বিএনপির কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মৃত্যু হয়েছে

প্রকাশিত: ০৪ মার্চ ২০১৯, ০৬:৫৭ পিএম

অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ নেতা। নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তিনবার ঢাকা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। প্রথমবার এমপি হয়েই সরকারের আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাননি। সম্প্রতি তিনি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের নানান বিষয়ে বিডি২৪লাইভের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বিডি২৪লাইভ: আপনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরু সম্পর্কে বলুন?
কামরুল ইসলাম: আমার রাজনীতি শুরুটা ছিল ১৯৬২ সালে। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলাম আমি। ’৭১-এ ছাত্র রাজনীতি শুরু করি। এরপর ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসি। আমার সাথে ট্রেনিংয়ে অংশ নিয়েছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুসহ অনেকে। এরপর ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-২ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করি এবং নির্বাচনে বিজয়ী হই। এরপর তো এখনও চলছে।

বিডি২৪লাইভ: আপনি টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে একবার আইন প্রতিমন্ত্রী অন্যবার খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন। এখন আপনি মন্ত্রী নন। এই সময়টা কেমন কাটছে আপনার?
কামরুল ইসলাম: মন্ত্রীত্ব থেকে দূরে এসে খুব রিলাক্স সময় পার করছি। কোন ঝামেলা নেই। রাজনীতিতে সক্রিয় আছি টেনশন ছাড়া। দীর্ঘ দশ বছর তো মন্ত্রী ছিলাম। আর আমাকে যে সব সময় থাকতে হবে মন্ত্রীর চেয়ারে এটা তো মানায় না। নতুনদের তো সুযোগ দিতে হবে। আমি মনে করি মন্ত্রী না থেকে ভালো আছি।

বিডি২৪লাইভ: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনাকে মন্ত্রীত্ব না দেওয়ার কারণ কি বলে আপনি মনে করছেন?
কামরুল ইসলাম: এ বিষয়ে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেটা মানতে হবে। উনি আমাদের নেতা। আর বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ খুব ভালো চলছে। আমার থেকে দক্ষ রাজনীতিবিদ মতিয়া চৌধুরী। এবার তাকেও সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এর কারণ নতুনদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যা সিদ্ধান্ত নিবেন দলের জন্য সেটাই মঙ্গল।

বিডি২৪লাইভ: দলের ক্লান্তিলগ্নে আইনিভাবে এবং জামায়াত-বিএনপির হরতাল-অবরোধ প্রতিরোধে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আপনি সব সময় সক্রিয় ছিলেন। দল কি আপনাকে সেই ভাবে মূল্যায়ন করেছে?
কামরুল ইসলাম: অবশ্যই মূল্যায়ন করেছে। না করলে আমি মন্ত্রী হলাম কি করে? তিনবার এমপি হলাম কি করে? আমি ১৯৯৬ সালে ঢাকা মহানগরীর পিপি ছিলাম। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা মাঠে লড়েছি। আমরা ওই সময় মাঠ ছাড়ি নাই। দলের জন্য কাজ করেছি এবং এখনও করছি। আর এখন তো বিএনপি রাস্তায় নামতে চায় না। আমরা তো রিজভীর মত ঘরে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করি না।

বিডি২৪লাইভ: সামনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল। কেন্দ্রে বড় কোন পদ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি?
কামরুল ইসলাম: এই বিষয়ে আমার কোন কিছু বলার নেই। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। আমি আগেই তো বললাম যে উনার (প্রধানমন্ত্রীর) সিদ্ধান্ত দলের নেতা-কর্মীদের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

বিডি২৪লাইভ: দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ এই সময়ের মধ্যে যত নির্বাচন হয়েছে সবগুলো নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে বা হয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন সাবেক মন্ত্রী ও নেতা হিসাবে বিষয়টি আপনি কি ভাবে দেখছেন?
কামরুল ইসলাম: আমাদের দূর্ভাগ্য যে দেশের রাজনীতি এখন বিভক্তি হয়ে গেছে। বিএনপি জাতির জন্য দূর্ভাগ্য। নির্বাচন নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্ম দিয়েছে বিএনপি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মৃত্যুও হয়েছে বিএনপি কারণে। বিগত সময় বিএনপি রাজনীতি নিয়ে যে খেলা খেলেছে, সেই কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া দেশের তথ্য বিদেশীদের পৌঁছে দেয় বিএনপি। আমি বিএনপিকে বলব, আপনারা নীতিবাচক রাজনীতি ছেড়ে ইতিবাচক রাজনীতি করুন।

বিডি২৪লাইভ: আগামী দিনে আপনার রাজনৈতিক পরিকল্পনা কি?
কামরুল ইসলাম: আমার নিজের কোন পরিকল্পনা নেই। দলের পরিকল্পনাই হচ্ছে আমার পরিকল্পনা। আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন আওয়ামী লীগের কর্মী হয়ে থাকব এবং আওয়ামী লীগে থেকেই মরতে চাই।

বিডি২৪লাইভ: শীঘ্রই রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার কোন চিন্তা আছে কি?
কামরুল ইসলাম: প্রশ্নই আসে না, আমার অবসরে যাওয়ার বয়স হয়নি। আমার থেকে সিনিয়ররা এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। আমি কেন এখন চিন্তা করব।

বিডি২৪লাইভ: দলকে আপনার কোন পরামর্শ দেয়ার আছে কি?
কামরুল ইসলাম: দল সঠিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে ভাবে দল এগিয়ে যাচ্ছে তাতে করে আমার পরামর্শ দেয়ার কিছু নেই। তবে এতটুকু বলব, সবাইকে উদার মনের চিন্তা করতে হবে।

বিডি২৪লাইভ: অনলাইন গণমাধ্যম হিসাবে আমাদের প্রতিষ্ঠান (বিডি২৪লাইভ) কে কিছু পরামর্শ দিন।
কামরুল ইসলাম: বিডি২৪লাইভকে শুভেচ্ছা। তারা তাদের নিউজের মাধ্যমে দেশ এবং সরকারকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা করি। আপনারা সুস্থ সাংবাদিকতা করুন। সরকার এবং জনগণ সব সময় আপনাদের পাশে থাকবে।

বিডি২৪লাইভ/এএস/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: