মুন্সীগঞ্জে ৪০ প্রহর ব্যাপী শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম নামযজ্ঞ মহোৎসবের সমাপনী

সুমিত সরকার সুমন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
কীর্তন বাংলা সংস্কৃতি ও বাংলা সঙ্গীতের অন্যতম আদি একটি ধারা। গানের মাধ্যমে ধর্মচর্চা আর ঈশ্বকে আরাধনার প্রচলন প্রাচীনকাল থেকেই গ্রামবাংলার সর্বত্র চলে আসছে। ভগবান দুষ্টের দমনে সৃষ্টির লক্ষ্যে ধর্ম রক্ষার্থে যুগে যুগে মর্ত্যে আবির্ভূত হয়েছেন। ভগবানের আবির্ভাব কালের গুনাবলী আর লীলা নিয়ে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে (খোল, কর্তাল, বাঁশি আর হারমোনিয়াম) যে গান পরিবেশন করা হয় তাই কীর্তন।
মানবজাতি অতি সহজে ঈশ্বরের সাধনা বা ঈশ্বরকে ভজন করার একটি উপায হিসেবে এ কীর্তনের উদ্ভব। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলার বৈষ্ণবধর্মজাত" সঙ্গীতধারার বিকশিত রূপই কীর্তন। কীর্তন দুপ্রকার নামকীর্তন বা নামসংকীর্তন এবং লীলকীর্তন বা রসকীর্তন।হরি বা বিষ্ণুকে(ভগবান) সম্বোধন করে "হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে-হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে" এ ষোল পদবিশিষ্ট বোলের সাথে সুর সংযোজিত করে সংগীত পরিবেশন করাই নামকীর্তন। আবার রাধাকৃষ্ণ এবং গোপী-শ্রীকৃষ্ণের কাহিনী অবলম্বনে যে পালাগান করা হয় তা হলো লীলাকীর্তন।
সূত্র থেকে জানা যায়, পনেরো শতকে চৈতন্যদেবের আবির্ভাবে কীর্তন গান সঞ্চারিত হয়। তিনিই ছিলেন নামকীর্তনের প্রচারক। চৈতন্যদেব বুঝতে পেরেছিলেন যে, নারী-পুরুষসহ সব বয়সের মানুষ নির্বিশেষে সঙ্গীতের আবেদন সর্বাধিক। এমনকি কোনো কঠিন বিষয়ের প্রতি অশিক্ষিত কিংবা স্বল্পশিক্ষিত জনগণকে আকৃষ্ট করার সহজতম উপায় হচ্ছে সঙ্গীত। তাই ঈশ্বর-সাধনার সহজতম পন্থা হিসেবে তিনি বেছে নেন কীর্তনকে। তিনি সকলকে জানান আর কোনো শাস্ত্র নয়, কেবল হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে-হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে" এ ষোল পদবিশিষ্ট নাম যব করে কীর্তন করলেই ঈশ্বরকে পাওয়া যাবে। ঈশ্বর-সাধনার এ সহজ পথের সন্ধান পেয়ে সাধারণ লোকেরা তাঁকে অনুসরণ করে কীর্তন গাইতে শুরু করে।
এভাবেই চৈতন্যদেব কীর্তনের মাধ্যমে তাঁর আদর্শ, অধ্যাত্মচিন্তা এবং তাঁর সাম্যের ধর্ম সারা বাংলায় প্রচার করেন। তিনিই নামকীর্তনের পরিপূর্ণ সাঙ্গীতিক রূপ দান করেন এবং এ গানকে অধ্যাত্মমার্গে উন্নীত করে বাঙালির কাছে জনপ্রিয় করে তোলেন।মুন্সীগঞ্জ শহরের মালপাড়া এলাকার কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী জয়কালী মাত মন্দির প্রঙ্গনে ২০ শে ফেব্রুয়ারী থেকে যাকযমক পূর্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ৪০ প্রহর(৫দিন) ব্যাপী ভগবানের নামকীর্তন শুরু হয়। শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম নামযজ্ঞ মহোৎসব নামে এ অনুষ্ঠানে অয়োজন করেন কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী জয়কালী মাতা মন্দির পরিচালনা কমিটি। এবছর নামযজ্ঞ অনুষ্ঠাটি ১১ বছরে পদার্পন করে।
মুন্সীগঞ্জের বিশ্বরূপ সম্প্রদায়, খুলনা থেকে গোপাল সেবা সংঘ, নরসিংদী থেকে ভক্ত হরিদাস সম্প্রদায়, গোপালগঞ্জের শিব শিবানী সম্প্রদায় ও বাগেরহাট থেকে দূর্গা প্রসন্ন সম্প্রদায়ের প্রায় শতাধিক কীর্তন শিল্পীগন পালাক্রমে ভগবানের নামকীর্তন পরিবেশন করেন। ২৫ ফ্রেব্রুয়ারীর বুধবার ভোরে নগরকীর্তন ও দুপুরে প্রসাদ বিতরনের মধ্যদিয়ে মহোৎসব অনুষ্ঠানে সমাপ্তি হবে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: