‘ভোট ডাকাতিতে সহায়তাকারীরা পুরস্কৃত হয়েছেন’
‘ভোট ডাকাতির’ নির্বাচনে জয়লাভ করতে যারা সরকারকে সহায়তা করেছে, তাদের সম্মানী ও পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা তিনটায় রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঐক্যফ্রন্ট তাদের পূর্বঘোষিত কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করে। ‘ভোট ডাকাতির’ প্রতিবাদে ডাকা এ কর্মসূচিতে নেতারা এসব অভিযোগ করেন।
এমপি হিসেবে শপথ নেওয়া নিয়ে জোটে নানা টানাপড়েনের খবর চাউর হওয়ার মধ্যে ‘ভোট ডাকাতি’র প্রতিবাদে কালোব্যাজ ধারণ করে মানববন্ধনের এই কর্মসূচিতে আসেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন এই জোটের নেতারা।
তবে এই কর্মসূচিতে ছিলেন না জোটের শীর্ষনেতা কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
কর্মসূচিতে বক্তব্যের শুরুতেই রব জানান, মির্জা ফখরুল, মন্টু ও মান্না তিনজনই চিকিৎসার জন্য বিদেশে রয়েছেন। আর পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানের জন্য যোগ দিতে পারেননি কাদের সিদ্দিকী।
কামাল হোসেনের অসুস্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘উনার ডান পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে, বাম পায়ে অস্ত্রোপচারের জন্য কমপক্ষে ৩/৪ সপ্তাহ দেশের বাইরে থাকা দরকার। দেশের রাজনীতির কারণে উনি ৫/৭ দিনের বেশি দেশের বাইরে থাকেন না।’
‘আজকে ওনার পায়ের ব্যথা অত্যাধিক বেড়েছে। সেজন্য মানববন্ধনের এই কর্মসূচিতে ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন উপস্থিত হতে পারেননি।’
৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন না হয়ে নাটক হয়েছে উল্লেখ করে রব বলেন, ‘৩০ তারিখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু লোক, প্রশাসনের একটি অংশ মিলে যে ডাকাতি করেছে, এখন তার উৎসব করা হচ্ছে। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলের অধীনে নেওয়া হয়েছে। পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে, ঘুষ দেওয়া হয়েছে ইউনিয়ন পর্যায়ে। হাজার হাজার কোটি টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রিসাইডিং, রিটার্নিং অফিসারদেরও ঘুষ দেওয়া হয়েছে।’
আ স ম রব কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের এ সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে মাঠে নামার আহ্বান জানান। এ ছাড়া বলেন, ঘরের মধ্যে আন্দোলন সীমাবদ্ধ না রেখে খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্ত করতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, শক্তিশালী করতে হবে।
জেএসডির সভাপতি আরও বলেন, ‘স্বৈরাচারী হিটলার, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান কারও বিরুদ্ধে এককভাবে কোনও দলের পক্ষে আন্দোলন করে জয়লাভ করা সম্ভব হয়নি। অতএব জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। জোটকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, আমরা দাবি করছি, ভোট প্রত্যাখান করার জন্য। কিন্তু ভোট তো হয়নি, তাহলে প্রত্যাখান কিসের? নতুন ভোট নয়, এই রাষ্ট্র ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে। অন্যায়কারীদের আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিচার করতে হবে।’
সরকারের উদ্দেশ করে রব বলেন, ‘সরকার যেসব অপকর্ম করেছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি গণশুনানিতে তা প্রকাশ করে দেওয়া হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। দেশের গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের মানুষকে কোনটি অন্যায় তা শিখিয়ে-পড়িয়ে দিতে হবে না। দেশের মানুষ জানে কীভাবে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। নিরপেক্ষ একটি সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত করতে সরকারের প্রতি আবেদন জানান তিনি।
এ সরকারকে নির্লজ্জ সরকার বলে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সরকারের এক কান কাটা গিয়েছিল আর এবার ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর ভোট লুণ্ঠন করে দুই কানই গেছে। এ কাজে যারা যুক্ত ছিল, তাদের নানা রকম সম্মানী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। যারা অপকর্ম করেছে, তাদের পদক ও পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।’ সুব্রত অভিযোগ করে বলেন, এই সহায়তাকারীরা আগামী দিনেও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার পরিকল্পনা করেছে।
ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘২৯ তারিখের নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের অধিকার লুণ্ঠন করা হয়েছে। বিনা জানাজায় গণতন্ত্রকে কবর দেওয়া হয়েছে।’
কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক কমিটির সমন্বয়ক আব্দুস সালাম বলেন, ‘অনেক সাংবাদিক এবং আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ঐক্যফ্রন্ট জোরালো বা কঠোর আন্দোলন করতে পারবে না। যখন হরতাল বা কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে, তখন তারা কোনও দোষ দিতে পারবে না। এখনও সময় আছে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন এবং নতুন নির্বাচন দিন।’
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা রহমান, বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এমরান সালে প্রিন্স, আব্দুস সালাম আজাদ, গণফোরামের নেতা রফিকুল ইসলাম পথিক প্রমুখ।
বিডি২৪লাইভ/এইচকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: