এতদিন যে কষ্ট নিয়ে বেঁচে ছিলেন মান্নার মা

প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:০০ পিএম

স্বামীকে হারিয়েছিলেন অনেক আগেই। ১৯৯৭ সালে সালে প্রয়াত হন চিত্রনায়ক মান্নার বাবা নূরুল ইসলাম তালুকদার। এরপর চোখের মণি ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বেঁচে ছিলেন নায়ক মান্নার মা হাসিনা ইসলাম। তাদেরকে হারিয়ে টাঙ্গাইলে নিজের বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। মাঝে মধ্যে ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় আসতেন। ঢাকা আসলে বড় মেয়ে শিরিন কনার কাছে থাকতেন অথবা প্রয়াত ছেলের বউ মান্নার স্ত্রী শেলী মান্নার কাছে থাকতেন। ঢাকায় তার কাছের আপনজন বলতে এই দু’জন মানুষই ছিলেন।

একের পর এক ঝড় বয়ে চলেছিল তার উপর দিয়ে। এদিকে ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়ক মান্না না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। দুই ভাইয়েরর মধ্যে মান্না ছিলেন ছোট। মায়ের অনেক আদরের সন্তান ছিলেন মান্না। তাই মায়ের আদরটাও তার প্রতি ছিল অন্যরকম। মান্না মারা যাওয়ার এক বছর পরেই মারা যান তার ছোট বোন শাম্মি আক্তার। একটার পর একটা নাঁড়ির বাঁধন ছিঁড়ে যাওয়ার কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছিলেন মান্নার মা, সবকিছু হারিয়ে মনে পাথর বেঁধে বেঁচে ছিলেন কয়েকদিন আগ পর্যন্তও।

কষ্ট বয়ে বেড়ানোর পালা এখানেই শেষ হয় নি। বছর তিনেক আগে মাকে রেখেই মারা গেলেন মান্নার বড় ভাই প্রিন্স তালুকদার পান্না। মা হারালেন তার দুই আদরের সন্তানকে। স্বামী আর সন্তানদের হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলেন। একদম একা হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শেকড়ের টান তাকে আর কখনও শহর মুখি করেনি। নিজেদের ভিটা ছাড়তে চাননি।

এত কষ্টের জীবন পার করে শোক সইতে না পেরে অবশেষে অতৃপ্তি নিয়েই রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পর টাঙ্গাইলের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না বলেন, ‘গত শনিবার রাতে আমার শাশুড়ি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। গতকাল দুপুরের দিকে তার মৃত্যুর খবর পেয়েছি। মৃত্যুর খবর পেয়ে নিজেকে আর সামলে রাখতে পারি নি। ঢাকা থেকে সাথে সাথে টাঙ্গাইল চলে এসেছি আমি।’

তিনি যখন চোখের সামনে ছিলেন তখন অনেক ভালো লাগতো। তার নাতিরা তাকে নিয়ে আনন্দ করতো। আমাকেও অনেক আদর করতেন মা। খোঁজ নিতেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু এখন সেটা আর হবে না। শ্বশুরবাড়িতে স্বজ্জন বলতে আর কেউই থাকল না!

মায়ের মৃত্যুর সময় দেশের বাইরে ছিলেন বড় মেয়ে শিরিন কনা। তার জন্যই অপেক্ষা করে ছিলেন সবাই। তিনি ফিরেছেন। তাই আজ সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাদ আসর দাফন হয় মান্নার মায়ের।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে নায়ক মান্না মৃত্যুবরণ করেন। টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত তার নিজ গ্রাম এলেঙ্গায় মান্নাকে সমাহিত করা হয়।

বিডি২৪লাইভ/আইএন/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: