মেয়ে গেল ক্যান্সারে, ছেলে আগুনে!

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৫:৪২ পিএম

কেউ কেনাকাটায় বেরিয়েছিলেন। কেউ চিকিৎসকের চেম্বারে অপেক্ষায় ছিলেন। দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করে বাড়ির পথও ধরেছিলেন কেউ কেউ। তাদের অনেকেরই আর ফেরা হয়নি। আচমকা আগুনে নিভে গেছে ৭০টি প্রাণ। পুরান ঢাকার চকবাজারের ভয়াবহ এ আগুনে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আরও প্রায় অর্ধশত।

নিমতলীতে আগুনের নয় বছরের মাথায় এর এক কিলোমিটারের মধ্যে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আবারও একই বীভৎস রূপ দেখল বিশ্ববাসী। রাসায়নিক থেকে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ ওই আগুনে মৃত্যু হয়েছিল ১২৪ জনের। এবার মৃত্যু ৭০ জনের।

আর এই ৭০ জনের একজন ওয়াসি উদ্দিন মাহিদ। তার বাবা মো. নাসিরুদ্দিন তাকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। নাসিরুদ্দিন একজন ব্যবসায়ী। তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে ছিলো তার সুখের সংসার।

কিন্তু ২০১১ সালে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত বড় মেয়ে আজরীন (২২) পরিবারের সবাইকে ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন।

আর এরপর কয়েকবছর অতিবাহিত না হতেই আবারও সন্তান হারানোর আর্তনাদে ছেয়ে যায় নাসিরুদ্দিনের বুক। মেয়ের পর অগ্নিকাণ্ডে ছেলেকে হারানো সে যে কি কষ্ট! একমাত্র ছেলে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর ক্ষণে ক্ষণে মুর্ছা যাচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা।

ওয়াসি উদ্দিন মাহিদ নবকুমার ইনস্টিটিউটের এইচএসসিতে লেখাপড়া করতো। সম্প্রতি বাবার সঙ্গে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছিল মাহিদ। চকবাজারের চুড়িহাট্টা, উর্দু রোডসহ রহমতগঞ্জে সুপরিচিত ছিল মাহিদ। বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ আর উচ্ছ্বাসেই সারক্ষণ মেতে থাকতেন তিনি।

ছেলে মাহিদের সঙ্গে শেষ কি কথা হয়েছিল জানতে চাইলে নাসিরুদ্দিন কান্নজড়িত কন্ঠে বলেন, বাইক চালাতে গিয়ে সে ব্যথা পেয়েছিল। ওর মাকে আমি বলেছিলাম ওকে ভিটামিন ‘সি’ খাওয়াও। মাহিদ আমাকে বলেছিল মাকে বল দুটো মাল্টা কেটে দিতে।

কান্না লুকিয়ে নাসিরুদ্দিন বলেন, শুধু রাসায়নিক কারখানা নয়, জুতার সলিউশনসহ নানা দাহ্য পদার্থের কারখানা আবাসিক এলাকায় বন্ধ করতে হবে। আমার মতো কোনো বাবার বুক যেন আর খালি না হয়!

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: