গাঁজা ছাড়া গাড়ি চালাতে পারে না সিরাজুল!

প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০১৯, ০৯:৫৬ পিএম

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সু-প্রভাত নামের একটি বাসের চাপায় প্রাণ হারায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহম্মেদ চৌধুরী। এরপরই আন্দোলনে নামে তার সহপাঠীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এমতাবস্থায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত চালক জানিয়েছে, পথচারী তরুণীকে (সিনথিয়া) চাপা দিয়ে সে পালিয়ে আসে। এরপর যমুনা ফিউচার পার্কের উল্টো পাশের সড়কে আববারকে চাপা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এতে আববার ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

সিনথিয়া সুলতানা মুক্তা (২০) নামের ওই তরুণীকে সাহজাদপুরের বাঁশতলা এলাকায় চাপা দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আববারেরর বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফ আহমেদ চৌধুরীর দায়ের করা মামলাতেও ওই তরুণীকে চাপা দেওয়ার তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। গুলশান থানার মামলায় তিনি বেপরোয়া, তাচ্ছিল্যপূর্ণ ও দ্রুতগতিতে বাস চালিয়ে পথচারীকে জখমসহ মৃত্যু ঘটনোর অভিযোগ এনেছেন। এতে চালক সিরাজুল ছাড়াও বাসের হেলপার, কন্ট্রাক্টার ও বাস মালিককে অপরাধের সহযোগী হিসেবে আসামি করেছেন।

বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী সিরাজুলের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর আদালত থেকে হাজতে নেয়া হয়। এ সময় গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন সিরাজুল।

তিনি বলেন, ‘সারা রাত না ঘুমিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলাম। না ঘুমানোর কারণে মাথা ঠিক ছিল না। প্রথমে একটি মেয়েকে গাড়ি চাপা দেই। এর থেকে বাঁচার জন্য আরো দ্রুত গাড়ি চালাতে থাকি। মনের মধ্যে ভয় কাজ করছিল। একটু দূরে আরেকজনকে (আবরার) গাড়ি চাপা দেই। গাড়ির চাকা তার মাথার ওপর দিয়ে যায়।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, চালক সিরাজুল ইসলাম নিয়মিত গাঁজা সেবন করেন। গাঁজা সেবন ছাড়া তিনি গাড়ি চালাতে পারেন না। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব কথা আমাকে জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, মূলত গাঁজা খেয়ে ও সারা রাত না ঘুমিয়ে গাড়ি চালানোর কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন আসামি।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে নদ্দা এলাকায় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী। এ ঘটনার পর রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। তাঁরা সেখানে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। তাঁরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন। আজ সকাল থেকে আবার ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আট দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম তিনটি দাবি হলো—৩০২ ধারার অধীনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চার্জশিট গঠন করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে দ্রুততম সময়ে অপরাধীর বিচার করতে হবে, সুপ্রভাত ও জাবালে নূর পরিবহনের সব বাসের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে ও আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে আন্ডারপাস, ওভারব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা ও গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে।

বুধবার সকাল ১০টা থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রবেশমুখের সড়কে অবস্থান নেয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি), নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আইইউবিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক শ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে অবস্থান নেয়।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: