বিশ্বের দীর্ঘতম নদী নীলনদ

প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারি ২০১৫, ০৫:৫৬ এএম

আবু সাঈদ:

নীল নদ, আফ্রিকা মহাদেশের একটি নদী। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম নদী। এর দুইটি উপনদী রয়েছে, শ্বেত নীল নদ ও নীলাভ নীল নদ। এর মধ্যে শ্বেত নীল নদ দীর্ঘতর। শ্বেত নীল নদ আফ্রিকার মধ্যভাগের হ্রদ অঞ্চল হতে উৎপন্ন হয়েছে। এর সর্বদক্ষিণের উৎস হল দক্ষিণ রুয়ান্ডাতে এবং এটি এখান থেকে উত্তর দিকে তাঞ্জানিয়া, লেক ভিক্টোরিয়া, উগান্ডা, ও দক্ষিণ সুদানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নীলাভ নীল নদ ইথিওপিয়ার তানা হ্রদ হতে উৎপন্ন হয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে সুদানে প্রবেশ করেছে। দুইটি উপনদী সুদানের রাজধানী খার্তুমের নিকটে মিলিত হয়েছে।

নীলের উত্তরাংশ সুদানে শুরু হয়ে মিশরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত, প্রায় পুরোটাই মরুভূমির মধ্য দিয়ে। মিশরের সভ্যতা প্রাচীন কাল থেকেই নীলের উপর নির্ভরশীল। মিশরের জন্সংখার অধিকাংশ এবং বেশিরভাগ শহরের অবস্থান আসওয়ানের উত্তরে নীল নদের উপ্ত্যকায়। প্রাচীন মিশরের প্রায় সমস্ত সান্সকৃতিক এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও এর তীরে। বিশাল ব-দ্বীপ স্রৃষ্টি করে নীল নদ ভূমধ্যসাগরে গিয়ে মিশেছে।

খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ অব্দে নীলের অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল সবচেয়ে বড় সভ্যতা। ধীরে ধীরে বাড়ে তার বিস্তৃতি ও জনসংখ্যা। ১০টি দেশ নীল নদের আশীর্বাদপুষ্ট। সেগুলো হলো_ মিসর, সুদান, দক্ষিণ সুদান, বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা, কঙ্গো, তানজানিয়া, কেনিয়া, ইথিওপিয়া ও উগান্ডা। নীল নদ একদিকে যেমন মিসরকে করে তুলত শস্য-শ্যামলা, তেমনি বন্যার সময় ধারণ করত রুদ্রমূর্তি। ফসল ভাসিয়ে নিয়ে যেত, বেড়ে যেত অসুখ-বিসুখ। নীল নদ আমিষের অফুরান ভাণ্ডার। প্রধান প্রধান শস্যের মধ্যে ফলানো হতো যব, রুটির জন্য গম এবং বিয়ারের জন্য বার্লি। কাপড় ও দড়ি তৈরির উপকরণ হিসেবে ফলানো হতো একজাতীয় শনগাছ। দারুণ একটি উদ্ভিদ ছিল প্যাপিরাস। এর মূলও খাওয়া যেত। উপরের অংশ দিয়ে মাদুর থেকে শুরু করে নৌকা সবই তৈরি করা হতো। আর বানানো হয়েছিল পৃথিবীর প্রথম কাগজ। এগুলো স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর রপ্তানিও হতো। নীলের কুমির কিংবদন্তিতুল্য।

এখানকার বাসিন্দাদের জীবনাচরণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কুমিরের কথা। অনেক অভিযানও ব্যর্থ হয়েছিল কুমিরের আক্রমণে। কুমিরগুলো চার মিটার পর্যন্ত লম্বা হতো। অন্য প্রাণীর মধ্যে ছিল বেবুন, কাছিমসহ প্রায় ৩০০ প্রজাতির পাখি। যেমন- ঈগল, আইবিস ও সানবার্ড। নীল নদের বদ্বীপে বাস করে প্রায় চার কোটি মানুষ। এ পর্যন্ত দুবার নীল নদ জমে বরফ হয়েছিল বলে জানা যায়- ৮২৯ ও ১০১০ সালে।-তথ্যসুত্র: ওয়েবসাইট।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: