‘বিনা পয়সায় এখন গান শুনতে পাওয়া যায়’
তৌসিফ আহমেদ। মূলত বিরহ ভাগের আধুনিক গান গেয়ে থাকেন তিনি। নিজের কথা-সুর-কণ্ঠে সাজানো তার জনপ্রিয় গানের সংখ্যা প্রচুর। তিনি একাধার একজন কন্ঠশিল্পী, সুরকার, গীতিকার ও সংগীত পরিচালকও। তার কথা, সুর ও সংগীতে অনেকেই নিজের কন্ঠে গান ধরেছেন, হয়েছেন শ্রোতাপ্রিয়। অনেকদিন ধরেই গানের জগত থেকে দূরে রয়েছেন তৌসিফ। খুব একটা গান নিয়ে হাজির হতে দেখা যায় না তাকে। সম্প্রতি তিনি বেশ অসুস্থ রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন বিডি২৪লাইভকে।
গেলো মাসের শেষের দিকে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন জনপ্রিয় এই কন্ঠশিল্পী। তার শরীরের মেরুদণ্ডে টিউমার ধরা পরে। শরীরের এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশে এমন সমস্যায় বেশ বিব্রত তিনি। এছাড়াও তার রয়েছে ডায়াবেটিসের সমস্যা। এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। সুস্থ হয়ে আবারও শ্রোতাদের মাঝে ফিরবেন তিনি।
তৌসিফ বিডি২৪লাইভকে বলেন, শরীরের এমন একটা অংশে টিউমারটা হলো যেটা নিয়ে খুব সমস্যা যাচ্ছে। ঠিকমত নড়াচড়া করতে পারছি না। চিকিৎসা নিচ্ছি এখন। আশা করি সুস্থ হয়ে যাবো শিগগিরই। সুস্থ হয়ে আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হবো নতুন কিছু নিয়ে।
‘দূরে কোথাও আছি বসে, হাত দুটি দাও বাড়িয়ে’ গানের মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি লাভ করেন তিনি। তারপর একে একে অনেক সফল ও জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন শ্রোতাদের। এ ছাড়া একক অ্যালবামে নিজের গাওয়া গানের জনপ্রিয়তা তো রয়েছেই। বৃষ্টি ঝরে যায়/দু’চোখে গোপনে, মন কাঁদে সারাবেলা, উজানের ঢেউ/তুই কারে খুঁজিস, অতৃপ্ত অনুভূতি/ভিজেছে ব্যাকুলতা অথবা হৃদয় দিয়ে ডাকছি প্রভৃতি গান জয় করে নিয়েছে বর্তমান তরুণ প্রজন্মসহ সব শ্রেণীর শ্রোতা হৃদয়। এ ছাড়া ‘এই তো ভালোবাসা’ চলচ্চিত্রের জন্য কম্পোজিশন করেছেন টাইটেল গান ‘এই তো ভালোবাসা’ গানটি যেটি রুপালি পর্দা অভিনয় করেন ইমন, নিরব।
ছোটবেলা থেকে বাবার হাতেই তার সংগীতের হাতেখড়ি। পরবর্তী সময়ে গান, গিটারে সুর বাঁধা, কি-বোর্ড এবং সফটওয়্যারের কাজ শিখেছেন তারই এক বড় ভাই টফির কাছে। ২০০৬ সালে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের আয়োজিত একটি কনসার্টে তিনি প্রথম কনসার্টে গান করেন। তখন থেকেই তিনি পরিচিতি লাভ করেন। তার প্রথম একক অ্যালবাম ছিল ‘অভিপ্রায়’ যেটা প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৭ সালে। এরপর প্রতিবছরই একটি করে এ্যালবাম প্রকাশ করতেন তিনি। কিন্তু ২০১৫ সালের পর আর কোন এ্যালবাম প্রকাশ করেন নি তিনি। তার প্রকাশিত এ্যালবামের প্রায় বেশ কিছু গান এখনো শ্রোতাদের মুখে মুখে রয়েছে।
তৌসিফ বলেন, এখন আর এ্যালবামের যুগ নেই। এখন আর কেউ এ্যালবাম কিনে গান শোনেন না। আগে মানুষ এ্যালবাম কিনে গান শোনতো। নতুন এ্যালবামের জন্য আগ্রহও থাকতো অনেক বেশি। কিন্তু এখন সবাই ইউটিউবে গান শোনে ও দেখে। বিনা পয়সায় এখন গান শুনতে পাওয়া যায়। কিন্তু আগের সময়গুলোতে মানুষ টাকা দিয়ে এ্যালবাম কিনে গান শোনতো। আগ্রহটা ছিল অনেক বেশি। এখন আর সেই আগ্রহটা নেই। এখন তো শোনার চেয়ে দেখার বিষয় হয়ে গিয়েছে। একটা গান করার পর এটার ভিডিও তৈরি করতে হয় তা নাহলে সেই গান আর দর্শক পর্যন্ত পৌছায় না, দর্শকও সেই গান শোনে না বা নেয় না। কিন্তু সব শিল্পী তো আর নিজের টাকা দিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারে না তাহলে কি তাদের গান শ্রোতারা শুনবে না? এখন অনেক অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু তারা তো সময়ের সাথে সাথে স্টারডম নিয়ে কাজ করে, স্টারদের পেছনে অনেক টাকা বিনিয়োগ করে। কিন্তু অনেকেই সেই সুযোগ পায় না।
তিনি আরও বলেন, মাঝে বিরতিতে ছিলাম। যার কারণে কোন নতুন গান আসে নি আমার তেমন একটা। জি সিরিজের ব্যানারে ‘নীল দুঃখ’ শিরোনামে একটা এসেছিল সর্বশেষ। এরপর আর কোন আসে নি এখনও। ইনশাহআল্লাহ আবারও ভালো কিছু গান নিয়ে শ্রোতাদর্শকদের সামনে আসব। ডায়াবেটিসটা নিয়ন্ত্রণে এনে আর টিউমারটা সাড়াতে পারলেই সব ঝামেলা শেষ। এরপর নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করব। ভালো কিছু গান করেছি যেগুলা খুব শিগগিরই প্রকাশ করবো।
গানে কন্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গানের কথা, সুর ও সংগীত পরিচালনাও করেন তিনি। সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালনায় নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছে তার। গান গাইবার পাশাপাশি সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও শ্রোতাদের ভাল কিছু গান উপহার দিতে চান যেগুলো তাকে সারজীবন মনে রাখবে।
তৌসিফের সংগীতায়োজনে গান গেয়েছে কন্ঠশিল্পী লিজা, কনা ,কনিকা ও অলিক। তৌসিফের কম্পোজিশনকৃত এসব গানগুলো শ্রোতামহলে বেশ সমাদৃত।। তৌসিফের কম্পোজিশনে এ মনের আঙ্গিনায়/তোরই তো ঠিকানা_গানটি গেয়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে কণ্ঠশিল্পী লিজা।
গান নিয়ে তার স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমি শ্রোতাদের কথা মাথায় রেখে ভাল কিছু গান করে যেতে চাই। যাতে সবাই আমাকে আমার গানে চেনে। সারাজীবন বাংলা গানের সঙ্গে থাকতে চাই। বাংলাদেশের গান যেন দেশের বাইরে ও অনেক জনপ্রিয় হয় আমি সে লক্ষ্যে কাজ করতে চাই।
বিডি২৪লাইভ/আরআই
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: