ওয়াসিম হত্যার বর্ণনা দিল সেই ঘাতক চালক ও হেলপার

প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০১৯, ০৪:১০ পিএম

বাস ভাড়াকে কেন্দ্র করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) শিক্ষার্থীকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ঘাতক চালক ও হেলপার।

নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম ওয়াসিম। তার বয়স আনুমানিক ২২ বছর।

ঘটনার দিন শনিবার (২৩ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার উদার পরিবহনের বাসচালক জুয়েল আহমদ ও রাত ২টার দিকে হেলপার মাসুককে পৃথক স্থান থেকে আটক করে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনা স্বীকার করেছেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আনোয়ারুল হক জানান, স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তাদের নিজ নিজ এলাকা থেকে আটক করে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

চালক ও হেলপারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শনিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে নবীগঞ্জের টোলপ্লাজা থেকে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশে উদার পরিবহনের (ঢাকা-মেট্রো-১৪-১২৮০) বাসে ওঠেন সিকৃবির কয়েকজন ছাত্র। এ সময় হেলপার মাসুক মিয়া তাদের কাছে ১০০ টাকা ভাড়া দাবি করেন। এতে ওয়াসিম ও তার বন্ধুরা ছাত্র পরিচয় দিয়ে ভাড়া কম দেয়ার কথা জানান। এতে হেলপার ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।

একপর্যায়ে তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে নেমে যান। নামার সময় পেছন থেকে হেলপার তাদের গালি দেন। এতে ওয়াসিম বাসের সিঁড়িতে উঠে হাতল ধরে কেন গালি দিলেন তা জিজ্ঞেস করতেই চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন। ঠিক তখনই হেলপার মাসুক মিয়া ওয়াসিমকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে বাসের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ওয়াসিম গুরুতর আহত হন। পরে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৌলভীবাজার সদর থানা পুলিশের ওসি সোহেল আহাম্মদ জানান, ওয়াসিমের পরিবারের সদস্যরা দাফন নিয়ে ব্যস্ত। মামলা করবে কিনা তা নিশ্চিত নয় পুলিশ। তবে পরিবার মামলা করতে না চাইলে, পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।

উল্লেখ্য, এর আগে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বেপরোয়া বাসচাপায় নিহত হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর (২০)।

এ ঘটনার পরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। টানা দুদিন চলে এ বিক্ষোভ। এ সময় তারা ৮ দফা দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রভাত ও জাবালে নূর পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল করে চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বুধবার দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি ২৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে।

শিক্ষার্থীদের এসব দাবির বিষয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, দাবি যেগুলো পূরণ করা সম্ভব সেগুলো করা হবে। বাকিগুলো ধীরে ধীরে করা হবে।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: