পায়ের চিকিৎসা করাতে এসে প্রাণটাই গেল!

প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০১৯, ০৯:৩৫ পিএম

ঠাকুরগাঁওয়ে ভুল অপারেশনে আতিকা ইসলাম (৯) নামে তৃতীয় শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৩ মার্চ) রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের এলিজা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের অপারেশন থিয়েটারে এ ঘটনা ঘটে। আতিকা ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের গোয়ালকারী গ্রামের আতিকুর রহমানের মেয়ে। সে ডাঙ্গীবাজারে বিপ্লব মেমোরিয়াল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।

আতিকা ইসলামের বাবা আতিকুর রহমান অভিযোগ করেন বলেন, কিছুদিন আগে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইজিবাইকের ধাক্কায় আতিকার পা ভেঙ্গে যায়। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ১৩দিন চিকিৎসা করার পরে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে পায়ের অপারেশন করার জন্য গত বৃহস্পতিবার তাকে শহরের এলিজা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ভর্তি করানো হয়। শনিবার রাতে পায়ের অপারেশন করতে অপারেশন থিয়েটারে নেন ওই ক্লিনিকের ডাক্তার আবু বক্কর সিদ্দিক দিপু ও এনেসথেসিয়া (অজ্ঞান) ডাক্তার মনির।

প্রায় তিনঘন্টা অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচারের পর তাদের কিছু না জানিয়েই ডাক্তার আবু বক্কর সিদ্দিক দিপু ও ডাক্তার মনির ক্লিনিক থেকে পালিয়ে যায়। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আতিকাকে মৃত অবস্থায় তাদের হস্তান্তর করে।

তিনি আরও বলেন, অপারেশনের সময় আতিকাকে অতিরিক্ত এনেসথেসিয়ার (অজ্ঞান) ঔষধ প্রয়োগ করার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। কারণ অপারেশনের জন্য মেয়েকে অজ্ঞান করলে তার আর জ্ঞান ফেরাতে পারেনি ওই ক্লিনিকের ডা. আবু বক্কর সিদ্দিক দিপু ও এনেসথেসিয়া (অজ্ঞান) ডাক্তার মনির।

এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে এলিজা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দারাজ আলীকে তার অফিসে পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে ডাক্তার আবু বক্কর সিদ্দিক দিপু ও এনেসথেসিয়া (অজ্ঞান) ডাক্তার মনির পলাতক থাকায় এবং তাদের মুঠো ফোন বন্ধ থাকার ফলে তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা: আবু মো: খায়রুল কবীর বিডি২৪লাইভকে জানান, শহরের গোয়াল পাড়ায় অবস্থিত এলিজা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার নামে যে ক্লিনিকটি রয়েছে তার কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। কিছুদিন পূর্বেও সে ক্লিনিকে তিনি সহ জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত গিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন।

কিন্তু কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আবারও নিজের ক্ষমতায় ক্লিনিকটি চালু করে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। আর শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান জানান, শিশুটির পরিবারের লোকজন থানায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: