বাসে উঠলেই ভাড়া ১০ টাকা
রেজাউল করিম: গতকাল বৃহস্পতিবার। পৌনে এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেট থেকে ‘এয়ারপোর্ট-৩ পরিবহন’ নামের লোকাল বাসটিতে উঠতে সক্ষম হন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা খোন্দকার মুনিরুজ্জামান মিন্টু। গন্তব্য আব্দুল্লাহপুর। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে পৌঁছার পর বাসের সুপারভাইজর মোহসীন ভাড়া দাবি করেন ৪৫ টাকা। প্রতিদিন যাওয়া-আসা করায় অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি নন মিন্টু। বাগিবতণ্ডার একপর্যায়ে ৩০ টাকা ভাড়া দিতে রাজি হন তিনি। অথচ ওইটুকু পথে ঢাকার রিজিউনাল ট্রান্সপোর্ট কমিটির নির্ধারিত ভাড়া ২০ টাকা। উত্তরাগামী যাত্রী রাসেলের কাছেও বেশি ভাড়া দাবি করলে তিনিও প্রতিবাদ করেন। শেষে দেন ২০ টাকা। নির্ধারিত ভাড়া ১৫ টাকা। ১০ টাকার কমে ভাড়া আদায় করছিলেন না সুপারভাইজর।
ঢাকা-ব-১৭-৩৯৭৮ নম্বর ‘এয়ারপোর্ট-৩ পরিবহন’ বাসটিতে যাত্রী ছিল গাদাগাদি। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এভাবে সব যাত্রীর কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছিল।
শুধু এয়ারপোর্ট-৩ পরিবহনই নয়। ফার্মগেট-উত্তরা রুটে চলাচলকারী পরিবহন কম্পানিগুলো নিজেদের সুবিধামতো ‘সিটিং সার্ভিস’, ‘স্পেশাল সার্ভিস’, ‘গেটলক’, ‘ননস্টপ’, ‘বিরতিহীন’ ইত্যাদি লেভেল সেঁটে প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ। ঢাকা পরিবহন, ভিআইপি পরিবহন, মিডওয়ে পরিবহন, সূচনাসহ এই রুটে চলাচলকারী প্রতিটি পরিবহন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিআরটিসি পরিবহনও পিছিয়ে নেই। তারাও ইচ্ছামতো যাত্রী উঠিয়ে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছে।
ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাজ্জাদুল ইসলাম প্রতিদিন এই রুটে চলাচল করেন। তিনি গতকাল বলেন, ‘লোকাল বাসে যাত্রী ওঠানো হয় অতিরিক্ত। আবার গেটলক সার্ভিসগুলোও কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। সরকার নির্ধারিত মিনিবাসে পাঁচ এবং বাসে সাত টাকা নির্ধারিত ভাড়া কোনো পরিবহন মানছে না।’
ঢাকা পরিবহনে ফার্মগেট থেকে নিকুঞ্জে পৌঁছার পর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আজহার উদ্দিন বাসের টিকিট দেখিয়ে জানান, তাঁর কাছ থেকে ৩০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছে। অথচ সরকার নির্ধারিত ভাড়া ১৮ টাকা। ঢাকা পরিবহনের নিকুঞ্জ কাউন্টারে গিয়ে জানা যায়, তাদের বাস টিকিটের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা নির্ধারণ করা। কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা কর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এটি আমাদের পরিবহন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ভাড়া। পাঁচ বছর ধরে এই হারে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।’
এয়ারপোর্ট-৩ পরিবহনের সুপারভাইজর লিটন মিয়া অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আজ রাস্তায় গাড়ি কম। ট্রাফিক শৃঙ্খলা সপ্তাহ চলায় বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কোনো গাড়ি সড়কে নামেনি। ফলে প্রতিটি বাসে যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। আর আমাদের প্রতিদিন ইনকাম হয় না। প্রতিদিন যে ইনকাম হয় মালিক, রাস্তায় পুলিশ, বিভিন্ন সমিতির চাঁদা পরিশোধ করে আমাদের তেমন কিছু থাকে না। আজ কয়েক দিন ধরে একটু সুযোগ হয়েছে। তাই যেটুকু পারা যায় একটু বেশি নিচ্ছি, এই আর কি!’
সূচনা পরিবহনের চালক আজাদ মিয়া বলেন, ‘আমরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করি না। মালিকপক্ষ যে ভাড়া নির্ধারণ করে তা-ই নিই।’ সূত্র: কালের কণ্ঠ
বিডি২৪লাইভ/আরআই
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: