চকবাজারের আগুনের উত্তাপ ছড়ালো ফেসবুকেও

প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৫:১৬ পিএম

রাজধানীর চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও। অনেকেই নিমতলী ট্র্যাজেডির পর চকবাজারে এমন ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন। এছাড়া এ ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন অনেকে।

অপু মোস্তফা নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘কেমিক্যালের সুঘ্রাণ টপকে পোড়া লাশের গন্ধ কি পৌঁছাবে সমাজ অধিপতিদের নাকে?’

ইশতিয়াক ইমন অনেকটা সমালোচনার সুরেই লিখেছেন, ‘মরলে ১ লাখ, পুড়লে ৫০ হাজার। তদন্ত কমিটি। মিডিয়াতে হাউকাউ, টক শো, ঘটনা শেষ। নেক্সট।’

হিমেল আহমেদ তরি লিখেছেন, ‘কি লিখবো কিছুই বুঝতে পারছি না, বুকের ভেতরটা যেন কেপে-কেপে উঠলো যখনি দেখলাম এই ছবি গুলো। তবে সত্যি আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আল্লাহ্ সবাইকে বেহেস্তের পাখী হিসেবে কবুল করে নিক, আমিন।’

সাইদুর রহমান মিন্টু লিখেছেন, ‘আজ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারীর সাথে ২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী মিলে যেন একাকার, আজ আরেকটি শোকের দিন হয়ে গেল বাংলাদেশের জন্যে। সেই নিমতলী থেকে আমরা শিক্ষা না নেওয়ায় আজ আবার চকবাজারে।’

মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসাইন লিখেছেন, ‘নিমতলী, রানা প্লাজা, চকবাজার সবই যে একই সুতোয় গাঁথা, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে মৃর্ত্যূর মিছিলের সদস্য সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। মানব দেহের ভস্মীভূত কয়লা আর কত দেখবে অসহায় নগরবাসী? আমি, আপনি, আমরা যারা ঢাকা শহরে বাস করছি তারা কেউই কি নিরাপদে আছি?’

আসিফ আলম লিখেছেন, ‘অন্য আট-দশটা দিনের মতই কেউ প্রতি দিনের মতোই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলেন, কেউবা মায়ের জন্য ঔষধ কিনতে, কেউ ছেলের জন্য বিরিয়ানী কিনতে আবার কেউ বোনের বিয়ের জন্য শপিং করে খাবার খেতে হোটেলে, কেউ অনাগত সন্তানের অপেক্ষায় ছিলো। কেউ জানতো ঠিক ঐ সময়ে কী হতে যাচ্ছে তাদের সাথে। কেউ বিয়ে করেছেন এক মাসও হয়নি। গুছাতে পারেনি ভালোবাসার মানুষের সাথে ছোট ছোট সপ্নগুলো। ৩০ সেকেন্ডের মাঝেই সবার লালিত সপ্নগুলো আগুনে পুড়ে ছাই।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘রেখে গেলো কিছু সময়ের আক্ষেপ কিংবা ছোট ছোট সপ্নের অপূর্নতা। ঠিকানা হলো তাদের ঢাকা মেডিকেলর মর্গ কিংবা বার্ন ইউনিট। হায়রে আগুন আর কত মানুষ পুড়ালে তোর লেলিহান শিখা বন্ধ হবে? মৃত্যুপুরীর আর এক নাম পুরান ঢাকার চকবাজার। আমরা হয়তো কোন নায়িকা, নায়ক কিংবা রাজনৈতিক কোন ইস্যুতে তাদের ভুলে যাবো কিন্ত যারা তাদের ভাই, বাবা, মা, সন্তান হারিয়েছে তারা হয়তো সেই হোটেল, ধংসস্তূপে পরিনত হওয়া সেই রাস্তা কিংবা বাসার দেয়ালে তাদের খুজে বেড়াবে।’

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাত ১০টার পরেই চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ের কাছে একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর পাঁচটি ভবনে আগুন ধরে যায়। ভবন এবং আশপাশের দোকানে থাকা রাসায়নিক আর প্লাস্টিক-পারফিউমের গুদাম আগুনকে ভয়াবহ মাত্রা দেয়।

ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সেলিম রেজা জানিয়েছেন, তাঁরা ৬৭ জনের লাশ পেয়েছেন। এর আগে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা ৭৮ জন উল্লেখ করা হয়।

এখন পর্যন্ত ৪৫ জনের লাশ শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি লাশগুলো শনাক্তের জন্য স্বজনদের কাছ থেকে ডিএনএ নেওয়া হবে। এ জন্য স্বজনদের রক্ত নেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: