চিকিৎসক স্বামীর আত্মহত্যা: বিভিন্ন যুবকের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার স্ত্রীর

প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:১৮ এএম

চিকিৎসক স্বামীকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে আটক তানজিলা হক মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন যুবকের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করলেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাচ্ছে মিতু। 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো: মিজানুর রহমান শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন।

অপরদিকে নিহত আকাশের পরিবারের পক্ষ থেকে তানজিলা হক মিতু, তার বাবা-মা, ভাইবোন এবং দুই প্রেমিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে নগরীর চান্দগাঁও থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।

অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো: মিজানুর রহমান বলেন, ডা: আকাশের আত্মহত্যায় তার ফেসবুক আইডিতে স্ত্রীকে জড়িয়ে স্ট্যাটাস এবং আকাশের পরিবারের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে মিতুকে আটক করা হয়েছে। আকাশের আত্মহত্যায় মিতুর কোনো বন্ধুর প্ররোচনা আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ। যদি প্ররোচণার ব্যাপারে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার নন্দনকানন এলাকার তার খালতো ভাইয়ের বাসা থেকে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট মিতুকে আটক করে।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, আটকের পর মিতুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরকীয়া এবং স্বামীর সাথে দাম্পত্য কলহ নিয়ে মিতু কিছু কিছু বিষয় স্বীকার করেছে। কিছু বিষয় এড়িয়ে গেছেন।

পুলিশ জানায়, মোস্তফা মোরশেদ আকাশের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পুলিশ জব্দ করেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে আকাশ তার ফেসবুকে স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ ও বিভিন্ন ছবি সংবলিত যে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন সেটি ডিলিট করে দেয়া হয়েছে।

এ দিকে মিতুকে আটকের ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিএমপি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রশ্ন রাখেন আকাশের মৃত্যুর বেশ কয়েক ঘণ্টা পর তার ফেসবুকের শেষ স্ট্যাটাসগুলো ডিলিট করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ কিছু জানে নাকি? উত্তরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো: মিজানুর রহমান বলেন, আমরা পুরোপুরি ক্লিয়ার না তবে ডিলিট হলেও সেই স্ট্যাটাস রিকভার করা সম্ভব জানিয়ে তদন্তের স্বার্থে তা করা হতে পারে বললেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে ডা: আকাশের মা জোবেদা খানম বাদি হয়ে চান্দগাঁও থানায় একটি মামলা করেছেন।

চান্দগাঁও থানার ওসি আবুল বাশার নয়া দিগন্তকে বলেন, মামলায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। মিতুর পাশাপাশি তার বাবা-মা, দুই বোনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মাহবুব এবং প্যাটেল নামে মিতুর দুই প্রেমিককেও মামলায় আসামি করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার নিজ বাসায় ইনসুলিন পুশ করে আত্মহত্যা করেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরুণ চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশ (৩৩)। তিনি জেলার চন্দনাইশ উপজেলার বরকল ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার মৃত আব্দুর সবুরের ছেলে।

জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন একই পেশায় পড়ুয়া তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে। কিন্তু বিয়ের আগ থেকে একাধিক যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকার কথা জেনেও শুধু মান সম্মানের কথা ভেবে আকাশ তাকে বিয়ে করেন। মৃত্যুর আগে আকাশের দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব কথা উঠে আসে। সূত্র: নয়া দিগন্ত। 

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: