এ এক মহাব্যবসা!

প্রকাশিত: ০১ মে ২০১৯, ০৫:০০ পিএম

ভিটামিন ডি থ্রি বি.ও.এন এর প্রতিটি এম্পুলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বা এমআরপি ১৫১ টাকা হলেও তা বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি টাকায়। এ যেন এক মহাব্যবসা!

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এমনই তথ্য জানান বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্ম সচিব) মাহবুব কবীর মিলন।

তিনি বলেন, ফ্রান্স থেকে আমদানি করা ভিটামিন ডি থ্রি বি.ও.এন এর প্রতিটি এম্পুল এমআরপি ১৫১.৫০ টাকা। ফার্মেসিতে বিক্রি হয় ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায়। আমদানিতে কোন নিয়ন্ত্রণ বা কোটা নেই। যত খুশি আমদানি করা যায়। তবুও আমদানিকারকরা আমদানি করে ভাল লাভ নিয়ে সমস্ত লট বিক্রি করে দেয় মিডফোর্ডে।

মাহবুব কবীর মিলন বলেন, মিডফোর্ড ব্যবসায়ীরা তা মজুত কতে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অল্প-অল্প বিক্রি করে সারা দেশের ফার্মেসিগুলোতে। প্রতিটি ফার্মেসিতে তারা একবারে সর্বোচ্চ দশটার বেশি বিক্রি করে না। কেউ বেশি চাইলেও তারা দেবে না বলে জানান তিনি।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এই সদস্য বলেন, এ এক মহাব্যবসা, মাফিয়া চক্র। ৪৮ বছর আগে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল মাফিয়াদের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত করার জন্য!

দেশেই ইনসেপ্টাসহ ভাল কোম্পানিগুলো এখন এই ভিটামিন ডি৩ তৈরি করছে জানিয়ে তিনি বলেন, তা অনেক স্বল্প মূল্যে পাওয়া যায়। গুণে ও মানে তা বিদেশি প্রোডাক্টের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। খুচরা দাম ৯০ থেকে ১১০ টাকার মধ্যেই।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু দেশেই তৈরি হচ্ছে, দেশীয় শিল্পের প্রটেকশনের জন্য ভিটামিন ডি৩ এর আমদানি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। আর আমাদের উচিত বিদেশি বর্জন করে দেশের ওষুধ কেনা। এটা অত্যন্ত জরুরি।

শুধু যে ভিটামিন ডি থ্রি এর ক্ষেত্রে এমনটি ঘটছে তা নয়। সুষ্ঠু তদারকির অভাবে অনান্য বিভিন্ন ওষুদের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটছে। দ্বিগুণ বা তার বেশি দামেও বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

তবে সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে সম্প্রতি ১২ টাকার জীবন রক্ষাকারী ইনজেকশন ইফিড্রিন ১২শ টাকায় বিক্রি হওয়ার ঘটনা। এ ঘটনার রেশ ছড়িয়েছে ফেসবুকেও। এ নিয়ে হয়েছে নানা আলোচনা।

চলতি বছরের ২৮ মার্চ সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ত্রীকে চিকিৎসা করাতে ভর্তি করিয়েছিলেন এক কর্মকর্তা। এরপর চিকিৎসক ওই কর্মকর্তাকে ইফিড্রিন ইনজেকশন আনতে বলেন।

ওই কর্মকর্তা হাসপাতালের মোড়ে একটি ওষুধের দোকানে গিয়ে ইফিড্রিন ইনজেকশন কিনতে চাইলে দোকানি দাম হাঁকান ১৫০০ টাকা! অনেক দরদাম করার পর ইনজেকশনটি ১ হাজার ২০০ টাকায় কেনেন তিনি। অথচ এই ইনজেকশনের দাম মাত্র ১২ টাকা!

কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইফিড্রিন হাইড্রোক্লোরাইড ইনজেকশটি মূলত দেশের আটটি ওষুধ কোম্পানি উৎপাদন করে। কিন্তু এ ওষুধের কাঁচামাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো এ জাতীয় ইনজেকশন উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাজারে সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আর এর সুযোগ নিয়েছে ব্যবসায়ীরা।

অনেকেই এ ঘটনার সমালোচনা করে বলেছেন, ১২ টাকার ওষুধ কিভাবে ১০০ গুণ বেশি দামে বিক্রি হয়? এসব বিষয়ে সরকারের কঠোরভাবে নজর দেয়া উচিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিডি২৪লাইভ/এসএইচআর/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: