্শি ইউনিয়নের ইট ভাটাতে ফসলী জমির মাটি দেদারছে ব্যবহার হচ্ছে।

জানা গেছে, নবীগঞ্জে বেশির ভাগ ইটভাটারই পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বৈধতা নেই। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রতিবছরই ফসলি জমি ও নদীর মাটি দিয়ে চলে এসব ইটভাটায় ইট তৈরি। ভাটায় ইট পোড়ানোয় ব্যবহার করা হচ্ছে গাছের লাকড়ি।

গতকাল বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা গেছে, মীরপুর ও দেবপাড়া ইউপির ইটভাটায় ৫০-৬০ ফুট চিমনি দিয়ে ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। বরাক, শাকিল, ডায়মন্ডসহ প্রতিটি ইটভাটায় ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নদীর তীর ও ফসলি জমির মাটি।

পাশের বরাক ইটভাটায় ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী ইট পোড়াতে জ্বালানি হিসেবে কোনো গাছপালা ব্যবহার নিষেধ রয়েছে।

কিন্তু এই এলাকার চারটি ভাটায় ইট পোড়াতে কয়লার পাশাপাশি বাঁশ ও গাছের গুঁড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। ইটভাটাসহ অন্য ভাটাগুলোর ছাই বা জ্বালানির কণা গিয়ে পড়ছে বসতবাড়িতে এবং গ্রামের ভিতরে ইটভাটায় ধূয়ায় পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে।

এদিকে মাটি, গাছের গুঁড়ি ও বিক্রীত ইট পরিবহনের কারণে এই অঞ্চলের পাকা ও আধাপাকা সড়কগুলো বারবার সংস্কারের পরও সারা বছরই ক্ষতবিক্ষত থাকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে, এক বছর আগে আমুকোনা থেকে গোড়ারাই পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়ক ভেঙ্গে মেঠো পথে রুপান্তর হয়েছে। কিন্তু বরাক ইটভাটার ভারী যানবাহন চলাচল করায় রাস্তাটি নষ্ট হয়ে গেছে।

তা ছাড়া এলাকার রাস্তাগুলো বেশ সংকীর্ণ। তাই প্রতিনিয়ত রাস্তায় এসব ইটভাটার মালপত্র নিয়ে যানবাহন চলাচল করায় যাত্রী পরিবহনের গাড়িগুলোকে চলতে বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়।

বরাক ইটভাটার মালিক ফারুক আহমদ বলেন, ফসলের মাটি তিনি ক্রয় করে সেই মাটি ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। তিনি কোন অবৈধ ভাবে মাটি নেননি।

দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাবেদ আলী বলেন, মাটি কাটার বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে বিষয়টি দেখা হবে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসান বলেন, খোঁজ নিয়ে শিগগিরই ইটভাটাগুলোর অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: