যে ঘড়িতে কখনও ১২টা বাজে না!

প্রকাশিত: ০৮ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৪৩ এএম

ঘড়ি আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। দৈনন্দিন কাজের সময় কমবেশি সবাই ঘড়ি ব্যবহার করেন এবং এর সঙ্গে পরিচিত। আমরা সবাই জানি, ঘড়িতে ১২টার কাটা থেকে শুরু হয়ে আবার ১২টাতেই এসে শেষ হয়। কিন্তু বিশ্বে এমন একটি ঘড়ি আছে যেটিতে কখনো ১২টাই বাজে না।

এমন ঘড়ি রয়েছে সুইজারল্যান্ডের সোলোথার্ন শহরে। ছবির মতো সুন্দর এই শহরটি পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। তবে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা কিছু সময়ের জন্য থমকে যান শহরের কেন্দ্রস্থল টাউন স্কয়ারের সামনে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে। কারণ এই ঘড়িটি আর দশটা সাধারণ ঘড়ির মতো নয়। পৃথিবীর সব ঘড়িতে যেখানে এক থেকে বারোটি কাঁটা রয়েছে সেখানে এই ঘড়িতে আছে এগারোটি কাঁটা। অর্থাৎ কখনও বারোটা বাজে না এই ঘড়িতে।

কারণ কি?—উৎসুক হয়ে কাউকে জিজ্ঞেস করতেই মিলবে অবাক করা তথ্য। শুধু ঘড়ি নয়, এই শহরের অনেক কিছুতেই রয়েছে এগারো সংখ্যার আধিক্য। যেমন এই শহরে রয়েছে এগারোটি জাদুঘর, এগারোটি গির্জা, এগারোটি ঝরনাসহ আরো অনেক কিছু।

কিন্তু এগারো কেন? কি বিশেষত্ব রয়েছে সংখ্যাটির।

ঘটনার সূত্রপাত একাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে এই নগরীতে ইলভ নামে এক জার্মানের আগমন ঘটেছিল, যিনি এই নগর প্রতিষ্ঠায় অনেক পরিশ্রম করেছিলেন। তবে ওই সময় ইলভ সফল না হলেও সোলোথার্নবাসী তাকে ভোলেনি। তারা ইলভ স্মরণে তার নামের সাথে মিল রেখে শহরে ইলেভেন নামে কয়েকটি স্থাপনা তৈরি করে। সেই থেকে শুরু। 

এরপর যত দিন গেছে এই শহরের সাথে এগারো সংখ্যাটি জড়িয়ে গেছে কাকতালীয়ভাবে। ১২১৫ সালে যখন এই শহরে কাউন্সিলর নির্বাচন হয় তখন এগারো জনকে নির্বাচন করা হয়েছিল। ১৪৮১ সালে সোলোথার্ন সুইস কনফেডারেশনের এগারোতম প্রদেশ হিসেবে যুক্ত হয়। ওই সময় এগারো জন শহর রক্ষাকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এরপর পনেরো শতকের গোড়ার দিকে যখন শহরে সেইন্ট আরসু গির্জা নির্মাণ করা হয় তখন গির্জায় এগারোটি দরোজা, এগারোটি জানালা, এগারোটি রো, এগারোটি ঘণ্টা, এগারো রকমের পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল।

মোট কথা এই শহরবাসীর এগারো সংখ্যাটির প্রতি রয়েছে এক প্রাগৈতিহাসিক দুর্বলতা, যা তারা হাজার বছর ধরে ব্যবহার করে আসছে পরম মমতায়, পরম যত্নে।

বিডি২৪লাইভ/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: