অন্য রকম ফাঁদ!

প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:৪৯ এএম

কুড়িগ্রামের ছেলে তামিম (ছদ্মনাম)। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় সে। তাই পরিবারের দায়িত্ব বয়স কিছুটা বাড়ার সাথে সাথেই কাঁধে চাপে তামিমের। ২০০৬ সালে ঢাকায় আসে তামিম। তার এক আত্মীয়ের সুবাধে সে একটা চাকরি নেন রেস্টুরেন্টে। পাশাপাশি চলতে থাকে পড়াশুনাও। কাজের পাশাপাশি নিয়মিত পত্রিকা পড়ত তামিম।

এই সুবাধে একদিন একটি বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে তামিমের। মাত্র সাতলক্ষ টাকায় কানাডার রেস্টুরেন্ট এ কাজের সুযোগ। অফারটি পছন্দ হয় তামিমের।

তাই আর চার-ছয় না ভেবে তথনই ওই নম্বরে ফোন করে তামিম। ওপাশ থেকে ফোন রিসিভ করেন এক তরুণী। তিনি তামিমকে বলেন সে, যেন অফিসে গিয়ে কথা বলেন। কারণ এসব কথা সরাসরি বললেই নাকি ভালো বোঝা যায়!

তারপর তামিমও পরদিন সময় পেয়ে ছুটে যান পত্রিকায় পাওয়া ঠিকানায়। দেখা হয় সেই তরুণীর সাথে।

নিজের পরিচয় দিয়ে বিস্তারিত জানায় সে। বলেন, তামিম যদি বিদেশ যেতে চান তাহলে তাকে প্রথমে দশহাজার টাকা দিয়ে একটি ফাইল ওপেন করতে হবে। তারপর ওই প্রতিষ্ঠান সময় নিবে তামিমের কাছ থেকে সে উপযুক্ত কিনা দেখার জন্য। এরপর উপযুক্ত নির্বাচিত হলে দিতে হবে আরও ত্রিশ হাজার টাকা। যেই টাকা দিয়ে করা হবে একটি বিট। এরপর ভিসা হওয়ার পর সাতলক্ষ টাকা দিতে হবে।

তামিম জানায় তার পক্ষে সাতলক্ষ টাকা দেওয়া অসম্ভব। তার পরিবার কখনোই এতো টাকা দিতে পারবে না। এরপর তামিমের অনুরোধে রাজি হন তারা। বলেন আগামী ছয় মাসের মধ্যেই ভিসা পাবে তামিম। ভিসা পেলে দিতে হবে তিন লক্ষ বিশ হাজার টাকা। বাকি টাকা পরিশোধ করতে হবে কানাডা গিয়ে।

এরপর এক সপ্তাহ সময় নেন তামিম। ছুটে যান তিনি যেই রেস্টুরেন্টে কাজ করেন তার মালিকের কাছে। অগ্রিম চান তার বেতনের ১০হাজার টাকা। মালিক টাকাটা দিলে তামিম ওই অসিফে গিয়ে একটি নগদ দশহাজার টাকা দিয়ে একটি ফাইল খুলেন।

কিন্তু টাকা দেওয়ার সময় জানানো হয় তামিম যদি পরে আর টাকা না দেয় বা আর কোন আগ্রহ না দেখায় এ বিষয়ে তাহলে সে আর এই দশহাজার টাকা ফেরত পাবেন না। এই দশ হাজার টাকা অফেরতযোগ্য।

এরপর কিছুদিন গেলে ফোন আসে তামিমের কাছে। জানানো হয় তিনি কানাডা যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে, আগামী সাত দিনের মধ্যে তাকে ত্রিশ হাজার টাকা দিতে হবে। তামিম তখন অনেক কষ্টে তার বাড়ি থেকে ত্রিশ হাজার টাকা সংগ্রহ করে এবং ওই অফিসে গিয়ে জমা দিয়ে আসে। এরপর কয়েকমাস গেলে দিনের পর দিন ফোন দিলেও কোন সুরাহা পাচ্ছিল না তামিম। এরই মধ্যে হঠাৎ তামিম যেই রেস্টুরেন্টে কাজ করতো তা বন্ধ হয়ে যায়।

এমতাবস্থায় তামিম পরে নিজের দেওয়া ত্রিশ হাজার টাকা ফেরতের জন্য ছুটে যান ওই অফিসে। তামিমকে জানানো হয় কয়েকদিন পর তার টাকা তাকে ফেরত দেওয়া হবে। এরপর তামিম ফোন দিলেও তার ফোন কেউ তুলতো না। এক পর্যায়ে তামিম ওই অফিসে ছুটে যায় এবং গিয়ে দেখেন সেই অফিসে টু-লেট ঝোলানো। নেই কোন অফিস!

(এই লেখাটি বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ফাঁদ অনুষ্ঠানের অবলম্বনে করা)

বিডি২৪লাইভ/এইচকে/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: