বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নারী শ্রমিকের ভূমিকা অনস্বীকার্য

প্রকাশিত: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ০৫:১৯ এএম

স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বত্র কর্মক্ষেত্রে নারীদের উপস্থিতি এক নব জাগরণের সূচনা করেছে। দেশের প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অবদান অপরিহার্য। বর্তমানে নারীরা ডাক্তার, নার্স, ইঞ্জিনিয়ার, প্রশাসন, সমাজসেবী, রাজনীতিবিদ ও সাংস্কৃতিক অংগনের সকল ক্ষেত্রেই প্রতিভার পরিচয় দিচ্ছে।

ঘর সংসার ও সন্তানের লালন পালন ছাড়াও স্বল্প শিক্ষিত নারীরা আজ ঘরে বাইরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রম দিচ্ছে। বর্তমানে গার্মেন্টস ও বিভিন্ন ফেক্টরিতে, রাস্তা তৈরীর কাজে নারী শ্রমিকের সংখ্যাও কম নয়। বড় বড় অট্টালিকা তৈরীর জন্য ইট ভাঙার কাজে নারীরা বিশেষ অবদান রাখছে। প্রতিনিয়ত নারীরা বিভিন্ন পেশায় কাজ করছে। তবে তারা কম বেশী নিজ নিজ পেশায় উপেক্ষিত।

এ প্রসংগে গার্মেন্টস শ্রমিকের কথা বলা যায়। বাংলাদশের গার্মেন্টস শিল্পে প্রচুর নারী কাজ করছে। কিশোরী থেকে তিরিশোর্ধ পর্যন্ত নারীদের এখানে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে সবার চাকুরীর স্থায়ীত্ব বা বেতনের নিশ্চয়তা নাই। মালিকের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে চাকুরী থাকবে কি থাকবে না।গার্মেন্টস এ নারীদের শ্রমের অবমূল্যায়ন করা হয়। একই কাজে নারীদের তুলনায় পুরুষের বেতন বেশী ধরা হয়। পেটের দায়ে কাজ করতে গিয়ে ইজ্জত আবরু রক্ষা করতে হিমশিম খেতে হয়। এই বিকাশমান শিল্পে নারী শ্রমিকরা ছুটি পায় রাত ৮ টার পর। অনেক সময় রাস্তা-ঘাটে এরা বিপদগ্রস্ত হয়। গার্মেন্টস এ ছুটির নিয়ম সরকারী ছুটির নিয়ম নীতির বাইরে। এ অবস্থা কর্মজীবি নারীর শিল্প ও পরিবারের জন্য অশুভ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। নির্ধারিত ছুটিতে তাদেরতো ন্যায়সংগত অধিকার আছে। তবে আইন কানুনের কথা বললে চাকুরী টিকে থাকে না। এই ভয়ে কেউ মুখ ফুটে কিছু বলে না।

গার্মেন্টস মালিকরা বলে থাকেন, নারী শ্রমিকরা পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে মনোযোগী এবং কাজও ভালো করেন। পারিশ্রামিকও কম দিয়ে কাজ করানো যায়। তাই সব দিক থেকে নারী শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো সুবিধাজনক। আর এজন্যই গার্মেন্টস শিল্পে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। নারীদের ভূমিকা অসীম।

গার্মেন্টস শিল্পে কাজ করতে হলে বেশী শিক্ষার প্রয়োজন হয় না। অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত নারীগণ যদি এই শিল্পে জড়িত হয়ে আয় রোজগার করতে পারে, তাহলে পরিবারে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও বৃদ্ধি পায়। তবে গার্মেন্টস এর চাকুরী বিধিমালা পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কর্মীদের বেতন কাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বর্তমানে আমাদের দেশের গার্মেন্টস মানেই হলো মালিক দ্বারা শ্রমিক শোষন। এই শোষনের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই সরকারের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।

সম্পাদনা: তাহমিনা আক্তার

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: