স্ত্রীকে খুন করে থানায় বললেন ‘আমি অনুতপ্ত’
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে: আল-আমিন, বয়স ২৭। বান্দরবান লামা থানার সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তার স্ত্রী রেজিয়া বেগম (২৪) কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার লোকমান হোসেনের মেয়ে। ২০১৭ সালে তাদের যখন বিয়ে হয়, রেজিয়া তখন নগরের রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার একটি জিন্স ফ্যাক্টরির কর্মী।
আর আল আমিন বেকার। ভালোবাসা মানে না কোনো যুক্তি। সুতরাং বেকার আল-আমিনের সঙ্গে জীবন শুরু করেন রেজিয়া। সেই থেকে রেজিয়ার আয় দিয়েই চলত সংসার।
স্বামীর বেকার দশা প্রথম প্রথম মানিয়ে নিলেও সময় গড়াতেই রেজিয়ার সঙ্গে শুরু হয় মনোমালিন্য। চলতে থাকে ঝগড়া।
মঙ্গলবার বিকেলেও ঝগড়ার পর আল-আমিনকে ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিল রেজিয়া। এ সময় ওড়না পেঁচিয়ে রেজিয়ার গলা চেপে ধরে আল-আমিন। নিজেকে বাঁচানোর প্রাণান্ত চেষ্টা করে রেজিয়া। কিন্তু কিছুতেই পেরে ওঠেনি আল-আমিনের সঙ্গে। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে রেজিয়ার শরীর। রেজিয়ার নড়াচড়া বন্ধ হওয়ার পর আল-আমিন বুঝতে পারে স্ত্রীকে খুন করে ফেলেছে সে।
ভালোবাসার মানুষটিকে মুহূর্তের উত্তেজনায় খুন করে অনুশোচনা শুরু হয় আল-আমিনের মধ্যে। স্ত্রীর লাশ ঘরে তালাবন্দি করে আল-আমিন ছুটে যায় থানায়। পুলিশের কাছে স্বীকার করে নিজের স্ত্রীকে খুন করার কথা। তার কথা শুনে পুলিশও হতচকিত হয়ে যায়। এমনকি মানসিক ভারসাম্যহীন মনে করে তাকে কয়েকবার তাড়িয়েও দেয়া হয়। এভাবে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় অতিবাহিত করে পুলিশ।
কিন্তু আল আমিন কিছুতেই ছাড়ছিল না থানার পাশ। একপর্যায়ে ওসির নির্দেশে রাতে স্বামী আল আমিনকে নিয়ে ঘরে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায় পুলিশ। পরে রেজিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে বলে জানান ইপিজেড থানার এসআই নাছির উদ্দিন।
এসআই নাছির উদ্দিন বলেন, দু‘বছর আগে নিহত রেজিয়াকে (২৪) বিয়ে করে আল আমিন। এরপর থেকে নগরীর ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকায় জাকির ভবনের নিচ তলায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো তারা। স্ত্রীকে সে অনেক ভালোবাসত। কোনো কাজ না করাতে স্ত্রীর টাকায় চলত তাদের সংসার। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিন ঝগড়া হয়। রেজিয়া তাকে প্রায় ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়।
মঙ্গলবার বিকালে ব্যাগ গুছিয়ে বাসা থেকে চলে যাওয়ার সময় আল আমিন রাগের বশে ওড়না দিয়ে রেজিয়ার গলা পেঁচিয়ে ধরে। কিছুক্ষণ পর তার মুখ দিয়ে রক্ত আসে। এতে রেজিয়ার মৃত্যু ঘটে। এরপর ঘরে তালা দিয়ে সে থানায় চলে আসে। প্রতিবেশীরা তখনো জানত না যে ঘরে রেজিয়ার লাশ পড়ে আছে।
আল আমিন বলেন, আমার স্ত্রী আমাকে ছেড়ে চলে যাবে এটা আমি কল্পনা করতে পারিনি। তাই রাগের মাথায় ওড়না দিয়ে তার গলা পেঁচিয়ে ধরি। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আমি অনুতপ্ত।
ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল হুদা বলেন, থানায় এসে তার কথা শুনে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। পরে তাকে নিয়ে তার বাসায় টিম পাঠালে ঘটনার সত্যতা মেলে। দেখা যায় তার স্ত্রী রিজিয়ার নিথর দেহ পড়ে আছে। এরপর সুরতহাল করে লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় নিহতের মা রেনুয়া বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। সূত্র: মানবজমিন।
বিডি২৪লাইভ/টিএএফ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: