স্ট্রোক কেন হয় জানেন?

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা ব্রেইন স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর হার বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বেশি। কিন্তু অনেকে ব্রেইন স্ট্রোক করলেও মনে করেন হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিয়ে আক্রান্ত অংশের কোষ নষ্ট হওয়াকে স্ট্রোক বা ব্রেন স্ট্রোক বলে আখ্যায়িত করা হয়। বর্তমান বিশ্বে স্ট্রোক মানুষের মৃত্যুর চতুর্থ কারণ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।
স্ট্রোক হওয়ার কারণ:
১. যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তাদেরও স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি।
২. মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। বিশেষ করে অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড প্রেশার থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
৩. স্ট্রেস ও ডিপ্রেশন সহ অন্যান্য মানসিক সমস্যা থাকলেও এই সমস্যার সম্ভাবনা থাকে।
৪. যারা দিনভর বসে কাজ করেন, হাঁটা চলা সহ কায়িক শ্রম নেই বললেই চলে তাঁদের এই রোগের ঝুঁকি অন্যদের থেকে বেশি।
৫. পুষ্টিকর খাবারের পরিবর্তে ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড বেশি খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
৬. ধূমপানের ফলে অন্যান্য অনেক অসুখের সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকের ঝুকিও অনেকটাই বেড়ে যায়।
৭. নিয়মিত অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
৮. যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েট বা এক্সারসাইজ করেন না, তাঁদেরও স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
৯. হার্টের অসুখ থাকলে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।
স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে যা যা করনীয়:
১. ওজন কমাতে সুষম খাবারের উপরেই ভরসা রাখুন। ডায়েটে রাখুন পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি ও ফল।
২. সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন আধ-ঘণ্টা করে দ্রুত পা চালিয়ে হাঁটতে হবে।
৩. ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
৪. প্রতিদিন অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে।
৫. ব্লাড প্রেশার আর সুগার থাকলে তা তো নিয়ম মেনে নিয়ন্ত্রণে রেখে চলতে হবে।
৬. ভুঁড়ি বাড়তে দেওয়া চলবে না।
৭. শরীরচর্চার সময় খেয়াল রাখতে হবে তা যেন অত্যাধিক পরিশ্রমসাধ্য বা ক্লান্তিকর না হয়ে ওঠে।
৭. যদি আচমকা হাত, পা বা শরীরের কোনও একটা দিক অবশ, অসাড় লাগে বা চোখে দেখতে বা কথা বলতে অসুবিধে হয় অথবা ঢোক গিলতে কষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দ্রুত চিকিত্সকের শরণাপন্ন হন।
চিকিৎসা : মিনি স্ট্রোক ছাড়া ইসকেমিক ও হিমোরজিক স্ট্রোকে রোগীদের তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অথবা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া অতীব জরুরি। রোগী অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপে বিদ্যমান থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য চিকিৎসা প্রদান করা জরুরি।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য ইনসুলিন জাতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা শ্রেয়। রোগীকে দীর্ঘমেয়াদি অথবা তা থেকে মুক্ত রাখতে প্রদাহ প্রতিরোধক চিকিৎসা, স্ট্রোকের অনেক রোগী খাদ্য গ্রহণে অসমর্থ হয়ে পড়ে, তাদের ইনজেকশন বা নাকে নল দিয়ে খাদ্য গ্রহণের ব্যবস্থা করা, এমআরআই বা সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে স্ট্রোকের ধরন নির্ধারণ করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এক্ষেত্রে, হার্ট ব্লক ও হার্টে ভাল্ব থাকা রোগীদের হার্টের চিকিৎসা গ্রহণ জরুরি। তাই এসব বিষয়ে আমাদের অবহেলা করা ঠিক নয়। মনে রাখতে হবে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো যায়। অন্যথায় জটিলতা বাড়ে। কথায় আছে প্রতিকার নয়, এসব ক্ষেত্রে প্রতিরোধ উত্তম।
বিডি২৪লাইভ/এসএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: