বীমা সুবিধার আওতায় আসছেন প্রবাসীরা 

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০১:৩৮ পিএম

প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জীবন বীমা সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে সৌদি আরবে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রিয়াদ ম্যারিয়ট হোটেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন, ডাক্তার আব্দুল মালেক। দূতাবাসের ইকোনমিক মিনিস্টার ডক্টর আবুল হাসানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ, অর্থ মন্ত্রণালয়- আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অজিত কুমার পাল এফসিএ, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক ও যুগ্ম সচিব কাজী মনোয়ার হোসেন, জীবন বীমা করপোরেশনর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী নূর, বাংলাদেশ দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান ডক্টর নজরুল ইসলাম, ডিপ্লোমেটিক মিনিস্টার এস এম আনিসুল হক, কার্যালয় প্রধান ডক্টর ফরিদউদ্দিন আহমেদ।

রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ্ তার বক্তব্যে বলেন, আজ রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসে আমার চার বছরপূর্তি। এই চার বছরে আমি চেষ্টা করেছি দূতাবাসকে প্রবাসী বান্ধব করতে। কর্মকর্তাদের সবসময় নির্দেশনা ছিল প্রবাসীদের প্রতি বন্ধুত্ব সূলভ আচরণের।

তিনি বলেন, শতকরা ৮০ ভাগ শ্রমিক অর্থের অভাবে সঠিক চিকিৎসা সেবা পায় না। আকামা নবায়নের জন্য যে স্বাস্থ্য বীমা দেওয়া হয় তা নাম মাত্র। সরকার থেকে প্রবাসীদের মৃত্যুর পর যে তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়, তা পেতেও অনেক ঝামেলা। তাই, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে এই স্বাস্থ্য ও জীবন বীমার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রবাসে এবং দেশে এই বীমা সুবিধা পাওয়া যাবে।

জীবন বীমার গ্রাহক হয়রানি বন্ধ, সেবার মান উন্নয়ন, প্রবাসীদের জন্য আলাদা বীমা পলিসি, প্রবাসী ডেস্ক তৈরির মাধ্যমে প্রবাসীদের ওয়ানস্টপ সেবা প্রদান এবং দূতাবাসে জীবন বীমা প্রতিনিধি নিয়োগের দাবিতে মতপ্রকাশ করেন বাংলাদেশ কমিউনিটির বিশিষ্টজন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অজিত কুমার পাল এফসিএ বলেন, দেশ গড়ার যে নতুনধারা শুরু হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে বহু আগেই আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব এবং দেশেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তখন আর ভিন দেশে এসে কর্মের নামে অত্যাচারিত নির্যাতিত হতে হবে না। দুর্নীতি মুক্তকরণে পালে হাওয়া লেগেছে, দেশে সুশাসনের সুবাতাস বইছে, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব । আপনাদের সকলকে নিয়ে আমরা দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ব।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক ও যুগ্ম সচিব কাজী মনোয়ার হোসেন বলেন, বীমা সংক্রান্ত যেকোন হয়রানির অভিযোগ আমাদের জানান। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

জীবন বীমা করপোরেশনের এমডি মোহাম্মদ আলী নূর প্রবাসীদের আশস্ত করে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বীমা করপোরেশন গ্রাহক হয়রানি শূন্যের কোঠায়। গ্রাহকদের উন্নত সেবা প্রদানের জন্য খুব শীঘ্রই জীবন বীমার সমস্ত কার্যক্রম অনলাইন অটোমেশন সিষ্টেমে চালু হবে। প্রবাসীদের পেনশন সুবিধা প্রদানে জীবন বীমার ‘ব্যক্তিগত পেনশন বীমা পলিসি’ চালু রয়েছে, যে কেউ ইচ্ছা করলে এই পলিসি নিতে পারেন। পেশাজীবী ও কর্মজীবী মানুষ স্বভাবতই অবসর জীবনে নিরুদ্বেগ স্বচ্ছল শান্তিময় দিন যাপনের নিশ্চয়তা চান। পরিণত বয়সে যখন নিয়মিত আয়ের কোন নিশ্চয়তা থাকে না, পেনশন বীমা পলিসি ঠিক তখনই নিয়মিত মাসিক অর্থাগমের ব্যবস্থা করে। অবসর জীবনের আর্থিক প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখেই তৈরি করা হয়েছে আমাদের পেনশন বীমা পরিকল্পনা। যেকোন পেশায় নিয়োজিত মানুষ এই পলিসি নিতে পারেন। এর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো কর্মজীবনে অকাল মৃত্যুতে পরিবারের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা বিধান যা অন্য কোন সঞ্চয় মাধ্যমে সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, আজকে সৌদি কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনায় প্রবাসীদের স্বাস্থ্য ও জীবন বীমার জন্য সৌদি আরবের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই স্মারক স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশি প্রবাসীরা স্বাস্থ্য এবং জীবন বীমার আওতায় আসবেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন, দূতাবাসের অনুবাদক সাদেক হোসেন।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: