কাশ্মীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২, বিশ্বজুড়ে নিন্দা

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৩:২৪ পিএম

ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় দেশটির সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স’র (সিআরপিএফ) গাড়িবহরে দেওবন্দি জিহাদি গ্রুপ ‘জইশ-ই-মোহাম্মাদ’র হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ জন। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আসংখ্যা রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন অন্তত ৪০ জন।

শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল নয়টার দিকে পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপুরায় সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ঘটনাটি অবন্তিপোরা শহরের গোরিপোরায় শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে সংলগ্ন এলাকায় জইশ-ই-মোহাম্মদের বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটি সিআরপিএফের গাড়িবহরে ঢুকে পড়ার পর সৃষ্ট বিস্ফোরণে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা ‘পিটিআই’। এরই মধ্যে কাশ্মীরে হামলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, ভারতীয় জওয়ানদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। নিহতেদের পরিবারের সঙ্গে দেশের সবাই আছেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে নিন্দা জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ আরো অনেক দেশের দায়িত্বশীলরা।

পুলিশ জানায়, পুলওয়ামা জেলার শ্রীনগর-অনন্তনাগ মহাসড়কের ওপর দিয়ে জম্মু থেকে শ্রীনগরে যাচ্ছিল সিআরপিএফ’এর গাড়িবহর। পথে গোরিপোরার কাছে একটি বাসে ধাক্কা মারে বিস্ফোরকভর্তি গাড়িটি।

বাসটিতে ৪৪ জন জওয়ান ছিলেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তা। আরো অনেকে গুরুতর আহত হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি। কাশ্মীরে দুই দশকের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।

এই হামলার বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটারে বলেন, পুলওয়ামায় সিআরপিএফের ওপর হামলা একটি ঘৃণ্য ঘটনা। এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা করছি। বীরসেনাদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। শহিদদের পরিবারের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা দেশ। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।

এর আগে ২০১৬ সালের উরি হামলার পর এত বড় হামলার ঘটনা কাশ্মীর উপত্যকায় ঘটেনি। উরি হামলায় শেষ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৯ জনে।

এদিকে ঘটনার পর তীব্র সমালোচনা করে টুইট করেছেন কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে দ্য প্রিন্ট জানাচ্ছে, ২০১৪ থেকে এই ঘটনার আগ পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরে ১৭০৮টি হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ৩৩৯ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। আর ২০১৮ সালের শুরু থেকে হামলার ঘটনা বেড়েছে ৪৪ শতাংশ।

জম্মু ও কাশ্মীরে ২০১৭ সালে ৩৪২টি হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে নিরাপত্তা বাহিনীর ৮০ সদস্যের সঙ্গে বেসামরিক ৪০ জন নিহত হয়। ২০১৮ সালে হামলার সংখ্যা ছিল ৬১৪টি। ওই বছর নিরাপত্তা বাহিনীর ৯১ জন সদস্যের সঙ্গে নিহত হয় ৩৮ জন বেসামরিক নাগরিক।

বিডি২৪লাইভ/এসএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: