বাঘাইছড়িতে আট খুন, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল

প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:৫১ পিএম

গত ১৮ মার্চ বাঘাইছড়িতে দূবৃত্তদের ব্রাশ ফায়ারের হামলায় আট খুনের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। নির্বাচন নিয়েই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে হামলার কারণ এবং হামলাকারীদের বিষয়টি উঠে এসেছে। 

বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আব্দুল মান্নান এর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি।

গত ১৮ মার্চ বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন শেষে সন্ধ্যায় তিনটি কেন্দ্রের সরঞ্জাম নিয়ে বাঘাইছড়ি সদরে ফেরার সময় ৯ কিলো নামক স্থানে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সন্ত্রাসীদেও ব্রাশ ফায়ারে ঘটনাস্থলে সাতজন ও পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যায়। আহত হন অন্তত ২৫ জন।

এ ঘটনার পর স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক অতিরিক্ত সচিব দীপক চক্রবর্তীকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আব্দুল মান্নান গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে অনেক বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান।

কমিটির প্রধান দীপক চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন গোপনীয় বিষয়। তবে নির্বাচন বর্জনকারী বড় ঋষি চাকমা’র দোয়াত-কলম প্রতীকের সমর্থক দুর্বৃত্তরা এই হামলার ঘটনা ঘটাতে পারে। প্রতিবেদনে হামলার সম্ভাব্য কারণ এর মধ্যে কেন্দ্রের গাড়িতে অন্য প্রার্থী জেএসএস (এমএন লারমার) সুদর্শন চাকমার এজেন্ট ও কর্মী থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ তাদের কারণে গাড়িগুলোতে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। মূলত নির্বাচনী বিরোধই এই হামলার অন্যতম কারণ বলে কমিটি মনে করছে।

বাঘাইছড়িতে সুদর্শন চাকমা ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। তাকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছিল। ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্র থেকে ফেরার সময় ঘোড়া প্রতীক এর কর্মী কেন্দ্রের গাড়িতে ছিলেন বলে অভিযোগ। মন্টু চাকমা নামের এক কর্মী গুলিতে মারা যায়। স্ট্রং চাকমা নামের অপর একজন আহত হন।

তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনজুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, হামলার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ভোট বর্জন ও গাড়িতে ঘোরা প্রতীকের এজেন্ট থাকা অন্যতম। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে জেএসএস প্রার্থী বড় ঋষি চাকমার বক্তব্য জানতে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে পাহাড়ের সঙ্গে ভারতের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, তিন পার্বত্য জেলায় একসাথে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের উল্লেখযোগ্য।

হতাহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি তিনটি চাঁদের গাড়ির চালকরা সাহসিকতা দেখিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে আসার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়েছে কমিটি। যদিও ওভাবে না আসত, তাহলে আরও বেশি প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। এ কারণে চালকদেরও পুরস্কৃত করার সুপারিশ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: