ভালোবেসে বাংলাদেশে আসা শ্রীলংকার নারীর আর্তনাদ

প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০১৯, ০৩:৩৮ পিএম

ইব্রাহিমকে বিয়ে করে বাংলাদেশের প্রতি চরম শ্রদ্ধাবোধ জন্মেছিল শ্রীলংকার নাগরিক রেনুসার। এখন সেই রেনুসাই এখন বাঙালিদের প্রতি চরম বিরক্ত। প্রায় তিনটি বছর ধরে বন্দি জীবন কাটাচ্ছে রেনুসার ও তার পরিবার।

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার শেখদি গ্রাম। এই গ্রামের ইব্রাহিম খলিল সৌদিপ্রবাসী। দুই যুগেরও বেশি সৌদি আছেন মাঝেমধ্যে দেশে আসেন।

রেনুসা বেগম শ্রীলংকান নাগরিক তিনিও সৌদি প্রবাসী। সৌদি থাকার সুবাদে ১১ বছর আগে বিয়ে হয় শেখদি গ্রামের ইব্রাহিম খলিল এর সাথে। বিয়ের পর সুখে কাটিয়েছেন ইব্রাহীম ও রেনুসা দম্পতি। এরই মধ্যে এই দম্পতি পাঁচ সন্তানের জনক হয়েছেন। এরপর বছর ছয়েক আগে ইব্রাহীম সৌদিতে ব্যবসা চালিয়ে গেলেও রেনুসা বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে ভালোবেসে চাঁদপুরে ইব্রাহিমের গ্রামের বাড়িতে স্থায়ীভাবে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।

বাংলাদেশে আসার পরও ইব্রাহিম ও রেনুসা দম্পতি সুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের এই সুখ আর বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। আপন চাচাতো ভাইদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ থেকে ঘটনা শুরু এরপর এই দম্পতির সংসারে দুঃখ ছাড়া আর কিছুই জুটেনি।

ইব্রাহিমের আপন চাচা বসুমিয়া আর তার ছেলেদের সাথে চরম দ্বন্দ্বের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে তিন বছরে প্রায় দু-ডজন মামলা পাল্টা মামলা হয়েছে। মামলা বাজিতে পটু ইব্রাহিমের চাচা বসুমিয়ার অত্যাচারে আবারও দেশ ছেড়ে সৌদিতে চলে যাম ইব্রাহিম। কিন্তু তারপরও ইব্রাহিমের সন্তান ও স্ত্রীর উপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি।

এরই মধ্যে ইব্রাহিম এর স্ত্রীর উপর কুদৃষ্টি পরে ইব্রাহিম এর চাচাতো ভাইয়ের। সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার ফলে তার উপর অত্যাচারের মাত্রা আরো বেড়ে যায়।

ইব্রাহিমের পরিবার যাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় নামতে না পারে সেজন্য বাড়ির সীমানা ঘেষে দেওয়া হয় দশ ফুট উচু দেওয়াল। আবার বাড়ির ভিতরে যাতে অস্বস্তি পরিবেশ সৃষ্টি হয় এর জন্য বসুমিয়ার বাড়ির দোতলায় তৈরি করা হয়েছে মুরগির খামার।

একদিকে উচু দেওয়াল অপরদিকে মুরগির খামারের দুর্গন্ধ। সব মিলিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে ইব্রাহীম খলিলের গোটা পরিবারটি।

অত্যাচারের এখানেই শেষ নয় আমের সন্তানদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে নিরাপত্তাহীন করে তোলে তার চাচা বসুমিয়ার সাঙ্গপাঙ্গরা।

এমন অবস্থা ইব্রাহিম আবারও দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয় কিন্তু তাতে জটিলতা আরো বেড়েছে। দেশে আসার পর চট্টগ্রামে আমলি আদালতে তার বিরুদ্ধে একটি যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা রুজু করা হয়।

অভিযোগে বলা হয় আনোয়ারা নামের এক তরুণীকে বিয়ে করার পর খোরপোষ না দিয়ে যৌতুক দাবি করেছেন ইব্রাহিম। কয়েক মাস আগে স্ত্রী সন্তানদের কাছে আসা পর ঐ মামলায়া গ্রেফতার হন ইব্রাহিম।

এবার দেখা যাক ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে সেই মামলা কতটা সত্য। এই মামলার আসামি ইব্রাহিম এর ঠিকানা শুধু সঠিক। বাদবাকি বাদী-সাক্ষীদের ঠিকানা অচিনপুরের কামরুক কামাখ্যায়। যে নাম ঠিকানা দেওয়া হয়েছে তার পুরোটাই ভুয়া। কুমিল্লা দেবিদ্বার থানার স্থায়ী ঠিকানা যে গ্রামের কথা বলা হয়েছে। সে গ্রামের নাম তো দূরের কথা গন্ধ কেউ কখনো শুনেনি চট্টগ্রামের অস্থায়ী ঠিকানা গুলোতেও সেই নামের কাউকে কেউ চিনতে পারেনি।

এই প্রতিবেদনটি বেসরকারি টেলিভিশনের একুশের চোখ অনুষ্ঠান অবলম্বনে করা হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/এমআই/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: